শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অপরাজিত জনপ্রতিনিধি মন্ত্রী মোজাম্মেল

অপরাজিত জনপ্রতিনিধি মন্ত্রী মোজাম্মেল

টানা ৫০ বছর ধরে অপরাজিত জনপ্রতিনিধি বর্তমান গাজীপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য আওয়ামীলীগের হেভিওয়েট মন্ত্রী আলহাজ¦ এ্যাড. আ. ক. ম মোজাম্মেল হক। প্রধানমন্ত্রীর ব্যাপক উন্নয়ন বার্তা জনগণের দুরগোড়ায় পৌঁছাতে দলীয় কর্মসূচী, কর্মীসভা, উঠান-বৈঠক, সামাজিক অনুষ্ঠানে পাড়া-মহল্লাতেও নিয়মিত যাচ্ছেন ১৯শে মার্চের এই মহানায়ক। এছাড়াও এ আসনে উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে নৌকা মার্কায় ভোট প্রার্থনা করছেন বর্ষিয়ান এ জননেতা। ফলে এখনো জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছেন মন্ত্রী মোজাম্মেল।

এলাকাবাসী ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের আদর্শকে ধারণ করে ছাত্র রাজনীতিতে আসেন আ.ক.ম মোজাম্মেল হক। ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো’ এ শ্লোগানে তাঁর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের ১৯শে মার্চ গাজীপুরে সর্বপ্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে পরাজিত হয়ে জয়দেবপুর ছাড়তে বাধ্য হয় পাকহানাদার বাহিনী। সর্বত্র শ্লোগান উঠে ‘জয়দেবপুরের পথ ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো’। এরপর ওই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। বিশেষ দক্ষতা ও সততার সাথে দায়িত্ব পালনেই জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছান তিনি। ১৯৭৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত টানা ৫০ বছর সফলতার সাথে জনপ্রতিনিধিত্ব করেন ১৯শে মার্চের এ মহানায়ক। তিনবার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, চারবার পৌর চেয়ারম্যান ও মেয়র নির্বাচিত হন তিনি। গাজীপুর জেলা আওয়ামীলীগের বার বার নির্বাচিত সভাপতিও এ নেতা। গাজীপুর-১ আসনটি পূণর্বিন্যাসের পর ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী চৌধুরী তানভীর আহম্মেদ সিদ্দিকীকে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মোজাম্মেল হক। ওই সময় তিনি ভুমি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পান। ২০১৪ সালের দশম নির্বাচনে একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে তিনি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান।

আরও পড়ুনঃ  ডুবতে ডুবতে জাগলো

এরপর ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে ফের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে এখন পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন এ অপরাজিত জনপ্রতিনিধি। মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ খেতাব “স্বাধীনতা পুরস্কার” লাভ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিসনার নেতৃতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, মুক্তিযোদ্ধা তালিকা প্রণয়ন, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বোনাস, বিনামূল্যে চিকিৎসা ও আবাসন ব্যবস্থা এবং জেলা ও উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণ, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনসহ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এ মন্ত্রী। এছাড়াও সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় তার হাত ধরে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১-১৮নং ওয়ার্ড এবং কালিয়াকৈর উপজেলা ও কালিয়াকৈর পৌরসভা নিয়ে এ আসনে উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের মধ্যে বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু হাইকেট সিটি, বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি রেলস্টেশন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কলেজ ও হাইস্কুল সরকারী করণ, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক উন্নতিকরণ, কালিয়াকৈর উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়ন, গৃহহীনদের শতভাগ আবাসন ও মৎস্যজীবীদের শতভাগ পুনর্বাসন বাস্তবায়ন, হর্টিকালচার সেন্টার স্থাপন, বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিতে দরিদ্রদের মাঝে সাবমারসিবল পাম্পসহ নানা উপকরণ বিতরণ করা হয়। ভুমিহীন মুক্ত উপজেলা ঘোষণা, মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বীর নিবাস, মডেল মসজিদ, উপজেলায় আধুনিক ডাকবাংলো, উপজেলা পরিষদের নতুন ভবন, হাসপাতাল ৫০ শয্যায় উন্নিতকরণ ও সকল ইউনিয়ন পরিষদে আধুনিক ভবন নির্মাণসহ ডিজিটাল তথ্য সেবা কেন্দ্র, বিদ্যুতের গ্রীড সাব-স্টেশন, বঙ্গবন্ধুর আধুনিক মুরাল, হাসপাতালকে অক্সিজেন প্লান্ট, কমিউনিটি ক্লিনিক ও আধুনিকায়ন, বহু স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দিরসহ অনেক সেবামূলক প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হয়। এছাড়াও বিপুল সংখ্যক গার্ডার ব্রিজ, সেতু, কালভার্ট, ইটসলিং ও কার্পেটিং সড়ক নির্মাণসহ বিপুল সংখ্যক প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবন ও সীমানা প্রাচীর, প্রতিটি প্রাথমিক স্কুলেও শহীদ মিনারসহ ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়। অপরদিকে নিয়োগ বাণিজ্য, ঘুষ, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজি বন্ধে অগ্রনী ভুমিকা পালন করেন গণমানুষের এ নেতা। প্রাথমিকের সকল শিশুদের মাঝে বিনামূল্যে জাতির পিতার ছবি সংবলিত স্কুলব্যাগ বিতরণ করেও প্রশংসিত হন মন্ত্রী মোজাম্মেল।

আরও পড়ুনঃ  ফের বাড়লো গ্যাসের দাম

উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মুরাদ কবীরসহ দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, শুধু আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নয়, বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠান ছাড়াও মন্ত্রী নিয়মিত নির্বাচনীয় এলাকায় বিএনপির জ্বালাও-পোড়াও অগ্নিসন্ত্রাস, নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে দলীয় কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেন। বিশেষ করে গত ১৫ আগস্ট পাড়ায়পাড়ায় জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানেরও অংশগ্রহণ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর ব্যাপক উন্নয়ন বার্তা জনগণের দুরগোড়ায় পৌঁছে দিতে নিয়মিত উঠান-বৈঠক, কর্মীসভা, সামাজিক অনুষ্ঠানে নিয়মিত পাড়া-মহল্লাতে যাচ্ছেন অপরাজিত এ জনপ্রতিনিধি। জনপ্রিয়তায় শীর্ষে থাকায় তাঁর প্রতিটা সভা-অনুষ্ঠান স্থল এখনো জনসমুদ্রে পরিণত হয়। এছাড়াও এ আসনে উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে নৌকা মার্কায় ভোট প্রার্থনাও করছেন বর্ষিয়ান এই জননেতা। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনেও তাঁর হাতে দলীয় প্রতীক চান দলীয় নেতাকর্মীরা।

রাষ্ট্রের যত উন্নয়ন, সেটা প্রধানমন্ত্রীর কৃতিত্ব উল্লেখ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আলহাজ্ব এ্যাড. আ. ক. ম মোজাম্মেল হক বলেন, মানুষ ভালবেসে আমাকে জনপ্রতিনিধি বানিয়েছেন। তাই তাদের সেবায় নিজেকে সর্বক্ষণ নিয়োজিত রেখেছি। আর আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে এ আসনে যে কেউ প্রার্থী হতে পারে, এতে আমার কোনো সমস্যা নেই। আর আমি কতটা কাজ করেছি? সেটা জনগন জানেন-বুঝেন। তবে সব বিবেচনা করে দলীয় মনোনয়ন দিবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। তিনি যাকে মনোনয়ন দিবেন, আমরা তার পক্ষে কাজ করে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করবো, ইনশায়াল্লাহ।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন