শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যেভাবে ট্রানজিট-ট্রানশিপমেন্ট-করিডর

যেভাবে ট্রানজিট-ট্রানশিপমেন্ট-করিডর

ট্রানজিট: এক বা একাধিক দেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে সড়ক, রেল ও নৌপথে পণ্যসামগ্রী পরিবহন করার প্রক্রিয়াকে ট্রানজিট বলে। অথবা ট্রানজিট হলো নিজ দেশের পণ্য অন্য কোনো দেশের ভূমি ব্যবহার করে নিজ দেশ বা তৃতীয় কোনো দেশে পাঠানো। অর্থাৎ দ্বিতীয় দেশটি তাদের ভূখণ্ড (সড়ক বা নৌপথে) ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার মাধ্যমে ট্রানজিট-সুবিধা দেয়। যেমন: বাংলাদেশি পণ্যবাহী যান যখন ভারতীয় ভূখণ্ড ব্যবহার করে নেপাল বা ভুটানে যায়, তখন তা হলো ভারত কর্তৃক বাংলাদেশকে ট্রানজিট-সুবিধা দেওয়া।

ট্রানশিপমেন্ট: ট্রানশিপমেন্ট হলো পণ্যবাহী একটি যান থেকে আরেকটি যানে সেই পণ্য স্থানান্তর। এটি দেশের ভেতর সচরাচর হয়ে থাকে। যখন দুটি দেশের মধ্যে বিষয়টি চলে আসে, তখনই তা আন্তর্জাতিক ট্রানশিপমেন্ট। যেমন: ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক বাংলাদেশের বেনাপোল স্থলবন্দরে প্রবেশ করে পণ্য খালাস করল। এরপর খালাসকৃত ওই পণ্য আবার আরেকটি বাংলাদেশি ট্রাকে তুলে নিয়ে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমান্তসংলগ্ন তামাবিল স্থলবন্দরে গিয়ে খালাস করা হলো। সেখান থেকে তা আবার ভারতীয় ট্রাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হলো।

করিডর: করিডর সাধারণত দ্বিপক্ষীয় ভিত্তিতে হয়। যেমন: বাংলাদেশ যখন ভারতীয় পণ্যবাহী যানকে কলকাতা থেকে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে আগরতলায় যাওয়ার সুযোগ দেয়, তখন তা হয় করিডর-সুবিধা। অর্থাৎ এখানে তৃতীয় কোনো দেশের সম্পৃক্ততা নেই।

ট্রানজিট ও ট্রান্সশিপমেন্টের মধ্যে পার্থক্য: ট্রানজিটে নিজ দেশের যানবাহন অন্যদেশে ঢুকতে পারবে কিন্তু ট্রন্সশিপমেন্ট পারবে না। যেমন-ভারতের পণ্যবাহী যানবহন যখন বাংলাদেশের উপর দিয়ে ভারতের অন্য কোনো রাজ্যে/ নেপাল/ ভুটানে পৌঁছে দেয় তখন থাকে ট্রানজিট বলে। আর ভারতের পণ্যবাহী যানবাহন যদি বাংলাদেশের ভূখণ্ড পারের জন্য বাংলাদেশি যানবাহন ব্যবহার করে ও বাংলাদেশের ভূখণ্ড পার হওয়ার সাথে সাথেই অন্য দেশের যানবাহন ব্যবহার করে ভারতের অন্য কোন রাজ্যে/ নেপাল/ ভুটানে পৌঁছে দেয় তখন থাকে ট্রানশিপমেন্ট বলে।

আরও পড়ুনঃ  আবারও বাংলাদেশীদের জন্য শ্রমবাজার খুলে দিল কাতার

করিডর ও ট্রানজিট: করিডর ও ট্রানজিট একই ধরনের সুবিধা নয়। করিডর সাধারণত দ্বিপক্ষীয় ভিত্তিতে হয়। যেমন: বাংলাদেশ যখন ভারতীয় পণ্যবাহী যানকে কলকাতা থেকে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে আগরতলায় যাওয়ার সুযোগ দেয়, তখন তা হয় করিডর-সুবিধা। অর্থাৎ এখানে তৃতীয় কোনো দেশের সম্পৃক্ততা নেই।

কিন্তু ট্রানজিটের ক্ষেত্রে তৃতীয় দেশের সম্পৃক্ততা থাকতে হয়। তাই ভারতকে মূল ভূখণ্ড থেকে পণ্যসামগ্রী উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোয় যাওয়ার জন্য বাংলাদেশি ভূখণ্ড ব্যবহারের অনুমতি দেওয়াটা হলো মূলত করিডর-সুবিধা দেওয়া। বৃহত্তরভাবে এটাকে ‘ভারত থেকে ভারতে ট্রানজিট’ বলা যেতে পারে।

তবে ভারত যখন চট্টগ্রাম বা মংলা বন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশের সঙ্গে বাণিজ্য করবে, তখন এই বন্দরগুলো হবে ভারতের ট্রানজিট বন্দর। আর ব্যবহৃত রেল বা সড়কপথটি হবে ট্রানজিট রুট। ট্রানজিট ও করিডরের ক্ষেত্রে এই সুবিধা গ্রহণকারী দেশের যানবাহন-সুবিধা প্রদানকারী দেশের ওপর দিয়ে চলাচলের অনুমতি পায়।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন