শুক্রবার, ২৬শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পায়রা বন্দরের উন্নয়ন যাত্রা আজ

পায়রা বন্দরের উন্নয়ন যাত্রা আজ
  • ক্যাপিটাল ড্রেজিংসহ ৮ জলযান উদ্বোধন
  • গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি করবেন প্রধানমন্ত্রী

রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা আজ বৃহস্পতিবার পায়রা সমুদ্র বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের ক্যাপিটাল ও মেইনটেনেন্স ড্রেজিং ও বন্দরের ৮টি জলযানের উদ্বোধন এবং পায়রা বন্দরের ৬৫০ মিটার দীর্ঘ প্রথম টার্মিনাল, ছয়লেন বিশিষ্ট সংযোগ সড়ক, আন্ধারমানিক নদীর ওপর এক দশমিক ১৮ কিলোমিটার ৪-লেন সেতুর নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।

আজ বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এসব প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন নৌ-পরিবহন

প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় পায়রা

বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম সোহায়েল রাবনাবাদ নদী পাড়ে

আনুষ্ঠানিক প্রেস ব্রিফিং করে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শেষ হবে। তখন থেকেই পায়রা পুরোপুরি অপারেশনাল কার্যক্রমে যেতে পারবে। তা ছাড়া পদ্মা সেতু চালু হওয়াতে পায়রার কার্যক্রমে সবচেয়ে বেশি গতি আসবে। বিশেষ করে পায়রা বন্দরের সঙ্গে ঢাকাসহ পার্শ্ববর্তী জেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে। এতে বন্দর কেন্দ্রিক ব্যবসার সাথে জড়িতরা বেশি উৎসাহিত হবেন। দক্ষিণাঞ্চলের জেলাসহ সারাদেশের আমদানি-রপ্তানিকারকরা পায়রা বন্দর ব্যবহার করে সড়ক পথে খুব সহজে পণ্য আনা- নেওয়া করতে সক্ষম হবেন।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) কমোডর এম মামুনূর রশিদ, উন্নয়ন অবকাঠামো সহায়তা সুবিধা (ডিআইএসএফ) প্রকল্পের পরিচালক ক্যাপ্টেন এম মুনিরুজ্জামান, হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন এস এম শরিফুর রহমান, উপ-পরিচালক (নিরাপত্তা) লে. কমান্ডার রিফাত মাহমুদ, উপ-পরিচালক (প্রশাসন) তায়েবুর রহমান, উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মো. আজিজুর রহমান প্রমূখ।

আরও পড়ুনঃ  কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের অঙ্গীকার

পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের সূত্রমতে, প্রধানমন্ত্রী পায়রা বন্দর সংলগ্ন ৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ রাবনাবাদ চ্যানেলে ক্যাপিটাল ড্রেজিং ও কার্গো অপারেশনের জন্য ২টি টাগ বোট, ১টি বয়ালেয়িং ভেসেল, ১টি সার্ভে বোট, ২টি নিরাপত্তা টহল জলযান ও ২টি পাইলট বোটের উদ্বোধন করবেন। এছাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের চাড়িপাড়ায় নির্মাণাধীন প্রথম টার্মিনাল, আন্দারমানিক নদের পায়রা বন্দর সংলগ্ন পয়েন্টে এক দশমিক ১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে চার লেনের সেতু ও ছয় লেন বিশিষ্ট সড়কের নির্মাণ কাজের ভিত্তিফলক উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

বন্দরের কর্মকর্তারা জানান, পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলে ক্যাপিটাল

ড্রেজিংয়ের ফলে বন্দর থেকে সাগরের মধ্যে ৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ, ১০০-১২৫ মিটার প্রশস্ত, ১০ দশমিক ৫ মিটার গভীরতার একটি চ্যানেল সৃষ্টি হবে। এর ফলে

বন্দরে ৪০ হাজার টন কার্গো বা তিন হাজার কনটেইনারবাহী জাহাজ ভিড়ানোর

সক্ষমতা তৈরি হবে। ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের জন্য ব্যয় হবে ৪ হাজার ৯৫০ কোটি

টাকা। চার লেনের সেতু এবং প্রথম টার্মিনাল থেকে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কের

সাথে ছয় লেনের সড়ক পথটি পায়রা বন্দর থেকে সহজে এবং দ্রুততম সময়ে পণ্য

পরিবহন করার সুবিধা নিশ্চিত করবে।

পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনাল, ৬ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ছয় লেনের সংযোগ সড়ক ও চার লেনের সেতু নির্মাণ সম্পন্ন হলে টার্মিনালের তিনটি জেটিতে একত্রে তিনটি বিদেশি কনটেইনার বা বাল্ক কার্গোবাহী জাহাজ এসে ভিড়তে পারবে। বন্দরের প্রথম টার্মিনাল নির্মাণে ব্যয় হবে ৪ হাজার ৫১৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। ছয় লেনের সংযোগ সড়কটি নির্মাণ করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এর প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৫৫ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। পায়রা বন্দরের মালামাল পরিবহনের জন্য আন্দারমানিক নদের ওপর চার লেনের ১১৮০ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণে ব্যয় হবে ৭৪০ কোটি টাকা।

আরও পড়ুনঃ  ওষুধই হবে দ্বিতীয় বৃহৎ রপ্তানিখাত

বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম সোহায়েল তার বক্তব্যে আরও বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার খবরে নেদারল্যান্ড, জার্মানি, বেলজিয়াম, জাপান, সাউথ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, ভারত, চায়না, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এবং কাতার পায়রা বন্দরে বিভিন্ন ধরণের বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এসব দেশ থেকে বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে। ২০১৬ সালে সীমিত পরিসরে অপারেশনাল কার্যক্রম শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত এ বন্দরে ২৩৬টি বাণিজ্যিক জাহাজ আগমন করেছে। এতে সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন