শুক্রবার, ২৬শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সিলেট এলিভেটেড রাস্তা হবে-

দুর্যোগ মাথায় রেখে অবকাঠামো নির্মাণ

সিলেট এলিভেটেড রাস্তা হবে

বাংলাদেশে প্রায় সময়ই প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হয়েছে এবং হবে। সে কথা মাথায় রেখে অঞ্চলভিত্তিক অবকাঠামোগুলো সেভাবে তৈরি করতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে হেলিকপ্টারে করে নেত্রকোণা, সুনামগঞ্জ ও সিলেটের বন্যা দুর্গত এলাকার পরিস্থিতি ঘুরে দেখার পর সিলেট সার্কিট হাউজে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয় প্রশাসনকে বন্যা মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেয়াকালে এসব কথা বলেন।

বন্যায় ঘাবড়ানোর কিছু নেই

-প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বন্যা আসাটা আমার মনে হয় ঘাবড়ানোর কিছু নাই। মানুষকে সব সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করেই চলতে হবে। অবকাঠামোগুলোও সেভাবে তৈরি করতে হবে। তিনি বলেন, সিলেট অঞ্চলে মাটি উঁচু করে আর কোনো রাস্তা করা হবে না, ‘এলিভেটেড’ রাস্তা হবে। এলিভেটেড রাস্তা হলে সেটা সহজে নষ্ট হয় না, বন্যার মতো দুর্যোগে যাতায়াতেরও সুবিধা হয়। পাশাপাশি নদীগুলোর গভীরতা ঠিক রাখতে ড্রেজিংয়ের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধু একবার ক্যাপিটাল ড্রেজিং করলে হবে না। তারপর নিয়মিত মেনটেইন্যান্স ড্রেজিং করতে হবে।

ছোট বেলায় সিলেটে বেড়াতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বঙ্গবন্ধুর মেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বিশাল বিশাল ড্রেন ছিল, সব বাড়ির সামনে পানি যাওয়ার ড্রেন ছিল, তার ওপর স্ল্যাব দিয়ে চলাচলের ব্যবস্থা। দুর্ভাগ্য, এখন কিন্তু নাই। বিল্ডিং বানিয়ে এমন অবস্থা পানি যাওয়ার জায়গা নাই। পানি যাওয়ার জায়গা তো লাগবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে সময় যারা তৈরি করেছিলেন, প্রকৃতির কথা চিন্তা করেই করেছেন। কিন্তু এখন আমাদের সময়ে যারা করছেন, তারা হয়ত চিন্তা ভাবনা করছেন না।

আরও পড়ুনঃ  শূন্য হৃদয় আজ পূর্ণ

বন্যায় সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের ভূমিকার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রশাসন থেকে শুরু করে সবাই কাজ করেছে। অনেক জায়গায় কেউ যখন পৌঁছাতে পারেনি আমাদের নেতারা সেখানে পৌঁছেছে, আমার কাছে ছবি তুলে পাঠিয়েছে। আমি সঙ্গে সঙ্গে সেই ছবি সেনাপ্রধানকে পাঠিয়েছি, আমার অফিসে পাঠিয়ে দিয়েছি। যেখানে সেনাবাহিনী যেতে পারবে, সেখানে সেনাবাহিনী বা যেখানে বিমানবাহিনী যেতে পারবে, সেখানে তাদের পাঠিয়েছে। যারা আমার কাছে ছবি পাঠিয়েছে, আমাদের নেতাকর্মীরা, তাদের ধন্যবাদ। কারণ তা না হলে রিলিফের কাজটা অত সহজে করা যেত না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি একমাস দেড়মাস আগে থেকেই সবাইকে বলতাম, এবার বড় বন্যা আসবে, সবাই প্রস্তুত থাকেন। প্রকৃতির অবস্থা দেখে কিছুটা আন্দাজ করা যায়। সে কারণে আমি বলেছি বড় বন্যা আসবে। বাংলাদেশে ১০/১২ বছরের মধ্যে একেকটা বড় বন্যা আসে। আমাদের প্রস্তুত থাকা দরকার। চলতি মৌসুমে সিলেটে এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো বন্যায় প্লাবিত হলো।

এরপরও যে আরও বন্যা হতে পারে, সে বিষয়ে প্রস্তুত থাকার ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খাদ্যমন্ত্রীকে অনেক আগে থেকেই বলছিলাম এবার বন্যা আসবে, প্রস্তুত থাকেন। চারদিকে দেয়াল দিয়ে খাদ্য গুদাম ও সারের গুদাম রক্ষা করার ব্যবস্থা করতে বলেছিলাম। এ ধরনের প্রস্তুতিমূলক কাজ সব সময় করতে হবে। আগামীতে পূর্ণিমার সময় কী অবস্থা হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে। আমাদের পক্ষ থেকে যা যা করণীয় করে যাচ্ছি। যখন পানি নেমে যাবে, সেই সঙ্গে ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দিতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে ময়লাগুলো পরিষ্কার করে দিতে হবে।

আরও পড়ুনঃ  বড় পর্দায় ১৫ বছর পর দেখা যাবে না শাকিবকে

উদ্ধারকাজ ও ত্রাণকাজে যুক্তদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজেরা আপনারা কাজ করছেন, আপনাদেরও সাবধানে থাকতে হবে। এখন হয়তো কাজের ভেতরে আছেন, পরিস্থিতি বোঝা যাচ্ছে না। বার বার বৃষ্টির পানিতে ভিজেছেন। পরে সতর্ক থাকতে হবে। বন্যা কেটে গেলে প্রয়োজনে ধানের বীজ ও মাছের পোনা দেওয়ার প্রস্তুতি সরকারের আছে বলে সবাইকে আশ্বস্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিশুদ্ধ পানির জন্য বৃষ্টির পানি কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন তিনি।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন