শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সূচক বাড়লেও কমেছে লেনদেন

সূচক বাড়লেও কমেছে লেনদেন

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সব ধরনের সূচক উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। আগের কার্যদিবস থেকে এদিন দুই স্টকের লেনদেন কমেছে। দুই স্টকে বেড়েছে ৪১ শতাংশ এবং কমেছে ৪৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর। গতকাল বৃহস্পতিবার দুই স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৃহস্পতিবার দুই স্টকের সব ধরনের সূচক উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন দুই স্টকের ৪৪ দশমিক ১৪ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর পতন হয়েছে। এর মধ্যে ডিএসইর ৪৪ দশমিক ১৮ শতাংশ এবং সিএসইর ৪৪ দশমিক ১১ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর পতন হয়েছে। অপরদিকে দুই স্টকের ৪০ দশমিক ৮৩ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর উত্থান হয়েছে। এর মধ্যে ডিএসইর ৪১ দশমিক ২৭ শতাংশ এবং সিএসইর ৪০ দশমিক ৪০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর উত্থান হয়েছে। কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর এ ধরনের বাড়া-কমাকে স্বাভাবিক হিসেবে দেখছেন বিনিয়োগকারীরা বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা।

বৃহস্পতিবার ডিএসইতে খাদ্য আনুষঙ্গিক, বিবিধ, পেপার, ওযুধ রসায়ন, চামড়া এবং টেলিকমিউনিকেশন খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর উত্থান হয়। এর মধ্যে খাদ্য আনুষঙ্গিক খাতের ২০টির মধ্যে ১৫টি, বিবিধ খাতের ১৪টির মধ্যে ১১টি, পেপার খাতের ৬টির মধ্যে ৪টি, ওযুধ রসায়ন খাতের ৩২টির মধ্যে ২০টি, চামড়া খাতের ৬টির মধ্যে ৪টি এবং টেলিকমিউনিকিশন খাতের ৩টির মধ্যে ২টি বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর উত্থান হয়েছে। অপরদিকে ব্যাংক, নন ব্যাংকিং আর্থিক, সিমেন্ট, সিরামিক এবং আইটি খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর পতন হয়েছে। এর মধ্যে ব্যাংক খাতের ৩২টির মধ্যে ২৩টি, নন ব্যাংকিং আর্থিক খাতের ২৩টির মধ্যে ১৫টি, সিমেন্ট খাতের ৭টির মধ্যে ৪টি, সিরামিক খাতের ৫টির মধ্যে ৪টি এবং আইটি খাতের ১১টির মধ্যে ৬টি খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর পতন হয়।

আরও পড়ুনঃ  বড় উত্থানের সম্ভাবনা শেয়ারবাজারে

নিয়ন্ত্রক সংস্থাদের বিভিন্ন ইতিবাচক উদ্যোগও উত্থান পুঁজিবাজার ধরে রাখতে পারছে না। দেখা যাচ্ছে, কয়েক পুঁজিবাজার উত্থান হলেও পরেরদিন কয়েকদিন ফের পতন মুখিতে ফিরে আসে। অপরদিকে, উত্থান পুঁজিবাজারে শেয়ার ক্রয়ের হিরিক থাকলেও পতন তার উল্টো চিত্র ফুটে ওঠে। বরাবরই পুঁজিবাজারকে হোঁচট খেতে হচ্ছে এমনটিই মনে করছেন বিজ্ঞ বিনিয়োগকারীরা। তারা বলছেন, পুঁজিবাজারে শেয়ার দর ধারাবাহিক অতি উত্থান ঠিক না। তেমনি ধারাবাহিক অতি পতনও থাকা ঠিক না। স্বাভাবিক পুঁজিবাজারের জন্য শেয়ার দর বাড়া-কমার ছন্দ থাকা জরুরি।

দুই স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে জানা যায়, ডিএসইতে বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ২৪২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। এদিন ২৩ কোটি ৪৬ লাখ ৩৯ হাজার ৬৩টি শেয়ার ২ লাখ ১১ হাজার ১৫৮ বাব হাতবদল হয়েছে। আগের কার্যদিবস বুধবারে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৬৬৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা। এরও আগে মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৯৭৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকার শেয়ার। যা গত তিন মাস চার দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছিল।

ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৮টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ১৫৬টির, কমেছে ১৬৭টির এবং পরিবর্তন হয়নি ৫৫টির। টাকার অংকে ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষ কোম্পানি হলো- বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, পাওয়ার গ্রিড, বেক্সিমকো, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, আরএকে সিরামিক, ফরচুন সুজ, তিতাস গ্যাস, বেক্সিমকো গ্রিন-সুকুক আল ইসতিানা, ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স, লাভেলো আইসেক্রিম। এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২১ দশমিক ১৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ১৭ দশমিক ২২ পয়েন্টে। এছাড়া এদিন ডিএসই-৩০ সূচক ৯ দশমিক ৫১ পয়েন্ট ও ডিএসইএস বা শরিয়াহ সূচক ৬ দশমিক ৯৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২ হাজার ৬১৬ দশমিক ৩০ পয়েন্টে ও ১ হাজার ৫০১ দশমিক ৭১ পয়েন্টে।

আরও পড়ুনঃ  পতনের বেড়াজালে দেশের পুঁজিবাজার

অপর পুঁজিবাজারে বৃহস্পতিবার সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪২ কোটি ২৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবস বুধবার লেনদেন হয়েছিল ৭২ কোটি ৩৫ লাখ টাকার শেয়ার। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৯৭টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ১২০টির, কমেছে ১২১টির এবং পরিবর্তন হয়নি ৪৬টির। টাকার অংকে সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষ কোম্পানি হলো- বেক্সিমকো, আরএকে সিরামিক, পাওয়ার গ্রিড, রবি, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, তিতাস গ্যাস, কপারটেক,পেনিনসুলা, সালভো কেমিক্যাল, আরডি ফুড।

এদিন সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৪৮ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৫৪৫ দশমিক ৯০ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসই-৫০ সূচক ২ দশমিক ২৫ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ৬৩ দশমিক ৮২ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স সূচক ২৮ দশমিক ৪২ পয়েন্ট ও সিএসআই সূচক দশমিক ৮১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৫২৪ দশমিক ৫৬ পয়েন্টে, ১৪ হাজার ৪৬১ দশমিক ৩০ পয়েন্টে, ১২ হাজার ৩৪২ দশমিক ৩৪ পয়েন্টে ও ১ হাজার ২৭৮ দশমিক ৮৪ পয়েন্টে।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন