বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উপকূলে দেশের সর্ববৃহৎ বায়ুবিদ্যুৎ

উপকূলে দেশের সর্ববৃহৎ বায়ুবিদ্যুৎ

২২ টারবাইনে উৎপাদন ৬০ মেগাওয়াট

  • ব্যয় হবে ৯০০ কোটি টাকা
  • চীন থেকে ৯০০ টন সরঞ্জাম

কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় বায়ুচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রাথমিক সফলতার পর এবার কক্সবাজারের খুরুশকুলে নির্মিত হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় ও সর্বাধুনিক বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র। কক্সবাজার অঞ্চলের বিদুতের চাহিদা মেটাতে ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন ২২টি টারবাইন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। ৯০০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন এই প্রকল্পের যন্ত্রপাতি আনা হচ্ছে চীন থেকে। গত ১৭ জুলাই প্রকল্পের উইন্ড টারবাইনের জন্য বিশালাকৃতির পাখাসহ সরঞ্জাম নিয়ে চীনের পতাকাবাহী একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙ্গর করেছে।
সূত্রমতে, দেশের মূল ভূ-খণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় সরকার মাত্র ১ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার একটি বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু করে ২০০৭ সালে। ওই সময় কুতুবদিয়ার আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের তাবলারচর গ্রামের বেড়িবাঁধের পাশে বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০টি টারবাইন দিয়ে ১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখার আগেই ২০১০ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

দীর্ঘদিন প্রায় পরিত্যক্ত থাকা বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটিকে ২০১৬ সালে নতুন করে চালু করার উদ্যোগ নেয়া হয়। এরই অংশ হিসেবে ২৩ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নতুন আঙ্গিকে ২০টি টারবাইন দিয়ে বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। এর মাধ্যমে ২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে স্থানীয়দের মাঝে সরবরাহ দেয়া হয়।

আরও পড়ুনঃ  তলানীতে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড

সূত্রমতে, কুতুবদিয়ায় বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রাথমিক সফলতার পর আরো বৃহৎ পরিসরে বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নেয় সরকার। বাতাস ব্যবহার করে ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে ন্যাশনাল গ্রিডে সরবরাহ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রকল্পের আওতায় কক্সবাজারের খুরুশকুলে ২২টি উইন্ড টারবাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। ৯০০ কোটি টাকার এই প্রকল্পটির যন্ত্রপাতি চীন থেকে আনা হচ্ছে। প্রকল্পটির বিশালাকৃতির পাখাসহ প্রায় ৯শ টন যন্ত্রপাতি নিয়ে জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে।

খুরুশকূলে ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন দেশের সবচেয়ে বড় বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্পটিতে ২২টি টারবাইন থাকবে। ৫০০ ফুট উঁচু উইন্ড টারবাইনের প্রত্যেকটিতে থাকবে ৩টি পাখা। পাখাগুলোর দৈর্ঘ্য ২০০ ফুটের বেশি। বাতাসের বেগে এগুলো ঘুরে টারবাইন ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। চলতি বছরের মধ্যেই এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে যেতে পারবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

চট্টগ্রাম বন্দর সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক জানান, কসকো শিপিং লাইনের শিন ডা জং নামের জাহাজ বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সরঞ্জাম নিয়ে বন্দরের জিসিবি-৬ জেটিতে বার্থিং নিয়েছে। জাহাজটিতে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় বড় বড় পাখাগুলো আনা হয়েছে।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন