শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ক্রিকেটের জেন্টলম্যান একাদশ

আধুনিক যুগের ক্রিকেটে প্রতিযোগিতা, স্লেজিং, দুই দলের আগুনে লড়াই, পূর্বের বাগবিতণ্ডার কারণে সব সময় সেটা সম্ভব হয় না। ক্রিকেটে তাই ব্যাড বয়ের লম্বা একটা তালিকাও পাওয়া যাবে। তবে জেন্টলম্যানের সংখ্যাও কম নয়।

কুইন্টন ডি কক : মাঠে তিনি বিধ্বংসী ব্যাটিং করেন। কিন্তু চলনে-বলনে তিনি যেন এক নিরীহ ক্রিকেটার। উইকেটের পেছন থেকে দলকে উজ্জীবিত করতে অনেক কথাই বলেন। স্লেজিংও করেন প্রতিপক্ষকে। কিন্তু সেটা সীমার দেয়াল উপচে পড়ে না। ২০১৮ সালে অবশ্য ওয়ার্নারের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে সাজা পেয়েছিলেন তিনি।

রোহিত শর্মা : মিডল অর্ডার থেকে ওপেনার বনে গেছেন রোহিত শর্মা। তিনটি ডাবল সেঞ্চুরির মালিক তিনি। শট খেলা শুরু করলে তাকে থামানো দায়। কিন্তু মাঠে রোহিত শর্মা বেশ ঠান্ডা মেজাজের ক্রিকেটার। তার ধীরে-সুস্থে হাঁটা চলা। কথা বলায়ও তার প্রতিফলন পাওয়া যায়।

চেতেশ্বর পূজারা : ভারতের হয়ে টেস্ট ক্রিকেটই খেলেন তিনি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যাটিং করেও তিনি মেজাজ হারান না। ব্যাটিংয়ে তিনি যেমন ঠান্ডা মেজাজের ব্যক্তি জীবনেও তেমন। স্লেজিং আধুনিক ক্রিকেটের অন্যতম অংশ মানেন তিনি। কিন্তু নিজে সেটা খুব একটা পারেন না বলেও অকপটে স্বীকার করেন এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান।

কেন উইলিয়ামসন : আধুনিক ক্রিকেটের সেরা চার ব্যাটসম্যানের একজন তিনি। কিন্তু জেন্টলম্যানদের তালিকা করলে তার নামই সম্ভবত সবার আগে থাকবে। অধিনায়ক কোহলি মাঠে আগ্রাসী আচরণ করেন। কিন্তু কেন বুঝিয়ে যেন শান্ত-শিষ্ট থেকেও ভালো নেতৃত্ব দেওয়া যায়।

রস টেইলর : ক্রিকেটের সবচেয়ে জেন্টলম্যান দল বলা হয় নিউজিল্যান্ডকে। রস টেইলরকে তাই সংক্ষিপ্ত তালিকায় রাখতে হবে। নিউজিল্যান্ডের হয়ে দীর্ঘদিন খেলছেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান।কিন্তু প্রতিপক্ষের সঙ্গে বিতর্কে জড়াতে তিনি পছন্দ করেন না।

আরও পড়ুনঃ  করোনামুক্ত পেসার রাহি

এমএস ধোনি : দীর্ঘ ক্যারিয়ার তার। এই সময়ে তিনি দলের ক্রিকেটার, বোর্ড কিংবা প্রতিপক্ষের সঙ্গে বিতর্কে যাননি একথা বলার উপায় নেই। কিন্তু তার দীর্ঘ ক্যারিয়ারের সঙ্গে বিতর্ক তুলনায় তিনি জেন্টলম্যানদের তালিকায়ই পড়বেন। মাঠে মাথা ঠান্ডা রেখে হিসেব কথা ম্যাচ খেলতে তার জুড়ি নেই।

জেসন হোল্ডার : ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিনিয়র ক্রিকেটাররা বেতন ভাতার দাবিতে আন্দোলন করলে দলের নেতৃত্ব দেওয়া হয় হোল্ডারের কাঁধে। তিনি তখনও তরুণ ক্রিকেটার। কিন্তু ঠান্ডা মেজাজে তিনি সবকিছু সামলাতে পারবেন এই ভেবে তাকে নেতৃত্ব দেওয়া হয়। সেটা তিনি দারুণভাবে সামলাচ্ছেনও।

মিশেল সাটনার : নিউজিল্যান্ডের হয়ে তিন ফরম্যাটেই খেলছেন মিশেল সাটনার। বাঁ-হাতি স্পিন অলরাউন্ডার হিসেবে তিনি কিউইদের প্রধান ভরসা। বোলার হিসেবে তার আগ্রাসন আছে। কিন্তু তর্কে জড়াতে তিনি পছন্দ করেন না। নিউজিল্যান্ডের আরেকজন ঠান্ডা মেজাজের ক্রিকেটার তিনি।

মাশরাফি মর্তুজা : জেদের বলেই একের পর এক ইনজুরি নিয়ে খেলে যাচ্ছেন মাশরাফি। দলকে নেতৃত্ব দিয়ে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। কিন্তু ক্রিকেটার হিসেবে তিনি জেন্টলম্যান একাদশেই থাকবেন। পেসার হিসেবে তার আগ্রাসন আছে। উইকেট পেলে উল্লাস করেন। কিন্তু প্রতিপক্ষকে আঘাত করা তার চরিত্রের বাইরে।

ট্রেন্ট বোল্ট : সুইংয়ের বিষ ছোড়েন ব্যাটসম্যানদের দিকে। প্রতিপক্ষকে কাবু করতে সেটাই যথেষ্ঠ। ট্রেন্ট বোল্টের কথার বিষ ছোড়ার দরকার পড়ে না। নিউজিল্যান্ডকে দু’বার ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে তুলতে বড় ভূমিকা রাখা বোল্ট তাই বর্তমান ক্রিকেটের অন্যতম জেন্টলম্যান।

নাথান লায়ন : অজিরা সবসময়ই আগ্রাসী। প্রতিপক্ষকে কথার ফাঁদে ফেলে চাপ বাড়াতে পছন্দ করেন। কিন্তু পূর্বে তাদের দলেও বেশ কিছু ঠান্ডা মেজাজের ক্রিকেটার ছিলেন। এখন যেমন আছেন নাথান লায়নের মতো ক্রিকেটার। টেস্টই বেশি খেলেন তিনি। নিয়ম করে একই জায়গায় ভেরিয়েশন দিয়ে বল করে যান। প্রতিপক্ষের মেজাজ হারাতে ওটাই যথেষ্ঠ তার।

আরও পড়ুনঃ  অশ্লীল ভঙ্গি নিয়ে বিতর্কে মার্টিনেজ

আনন্দবাজার/এস.কে

সংবাদটি শেয়ার করুন