শুক্রবার, ২৬শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঘাঁটিতে খাটির হওয়ার স্বপ্ন

ঘাঁটিতে খাটির হওয়ার স্বপ্ন
  • আজ জেলা বিএনপির সম্মেলন
  • কেটে যাবে ২১ বছরের স্থবিরতা

বগুড়া জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন আজ। সম্মেলনকে ঘিরে কাউন্সিলরদের মধ্যে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়েছে। তিন পদে জেলার ২৪টি ইউনিটের মধ্যে ২২টি ইউনিটের ২ হাজার ২শ ২জন তৃণমূল নেতা ব্যালটে তাদের নেতা নির্বাচন করবেন। ২১ বছর পর আনুষ্ঠানিকভাবে গত ১২ অক্টোবর চূড়ান্ত এ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। গঠন করা হয়েছে ১৩ সদস্যের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। ঘোষণা অনুযায়ী আজ ২ নভেম্বর সকাল ৯টায় শহীদ টিটু মিলনায়তনে সম্মেলন হবে।

সম্মেলনে সভাপতি পদে ৩ জন, সাধারণ সম্পাদক পদে ২ জন ও সাংগঠনিক সম্পাদকের ৩টি পদে ১১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। চলছে নানা প্রস্তুতি, নানা গুঞ্জন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জেলার প্রতিটি ইউনিটে দৌড়ঝাঁপ করেছেন। ভোট নিয়ে দলীয় কার্যালয়সহ সবখানে কাউন্সিলরদের মাঝে চলেছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।

সভাপতি পদে লড়ছেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও আহ্বায়ক এবং বগুড়া পৌরসভার বর্তমান মেয়র রেজাউল করিম বাদশা, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির বর্তমান সদস্য ভিপি সাইফুল ইসলাম এবং জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফজলুল বারী তালুকদার বেলাল। সাধারণ সম্পাদক পদে লড়ছেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আলী আজগর তালুকদার হেনা ও জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক এমআর ইসলাম স্বাধীন।

সাংগাঠনিক সম্পাদকের তিনটি পদে ১১জন প্রার্থী হলেন- মোশারফ হোসেন স্বপন, আব্দুল আজিজ হীরা, সহিদ উন নবী সালাম, শেখ তাহা উদ্দিন নাহিন, এবিএম মাজেদুর রহমান জুয়েল, জাহিদুল ইসলাম হেলাল, শহিদুল ইসলাম সহিদ, কেএম খায়রুল বাশার, মিজানুর রহমান রাজা, আলী হায়দার তোতা ও সোলায়মান আলী।

আরও পড়ুনঃ  ব্লকে সাড়ে ১৯ কোটি টাকার লেনদেন

কাউন্সিলররা বলছেন, এবারের সম্মেলনে বেশ হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। সভাপতি পদে এগিয়ে দুইজন প্রার্থী উভয়েই জেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। ৩য় অবস্থানে থাকা সভাপতি প্রার্থীও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং সিনিয়র সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। আবার সাধারণ সম্পাদক পদে যে দুইজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তারা উভয়েই জেলা ছাত্রদলের তুখোড় ছাত্রনেতা ছিলেন। জেলা বিএনপিতে উভয়েই যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। আবার সাংগঠনিক সম্পাদক পদেও রয়েছেন সাবেক ছাত্র নেতারা। যোগ্যতা ও দলীয় ভূমিকায় সবাই সবাই এগিয়ে আছেন। একারণে নেতৃত্বে কারা আসবেন, সেটি আগেই বলা মুশকিল।

সম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং সম্মেলন উদ্বোধন করবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। এতে সভাপতিত্ব করবেন সম্মেলন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এ কে এম সাইফুল ইসলাম। এছাড়া কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ অংশ নেবেন।

বগুড়া জেলা বিএনপির ২৪টি ইউনিটের মধ্যে ২২টি ইউনিটের সম্মেলন সমাপ্ত করেছেন গোলাম মোহাম্মাদ সিরাজ এবং পরবর্তীতে রেজাউল করিম বাদশার নেতৃত্বাধীন জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি। একারণে ২টি ইউনিট ছাড়াই অনুষ্ঠিত হবে জেলা বিএনপির সম্মেলন। সম্মেলন উপলক্ষে শনিবার কাউন্সিলর ও ডেলিগেট কার্ড বিতরণ করেছে সম্মেলন পরিচালনা কমিটি।

দলীয়সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৯ সালে জেলা বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগাঠনিক সম্পাদক পদে সরাসরি ভোটগ্রহণ করা হয়। এরপর ২০১১ সালের ৭ এপ্রিল সম্মেলনে আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। এতে সাইফুল ইসলাম সভাপতি এবং জয়নাল আবেদীন সাধারণ সম্পাদক হন। এই কমিটি মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় ২০১৯ সালে পাল্টাপাল্টি আহ্বায়ক কমিটি গঠন নিয়ে দুই পক্ষ মুখোমুখি হলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে বগুড়া-৬ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য গোলাম মো. সিরাজকে প্রধান করে ৩১ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। আহ্বায়ক কমিটি গঠনের প্রায় সাড়ে তিন বছর পর বগুড়া বিএনপির নতুন নেতৃত্ব নির্ধারণে চলতি বছরের গত ১২ অক্টোবর সন্ধ্যায় বগুড়া জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সভায় সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  পণ্য রফতানিতে ধাক্কা

উল্লেখ্য, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জন্মস্থান বগুড়ার গাবতলীতে। তিনি ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন। দলীয় প্রতিষ্ঠাতার জন্মস্থান হিসেবে বগুড়াকে বিএনপির ঘাঁটি বলা হয়। দলীয়ভাবে এই জেলাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন