শুক্রবার, ২৬শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পুঁজিবাজারে লেনদেন-

উত্থান থেকে ফের পতনে

পুঁজিবাজার
  • লেনদেন কমে ৭ কোটির কাছাকাছি
  • ক্রেতা কমলেও বেড়েছে বিক্রেতা
  • সব ধরনের সূচক পতন

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল মঙ্গলবার লেনদেন কমে ৭শ কোটি টাকার ঘরে অবস্থান করে। অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন কমে ৫৬ কোটি ঘরে চলে এসেছে। এদিন দুই স্টকে শেয়ার বিক্রয়ের চাপ বেড়েছে। ফলে ক্রেতা কমলেও বিক্রেতা বেড়েছে। কমেছে দুই স্টকের বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর। উভয় স্টকে সূচকের পতন হয়।

সম্প্রতি আগারগাওয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে বলেন, সবাই ধৈর্য ধরুন,পুঁজিবাজার ভালো হবে। শিবলী রুবাইয়াতের এমন আশ্বাসের ঠিক পরের কার্যদিবস সত্যিই ঘুরে দাঁড়ায় পুঁজিবাজার। সেই উত্থান পরে মন্দায় রুপে ফিরে এসেছে। আসন্ন অর্থবছরের (২০২২-২৩) বাজেট পেশের পর তিন কার্যদিবস পুঁজিবাজার দরপতন হয়। ওই তিন কার্যদিবসে শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ে। এই পতন পর দুই কার্যদিবস উত্থান হয়। সেই উত্থান ধরে রাখতে পারলো না। ফিরে আসলো ফের পতনে।

ডিএসইতে এদিন তিন খাতের শতভাগ কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে। এই খাতগুলো হলো- পেপার, টেলিকম ও সেবা আবাসন। এদিন বিমা, বস্ত্র, ইঞ্জিনিয়ারিং, ওষুধ রসায়ন, চামড়া, ফান্ড, নন ব্যাংকিং আর্থিক, খাদ্য আনুষঙ্গিক, জ্বালানি শক্তি, আইটি, সিমেন্ট, সিরামিক এবং পাট খাতের অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে। এদিন ব্যাংক এবং ভ্রমন অবসর খাতের কোম্পানির শেয়ার দর বাড়া-কমার ছন্দ ছিল। শেয়ার দর কমার একই চিত্র ছিল পুঁজিবাজার সিএসইতে।

আরও পড়ুনঃ  চাঁপাইনবাবগঞ্জে পাউবো’র সরকারি গাছ উঠিয়ে নেয়ার অভিযোগ

পুঁজিবাজারে (ডিএসই ও সিএসই) এদিন বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর পতন হয়। এর মধ্যে ডিএসইর ৭৩ দশমিক ৮২ শতাংশ এবং সিএসইর ৭৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর পতন হয়। অপরদিকে, ডিএসইর ১৪ দশমিক ৯২ শতাংশ এবং সিএসইর ১২ দশমিক ৩৬ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর উত্থান হয়। কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর এই ধরনের হ্রাস অস্বাভাবিক হিসেবে দেখছেন বিনিয়োগকারীরা বলে জানায় পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা।

ডিএসইতে গতকাল মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছে ৭২৫ কোটি ৮৮ লাখ টাকার শেয়ার। গত সোমবার লেনদেন হয়েছিল ৮২২ কোটি ৩৯ লাখ টাকার শেয়ার। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৮২টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৫৭টির, কমেছে ২৮২টির এবং পরিবর্তন হয়নি ৪৩টির। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪৫ দশমিক ৭২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩১১ দশমিক ৬৫ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই-৩০ সূচক ১৯ দমমিক ১৫ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস সূচক ৯ দশমিক ১১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২ হাজার ৩৯৫ দশমিক ৪১ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ৩৭৮ দশমিক ৯১ পয়েন্টে।

ডিএসইতে বেক্সিমকোর শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। এদিন ডিএসইতে বেক্সিমকো ৩৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। ডিএসইতে এদিন লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে আনোয়ার গ্যালভানাইজিং ২৭ কোচি ৯৭ লাখ টাকা, ফু-ওয়াং ফুড ২৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকা, জেএমআই হসপিটাল ১৯ কোটি ৮ লাখ টাকা, শাইনপুকুর ১৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা, আরএকে সিরামিক ১৩ কোটি ৭১ লাখ টাকা, ন্যাশনাল ব্যাংক ১৩ কোটি ১ লাখ টাকা, এইচ আর টেক্সটাইল ১২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, প্রাইম ইন্স্যুরেন্স ১২ কোটি ২৪ লাখ টাকা এবং বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন ৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।

আরও পড়ুনঃ  দেশে বিনিয়োগে সম্ভাবনাময় আমিরাত

সিএসইতে এদিন (মঙ্গলবার) লেনদেন হয়েছে ৫৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা। গত সোমবার লেনদেন হয়েছিল ৫৭ কোটি ১৮ লাখ টাকার শেয়ার। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৭৫টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৩৪টির, কমেছে ২১১টির এবং পরিবর্তন হয়নি ৩০টির। সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১৩৭ দশমিক ৩৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৫৯১ দশমিক ৩৪ পয়েন্টে।

এছাড়া সিএসই-৫০ সূচক ৯ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ৬৯ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স সূচক ৮৩ দশমিক ৪৯ পয়েন্ট এবং সিএসআই সূচক ৪ দশমিক ৭৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৩৬৬ দশমিক ৮৩ পয়েন্টে, ১ হাজার ৩৪৫ দশমিক ৬৬ পয়েন্টে, ১১ হাজার ১৪৫ দশমিক ৯৯ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ১৭২ দশমিক ৮৮ পয়েন্টে।

সিএসইতে ওরিয়ন ফার্মা শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। এদিন সিএসইতে ওরিয়ন ফার্মা ১৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রিমিয়ার ব্যাংক ১৭ কোটি ৩১ লাখ টাকা, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা, জেএমআই হসপিটাল ১ কোটি ২২ লাখ টাকা, ন্যাশনাল ব্যাংক ৯০ লাখ টাকা, ফু-ওয়াং ফুড ৮৪ লাখ টাকা, বিট্রিশ আমেরিকান টোব্যাকো ৮০ লাখ টাকা, বসুন্ধরা পেপার ৬০ লাখ টাকা, শাইনপুকুর ৫৪ লাখ টাকা এবং বেক্সিমকো ৫৪ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন