শুক্রবার, ২৬শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রপ্তানির আগেই অর্ধেক পণ্য চুরি

রপ্তানির আগেই অর্ধেক পণ্য চুরি

ভয়াবহ সংঘবদ্ধ চক্রের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই

গার্মেন্টসে রপ্তানি পণ্য মাঝ পথ থেকে অর্ধেক গায়েব। বিষয়টি জানাজানিও হচ্ছে শিপমেন্ট হয়ে পণ্য বিদেশে চলে যাওয়ার পর। এতে একদিকে যেমন দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। তেমনি ভয়াবহ ক্ষতি হচ্ছে পোশাক শিল্পের। সম্প্রতি এমনই এক ভয়াবহ সংঘবদ্ধ চক্রের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নারায়ণগঞ্জ।

গতকাল রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার (পিবিআই) মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, গত বছরের ৫ মে ফতুল্লা বিসিক এলাকার ফেইম অ্যাপারেলস লি. তাদের তৈরি পোষাক শিপমেন্টের জন্য বিবি খাদিজা ট্রান্সপোর্ট ও ইম্পেরিয়াল ট্রান্সপোর্ট এর ৪টি কাভার্ডভ্যান ভাড়া করে তাদের বিভিন্ন চালানমূলে ১ লাখ ১৮ হাজার ৩২৯ পিস তৈরি পোষাক। যার মূল্য অনুমান ২ কোটি ৯০ লাখ ২৬ হাজার ৩৮৩ টাকা চট্টগ্রাম পোর্টে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ট্রান্সপোর্টের নিয়োজিত চালক ও হেলপারদের মাধ্যমে রাত সাড়ে ১১টায় প্রেরণ করে। পরদিন ৬ মে চট্টগ্রাম পোর্টের সিএন্ডএফ কর্তৃপক্ষ প্রেরিত মালামাল সমূহ রিসিভ করে। দেড় মাস পর ৯ জুলাই ফেইম অ্যাপারেলস লি. জানতে পারে প্রেরিত কাভার্ডভ্যানে শিপমেন্টকৃত তৈরি পোষাকের মধ্যে ৩০ হাজার ৫৪৩ পিস তৈরী পোষাক যার মূল্য, অনুমান ৭৪ লাখ ৯২ হাজার ২৭০ টাকা নেই বলে জার্মান বায়ার তাদেরকে অবহিত করে। পরবর্তীতে ফেইম অ্যাপারেলস লি. এর পক্ষে জহিরুল ইসলাম বাদি হয়ে ফতুল্লা থানায় মামলা দায়ের করেন। যা ফতুল্লা থানার এসআই আশিক ইমরান ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত মামলাটি তদন্ত করেন।

আরও পড়ুনঃ  ড. ওয়াজেদ অনুকরণীয় প্রাণের দৃষ্টান্ত: তথ্যমন্ত্রী

তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে পুলিশ হেড কোয়ার্টার থেকে মামলাটি পিবিআই, নারায়ণগঞ্জ জেলার উপর অর্পিত হয়। পিবিআই নারায়ণগঞ্জ জেলায় কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক আ. বাতেন মিয়া মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করেন। পরে তদন্তকারি কর্মকর্তা আ. বাতেন মিয়া ও সহযোগী এস.আই শাকিল হোসেন এবং এস.আই মো. মাজহারুল ইসলাম তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, ঢাকার মিরপুর, সাভারের বিরুলিয়া চট্টগামের সিতাকুন্ডু ও ফটিকছড়ি এলাকায় ৩১ মার্চ থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত ১১ দিন একাধিক অভিযান পরিচালনা করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সংঘবদ্ধ চোরাই চক্রের মূলহোতাসহ ৭ জনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, রায়হান, বিল্লাল, ফারুক, মোতালেব, কাউসার, পারভেজ ও সোহেল।

পিবিআই পুলিশ সুপার বলেন, মামলার তদন্তকালে গার্মেন্টস মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এভাবে রপ্তানির পণ্য চুরি হতে থাকলে দীর্ঘমেয়াদী ঝুঁকিতে পড়বে দেশের পোশাকশিল্প খাত। চোরাই চক্রের এসব কর্মকান্ডের ফলে বিদেশী বায়ারদের সঙ্গে সর্ম্পকের অবনতি ঘটছে দেশের গার্মেন্টস মালিকদের।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বিকেএমইএ’র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, প্রায় ৩০ থেকে ৪০ ভাগ মাল সরিয়ে ফেলে তারা। তবে আমাদের আপত্তির বিষয় হলো, এটাতে চুরির মামলা হয়। তবে এতে কি হয়, বছরের পর বছর মামলা চলতে থাকে। কিন্তু এতে দেশের ভাবমুর্তি নষ্ট হয়ে যায়।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন