শুক্রবার, ২৬শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জ্বালানিতে পুড়ছে চালও

জ্বালানিতে পুড়ছে চালও

ট্রাক ভর্তি করে আসেছে চাল। নামছে বাজারের চালের গুদামে। এতো চাল মজুদ থাকার পরও দাম বাড়ার কারণ খুঁজে পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পর পরিবহন খরচ বাড়ায় নরসিংদীতে বেড়েছে সব ধরনের চালের দাম। ময়মনসিংহ, শেরপুর, আশুগঞ্জ, কুষ্টিয়া, নওগাঁসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নরসিংদীতে চাল আনতে ট্রাক ভাড়া প্রায় দ্বিগুণ গুনতে হচ্ছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। এতে ৫০ কেজির প্রতি বস্তা চালের দাম বেড়েছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে বলে জানান পাইকারী বিক্রেতারা। তবে পরিবহন খরচের তুলনায় খুচরা পর্যায়ে চালের দাম বেশি নেয়া হচ্ছে বলে দাবি খুচরা ক্রেতা বিক্রেতাদের।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, নরসিংদী বড় বাজার চাল আড়ৎগুলোতে প্রতিটি আড়ৎতেই পরিপূর্ণ চাল দিয়ে। এখানে দেখা গেছে মিনিকেট, নাজিরশাইল ও মোটাচালসহ বিভিন্ন রকমের চালের সয়লাব। তেলের দাম বাড়ার পরপরই নরসিংদীতে প্রতি বস্তা চালের দাম বেড়েছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা করে। প্রতি কেজি চাল বতর্মানে দাম বেড়েছে ৪ টাকা থেকে ৫ টাকা। এতে করে নিম্ন ও মধ্যআয়ের মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। খুচরা ক্রেতাদের দাবি এইভাবে প্রতিদিন নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেলে না খেয়ে মরে যেতে হবে। সরকার যেন বাজারগুলোতে নজরদারি ও তদারকি করে চালের দাম সাধারণ মানুষের নাগালে নিয়ে আসে।

নরসিংদী বড় বাজারে চাল কিনতে আসা মোস্তাফা মিয়ার সঙ্গে কথা হয়। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রি। দৈনিক হাজিরা ৪ থেকে ৫শ টাকা। বর্তমানে সব ধরনের জিনিসের দাম বাড়ার কারণে ঠিকমতো তার কাজও থাকে না। আর প্রতিদিন নিত্যপণ্য সয়াবিন তেল, সবজি থেকে শুরু করে লবণে দাম পযর্ন্ত দাম বেড়েছে। মোস্তাফা মিয়া বলেন, এইভাবে চলতে থাকলে আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে। সরকার এই দেশে গরিব মানুষ একটাও রাখবে না। বড়লোকরাই বড় বড়লোক হবে, গরিবরা না খেয়ে মারা যাবে।

আরও পড়ুনঃ  বন্যায় ভেসে গেল তাঁতিদের ঈদের খুশি

নরসিংদী বড় বাজারে খুচরা বিক্রেতা আব্দুল সালাম মিয়া বলেন, বর্তমানে বাজারের চালের দাম মিনিকেট ৬৬ থেকে ৬৭ টাকা, নাজিরশাইল ৭০ টাকা ও মোটা চাল ৫০ থেকে ৫২ টাকা করে। চালের দাম বাড়ার কারণে আমাদের বেচাবিক্রি কমে গেছে। এখন বাজারে আগের মতো ক্রেতা আসে না। এইভাবে চলতে থাকলে আমরা ব্যবসা করে টিকে থাকতে পারবো কিনা জানি না।

নরসিংদী বড় বাজারে খুচরা বিক্রেতা জিয়া রহমান বলেন, বাজারে চাল ভরপুর তাহলে কেন চালের দাম বাড়ছে জানি না। মহাজনরা বলছেন, তেলের দাম বাড়ার কারণে মোকাম থেকে চাল আনতে পরিবহন খরচ নাকি বেড়েছে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার। সেই হিসেবে প্রতি বস্তা ১০ থেকে ১৫ টাকা বাড়ার কথা। তাহলে দেড়শ থেকে তিনশ কেন? একটি বড় ট্রাকে তিনশ বস্তা চাল আনা যায়। তাহলে তাদের হিসাবে ১০ থেকে ১৫ টাকা বাড়ার কথা। বর্তমানে আমরা আগের দাম থেকে প্রতি কেজি খুচরা চাল ৫ টাকা করে বেশি বিক্রি করছি। এই কারণে ক্রেতাও কমে গেছে।

নরসিংদী বাজার চাল আড়ৎ সমিতি সাধারণ সম্পাদক সেলিম ভূঁইয়া বলেন, তেলের দাম বৃদ্ধিতে গত কয়েকদিনে চালের দাম বৃদ্ধি হয়েছে। এই কদিনে প্রতি কেজি চাল ৫ টাকা করে বৃদ্ধি হয়েছে। প্রতি বস্তায় ২ থেকে ৩শ টাকা বৃদ্ধি হয়েছে। এর কারণ হচ্ছে ডিজেলের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় প্রতি ট্রাক ভাড়া তিন হাজার থেকে চার হাজার টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। ডলার ও তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় চালের দাম বেড়েছে। যদি তেলের বাজার স্বাভাবিক হয়ে উঠে তাহলে চালের বাজারও স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তবে অগ্রহায়ণে ধানের বাজারে নতুন চাল উঠলে দাম স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

আরও পড়ুনঃ  বাকৃবিতে শব্দদূষণে ক্ষতিগ্রস্ত ৮০ ভাগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন