শুক্রবার, ২৬শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রেল যাবে মাতারবাড়ি বন্দরে

রেল যাবে মাতারবাড়ি বন্দরে
  • ২৬ কিমি. রেলসড়ক নির্মাণে ব্যয় ১৩ হাজার কোটি টাকা
  • ১১ কিমি. হবে এলিভেটেড, ভূমি প্রয়োজন ৪০০ একর

কক্সবাজারের চকরিয়া থেকে মহেশখালির মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে ২৬ কিলোমিটার নতুন রেললাইনের মাধ্যমে রেলসংযোগ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরকে সরাসারি রেলপথে কন্টেনার ঢাকা আইসিডি’তে পরিবহনের এ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। বন্দরনগর এবং সমুদ্র তীরবর্তী পর্যটন কেন্দ্রকে ঘিরে মেগা প্রকল্পসমূহের অর্থনৈতিক সুফল পেতেই চট্টগ্রামের মধ্যদিয়ে এ সংযোগ স্থাপন করা হবে। এ রেল সড়কের প্রকল্প পথে বড় নদী আছে দুটি। রয়েছে অনেকগুলো খাল। রেলসড়কের ২৬ কিলোমিটারের মধ্যে ১১ কিমি. হবে এলিভেটেড। এ প্রকল্পে ভূমি প্রয়োজন হবে ৪০০ একর।

পর্যটনের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে সিঙ্গাপুর, হংকংসহ দ্বীপভিত্তিক অর্থনৈতিক হাবগুলোর আদলে কক্সবাজারকে গড়ে তুলতে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে সরকার। মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয় ২০২০ সালের ১৬ নভেম্বর। ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে নির্মাণ কাজ শেষ হলে মাতারবাড়ি বন্দরের টার্মিনালে ভিড়তে পারবে ১৮.৫ মিটার গভীরতার জাহাজ। অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহের কারণে কক্সবাজারের সঙ্গে ঢাকার রেলপরে গুরুত্ব অনেক বেড়েছে। এ কারণে, কক্সবাজারের সঙ্গে রেলপে যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি পণ্য পরিবহন সহজ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। লক্ষ্যবাস্তবায়নে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইনের চকরিয়া অংশকে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডি শেষে ডিজাইনের কাজও শেষ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ হাজার কোটি টাকা। মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাথেও যুক্ত হবে এ রেলপ।

আরও পড়ুনঃ  বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানি ছাড়িয়েছে বিলিয়ন ডলার

মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য রেল ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করতে বেশ কিছু পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ঢাকা-কক্সবাজার রেলপথকে মহেশখালির ধলঘাটায় বন্দরের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণের কাজ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইনের চকরিয়া অংশে যুক্ত হবে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর েেক আসা রেললাইনটি। ধলঘাটের বন্দর এলাকায় সড়কপে যেতে হলে বেশ কিছু নদী পার হতে হয়। কক্সবাজার থেকে ধলঘাট পর্যন্ত উন্নত সড়ক ও সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। ২৭ কিলোমিটার সড়ক ও ১৭টি সেতু নির্মাণের কথা ভাবছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ডাবল লাইন ডুয়েল গেজ নির্মাণ সমীক্ষা প্রকল্পের পরিচালক এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের পরিচালক (প্রকৌশল) মো. আবিদুর রহমান বলেন, চকরিয়া থেকে মাতারবাড়ি পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণের ফিজিবিলিটি স্টাডি শেষ হয়েছে। এ প্রকল্পের ডিজাইনও হয়ে গেছে। এখন আমরা ফান্ডের জন্য বিভিন্ন দাতা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করছি। র্আয়ন নিশ্চিত হওয়ার পরই মূল প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ শুরু হবে। এ ২৬ কিলোমিটারের মধ্যে অনেকগুলো ছোট-বড় নদী-খাল রয়েছে। বড় নদী আছে দুটি, খাল আছে অনেকগুলো। তাই এ ২৬ কিলোমিটারের মধ্যে ১১ কিমি. এলিভেটেড হবে। এ প্রকল্পে প্রয়োজন হবে সাড়ে ৪০০ একর ভূমি। এজন্য বিশাল ফান্ডের প্রয়োজন। প্রকল্প ব্যয় এখনো ফাইনাল হয়নি-তবে প্রিলিমিনারি ১৩ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

আনন্দবাজার/এম.আর

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন