শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উষ্ণ হাওয়ায় পুঁজিবাজার

উষ্ণ হাওয়ায় পুঁজিবাজার

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল বৃহস্পতিবার লেনদেন বেড়ে ৮শ কোটি টাকার ঘরে অবস্থান করেছে। অপরদিকে চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) এদিন লেনদেন বেড়েছে। এদিন দুই স্টকের বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর উত্থান হয়। উভয় স্টকে প্রধান সূচক উত্থান হয়।

রেগুলেটরদের বিভিন্ন উন্নয়ন পরও দীর্ঘ সময় পুঁজিবাজার পতনের কবলে। সেই পতন দিন দিন বাড়ছিলো। হঠাৎ করেই চলতি সপ্তাহের প্রথম দুই কার্যদিবস সেই পতন থমকে দাঁড়ালো। পরের কার্যদিবস পতন রুপে এসেছিল। সেখান থেকে ফের দুই কার্যদিবস উত্থান ফিরলো পুঁজিবাজার। বিক্রেতার চাপ কমেছে। বাড়ে ক্রেতার চাপ।

বিভিন্ন মহলের শত চেষ্টায় পুঁজিবাজার উত্থানে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা। গত বৃহস্পতিবার আগারগাওয়ে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে বলেন, সবাই ধৈর্য ধরুন,পুঁজিবাজার আগামী সপ্তাহে ভালো হবে।

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের এমন আশ্বাসের ঠিক পরের দুই কার্যদিবস সত্যিই ঘুরে দাঁড়ায় পুঁজিবাজার। সেই উত্থান গত মঙ্গলবার মন্দায় চলে আসে। কিন্তু সেখান থেকে ফের দুইদিন উত্থানে পুঁজিবাজার। ডিএসইতে এদিন সিমেন্ট খাতের শতভাগ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। ইঞ্জিনিয়ারিং, খাদ্য আনুষঙ্গিক এবং আইটি খাতের আশি ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। দর বৃদ্ধির একই চিত্র ছিল পুঁজিবাজার সিএসইতে।

পুঁজিবাজারে (ডিএসই ও সিএসই) এদিন বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর উত্থান হয়। এর মধ্যে ডিএসইর ৪৭ দশমিক ১০ শতাংশ এবং সিএসইর ৫২ দশমিক ১৬ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর উত্থান হয়। অপরদিকে, ডিএসইর ৩৯ দশমিক ২১ শতাংশ এবং সিএসইর ৩৩ দশমিক ৮৯ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর পতন হয়। কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর এই ধরনের বৃদ্ধি স্বাভাবিক হিসেবে দেখছেন বিনিয়োগকারীরা বলে জানায় পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা।

আরও পড়ুনঃ  বদ্ধঘরে শিশুর পৃথিবী

ডিএসইতে গতকাল লেনদেন হয়েছে ৮৭৫ কোটি ১০ লাখ টাকার শেয়ার। গত বুধবার লেনদেন হয়েছিল ৭৪৩ কোটি ১২ লাখ টাকার শেয়ার। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৮০টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ১৭৯টির, কমেছে ১৪৯টির এবং পরিবর্তন হয়নি ৫৫টির। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৮ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৪৫১ দশমিক ৫৩ পয়েন্টে। ডিএসইএস সূচক দশমিক ১৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪১৫ দশমিক ৭২ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই-৩০ সূচক দশমিক ১৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩৫৫ দশমিক ৬৮ পয়েন্টে।

ডিএসইতে বেক্সিমকোর শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। ডিএসইতে বেক্সিমকো ৫০ কোটি ২৫ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে এদিন আইপিডিসি ফাইন্যান্স ৩৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা, জেএমআই হসপিটাল ২৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা, ওরিয়ন ফার্মা ২৬ কোটি ১৩ লাখ টাকা, শিপইয়ার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ ২৩ কোটি ৭৩ লাখ টাকা, বাংলাদেশ শিপিং কপোরেশন ২২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা, বিডি কম ১৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, রিং সাইন ১৮ কোটি ৪১ লাখ টাকা, ফু-ওয়াং ফুড ১৮ কোটি ৪১ লাখ টাকা এবং জিএসপি ফাইন্যান্স ১৪ কোটি ৭০ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।

অপরদিকে চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) এদিন লেনদেন হয়েছে ২২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। গত বুধবার লেনদেন হয়েছিল ২২ কোটি ৫৯ লাখ টাকার শেয়ার। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩০১টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ১৫৭টির, কমেছে ১০২টির এবং পরিবর্তন হয়নি ৪২টির। এদিন সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৭০ দশমিক ১৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৮৯১ দশমিক ৭৩ পয়েন্টে।

আরও পড়ুনঃ  সংকট সমাধানে বহুপাক্ষিকতা

সিএসই-৩০ সূচক ৭৪ দশমিক ৯১ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স সূচক ৪২ পয়েন্ট এবং সিএসআই সূচক ৫ দশমিক শূন্য ৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১৩ হাজার ৬৯৮ দশমিক ১৫ পয়েন্টে, ১১ হাজার ৩২৯ দশমিক ৫২ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ২০২ দশমিক শূন্য ৮ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসই-৫০ সূচক দশমিক ৮৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৯৫ দশমিক ৯৯ পয়েন্টে।

সিএসইতে রিং সাইন শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। সিএসইতে রিং সাইন ২ কোটি ৬ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে জেএমআর হসপিটাল ১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা, সাইফ পাওয়ারটেক ১ কোটি ১৬ লাখ টাকা, প্রিমিয়ার সিমেন্ট ৯১ লাখ টাকা, ডেল্টা স্পিনিং ৬৯ লাখ টাকা, ড্রাগন সোয়েটার ৫৮ লাখ টাকা, বেক্সিমকো ৪৯ লাখ টাকা, পেনিনসূলা ৪৭ লাখ টাকা এবং শাইনপুকুর সিরামিকস ৪০ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন