শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
৬০ বছরের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের ইতি

বাবা মায়ের পাশেই শায়িত হলেন আব্দুল কুদ্দুস এমপি

বাবা মায়ের পাশেই শায়িত হলেন আব্দুল কুদ্দুস এমপি

বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মো. আব্দুল কুদ্দুস ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সর্ব শেষ ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাটোর-৪ আসনে পঞ্চমবারের মত এমপি হন অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস। তিনি ১৯৯৬ সালে প্রতিমন্ত্রীও ছিলেন।

তার বর্নাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে ১৯৬৬ সালের ৬দফা ১৯৬৯ গণ অভুথান ৭০ নির্বাচন এবং ৭১ এর স্বাধীনতা আন্দোলনে সরাসরি অংশ গ্রহন করে দেশ রক্ষায় অগ্রনি ভুমিকা পালন করেছিলেন।

ছাত্র জীবন থেকেই জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের অত্যান্ত বিশস্থ্য আস্থাভাজন ছিলেন। তিনি ১৯৭৩ সালে রাজশাহী কলেজের ভিপি, ১৯৬৯ সালে বৃহত্তর রাজশাহী বিভাগের ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক ছিলেন। রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং পরে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৫ আগস্ট হত্যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে ১৭ আগস্ট গ্রেফতার হয়ে ৫ বছর কারাবন্দী থাকেন। ২০০৪ সালে বিএনপি জামায়াত সরকারের সময় ২১ আগস্ট ততকালীন বিরোধী দলের নেতা শেখ হাসিনার উপর গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদ করতে গিয়ে সর্ব প্রথম কারাগারে যান উত্তর জনপদের সবচেয়ে প্রবীণ এই নেতা। রাত দিন কাজ করতে গিয়ে দল পাগল এই নেতা জীবনের কথা চিন্তা না করে দেশ তথা মা মাটি মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়ে এই আগস্ট মাসেই লক্ষ মানুষ কে কাদিয়ে চিরো বিদায় নিলেন। চলে গেলেন না ফেরার দেশে। সেই সাথে শেষ হলো সুদীর্ঘ ৬০ বছরের স্বচ্ছ মসৃণ ও বর্নাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অবসান। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত নাটোর-৪ (গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম) আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ও নাটোর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির দ্বায়িত্ব পালন করেছেন।

আরও পড়ুনঃ  প্রয়োজনে দিনে বিদ্যুৎ বন্ধ

প্রবীণ ও বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয় ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পূর্বে রাজশাহীতে তিনিই প্রথম পাকিস্তানের পতাকায় অগ্নিসংযোগ করেন। পরবর্তীতে ভারতে ট্রেনিং নিয়ে মুজিব বাহিনীর আঞ্চলিক কমান্ডার ও সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। তিনি রাজশাহী অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন। তিনি (১৯৬৮-১৯৭২) পর্যন্ত বৃহত্তর রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতার পরে (১৯৭২-১৯৭৪) রাজশাহী কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তৎকালীন শাসক গোষ্ঠী রাজশাহীতে প্রথম আব্দুল কুদ্দুসকে গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করে। সেখানে দীর্ঘ ৫ বছর কারাভোগ করেন তিনি। কারাগারে থাকা অবস্থায় তিনি রাজশাহী জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাক নির্বাচিত হন। পরে (১৯৮২-১৯৮৬) পর্যন্ত রাজশাহী জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। রাজশাহী মহানগর গঠিত হলে (১৯৮৬-১৯৯০) পর্যন্ত তিনি রাজশাহী মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। সামরিক শাসকের অবসানের পর (১৯৯১) সালের জাতীয় নির্বাচনে তিনি প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার মৃত্যুতে এলাকা জুড়ে শোক বিরাজ করছে নাটোরের বড়াইগ্রাম,গুরুদাসপুর ও সর্ব শেষ তার জন্ম ভুমি বিলশাতে বাবা মায়ের কবরের পাশে বৃহস্পতিবার বিকেলে সমাহিত করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন