শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
জীবন যেমন--

রেস্টুরেন্টে খাওয়ার স্বপ্ন রনি-মনির

রেস্টুরেন্টে খাওয়ার স্বপ্ন রনি-মনির
  • শপিংমলে গিয়ে নতুন জামা কেনার শখও 

রনি এবং মনির দুই ভাই। তাদের বাবা রাসেল আগে ট্রাক চালাতেন। সড়ক দুর্ঘটনায় পঙ্গু হয়ে এখন ঘরেই শুয়ে থাকেন। মা স্বপ্না বেগম বাসায় বাসায় গিয়ে কাজ করেন। দিনে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা করে যা পান তাই দিয়ে সংসার চালান।

বাবা-মায়ের সঙ্গে কমলাপুরের বস্তিতে থাকে রনি আর মনির। সেই সকালে অন্যের বাসায় কাজ করতে বেরিয়ে যায় তাদের মা। ফেরেন সেই রাতে। সকালে পান্তা খেয়ে দুই ভাইও প্লাস্টিকের বোতল খুঁজতে বের হয়। ফেরে কখনও সন্ধ্যায়, কখনো রাতে।

দেরির কারণ জানতে চাইলে তারা বলেন, যারা বোতল কিনে নেয় তারা কতটা বোতল নেবে তা বলে দেয়। ওই বোতল কুড়াতে কুড়াতেই অনেক সময় লেগে যায়। কখনও রাত হয়, তারপরও টার্গেট পূরণ করতে পারে না। তখন মালিকপক্ষের কাছে কথা শুনতে হয়। তারা রাতদিন বোতল খুঁজে মালিকের কাছে জমা দিয়ে দুজনে মিলে একশ টাকার মতো আয় করে।

দুই ভাইয়ের স্বপ্ন একদিন রেস্টুরেন্ট খাবে। আর বড় বড় শপিংমলে ঘুরবে। চকচকে নতুন কাপড় কিনবে। তবে তাদের স্বপ্ন প্রতিদিন স্বপ্নেই থেকে যায়। কেননা, বাবা পঙ্গু, কামাই করতে পারে না। তার চিকিৎসার খরচ, ওষুধ বাবদ প্রতি মাসে ৪-৫ হাজার টাকা খরচ হয়। সেই খরচ জোগাতেই তাদের আয় শেষ হয়ে যায়।

অবশ্য কিছু কিছু স্বপ্ন তাদের প্রতিদিনই ধরা দেয়। তাদের মা মালিকের বাসার বেচে যাওয়া খাবার নিয়ে রাতে ফেরেন। সেসব খাবার অনেক সুস্বাদু। সবাই মিলে ভাগাভাগি করে সেই খাবার খায়। সকালে কখনও খাবার জোটে, কখনও আবার জোটে না। যেদিন খাবার কিছু থাকে না সেদিন না খেয়েই বের হয়ে যায় মনির আর রনি। কেউ দয়া করে কিছু খাবার দিলে তারা খেয়ে নেয়।

আরও পড়ুনঃ  মেগা প্রকল্পে রাস

রনি আর মনির বলে, খালি পেটে বেশিক্ষণ বোতল কুড়ানো যায় না। যখন খুবই  ক্ষুধা লাগে তখন স্টেশনে বসে বা শুয়ে থাকে। কোথাও সুযোগ পেলে পেট ভরে পানি খায়। অবশ্য সেদিন মালিকের দেয়া বোতল কুড়ানোর টার্গেট পূরণ হয় না। টাকাও বেশি পাওয়া যায় না।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন