শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
জলবায়ু সম্মেলন--

লিজ ট্রাসের আপত্তিতে চার্লসের ‘না’

লিজ ট্রাসের আপত্তিতে চার্লসের ‘না’

জাতিসংঘের কপ-২৭ জলবায়ু সম্মেলন আগামী নভেম্বর মাসে মিশরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ব্রিটেনের নতুন রাজা তৃতীয় চার্লসেরও এখানে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। তিনি নিজেও এই সম্মেলনে যোগ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আগামী মাসে অনুষ্ঠিতব্য জলবায়ু সম্মেলনে যাবেন না নতুন এই ব্রিটিশ রাজা। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস ‘আপত্তি’ জানানোর পর সম্মেলনে ‘না যাওয়ার’ এ কথা সামনে আসে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সানডে টাইমস জানিয়েছে, গত সেপ্টেম্বর মাসে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর ব্রিটিশ সিংহাসনে বসেছেন তার বড় ছেলে চার্লস। আগামী ৬ থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিতব্য সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন নতুন এই রাজা। তবে রানি মৃত্যুর ঠিক দু’দিন আগে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হওয়া লিজ ট্রাস গত মাসে বাকিংহাম প্যালেসে চার্লসের সাথে ব্যক্তিগত সাক্ষাতের সময় এর বিরোধিতা করেন এবং এরপরই পরিকল্পনাটি বাতিল হয়ে গেছে।

মূলত ব্রিটেনের নতুন এই প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক পরিকল্পনার কারণে ইতোমধ্যেই বাজারে অশান্তি দেখা দিয়েছে। এর ফলে দেশটির জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতিকে বিতর্কিতভাবে বাড়িয়ে তুলতে পারে এমন জল্পনা-কল্পনার মধ্যে চার্লসের জলবায়ু সম্মেলনে যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিলের খবরটি সামনে এসেছে।

এএফপি বলছে, ট্রাসের সদ্য গঠিত মন্ত্রিসভায় বেশ কিছু এমন মন্ত্রী রয়েছেন যারা তথাকথিত ২০৫০ সালের মধ্যে ‘নেট জিরো’ লক্ষ্য পূরণ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। এছাড়া এই বিষয়টিতে ট্রাস নিজেকে পূর্বসূরি বরিস জনসনের চেয়ে কম আগ্রহী হিসাবে দেখে থাকেন।

সানডে টাইমস বলেছে, আগামী নভেম্বরে মিশরীয় রিসোর্ট শারম আল-শেখ-এ জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত জাতিসংঘের ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনের ২৭তম সম্মেলনে লিজ ট্রাসের যোগদানের সম্ভাবনা কম। তবে গত বছর ব্রিটেন যখন স্কটিশ শহর গ্লাসগোতে জলবায়ু নিয়ে সর্বশেষ শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করেছিল সেসময় চার্লস, প্রয়াত ব্রিটিশ রানি এবং চার্লসের পুত্র উইলিয়াম সেই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

আরও পড়ুনঃ  পশ্চিমা ব্ল্যাকলিস্টে মিয়ানমার

এদিকে (জলবায়ু সম্মেলনে চার্লসের যোগ দেওয়া বা না দেওয়া নিয়ে) ডাউনিং স্ট্রিট এবং বাকিংহাম প্যালেস উভয়ই মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে। ব্রিটিশ এই সংবাদপত্রটি বলেছে, এই ঘটনাটি চার্লস এবং লিজ ট্রাসের মধ্যে ‘উত্তেজনা বাড়াতে পারে’। তবে একটি সরকারি সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে সানডে টাইমস দাবি করেছে, গত মাসে বাকিংহাম প্যালেসে চার্লসের সাথে লিজ ট্রাসের ব্যক্তিগত সাক্ষাৎ ‘সৌহার্দ্যপূর্ণ’ ছিল এবং ‘সেখানে কোনো উত্তেজনা ছিল না’।

অন্যদিকে, একটি রাজকীয় সূত্র ব্রিটিশ এই পত্রিকাকে বলেছে, এটি কোনো রহস্য নয় যে, রাজাকে সেখানে (জলবায়ু সম্মেলনে) যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে রাজাকে তার প্রথম বিদেশ সফরের জন্য কী পদক্ষেপ নিতে হবে সে সম্পর্কে খুব সাবধানে চিন্তা করতে হয়েছিল এবং তিনি কপ২৭ সম্মেলনে যোগ দেবেন না।

ব্রিটেনে প্রচলিত রীতি অনুযায়ী, রাজপরিবারের সদস্যদের বিদেশে সকল সরকারি সফর সরকারের পরামর্শ অনুযায়ী করা হয়। তবে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত না হলেও রাজা তৃতীয় চার্লস হয়তো কোনোভাবে জলবায়ু সম্মেলনে অবদান রাখতে সক্ষম হবেন বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে।

গত বছর জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন সেসময়কার প্রিন্স (বর্তমান রাজা তৃতীয়) চার্লস। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার জন্য প্রচারণার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে বর্তমান এই রাজার।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন