শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কাটছে না পেট্রল-অকেটন সংকট

কাটছে না পেট্রল-অকেটন সংকট
  • ঠাকুরগাঁওয়ের ফিলিংস্টেশন অকটেনশূন্য

ঠাকুরগাঁওয়ে ফিলিং স্টেশন গুলোতে পাওয়া যাচ্ছে না পেট্রোল ও অকটেন। এ নিয়ে চরম ভোগান্তিতে সময় পার করছে মোটরসাইকেল চালকেরা। এক ফিলিং স্টেশন থেকে আরেক ফিলিং স্টেশনে গেলেও পাওয়া যাচ্ছেনা তেল।

গতকাল শনিবার বিকেল ৪ টায় জেলা শহরের ফিলিং স্টেশনগুলোতে গিয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের বাঁধন কাকন ফিলিং স্টেশন, চৌধুরী ফিলিং স্টেশন, মির্জা ফিলিং স্টেশন, রুপসী বাংলা ফিলিং স্টেশন, সুপ্রিয় ফিলিং স্টেশনের পেট্রোল ও অকটেন সরবরাহের ট্যাংকগুলো মোড়ানোর রয়েছে। উপরে লিখে দেওয়া হয়েছে পেট্রোল ও অকেটন শেষ। প্রায় ১৫-২০ দিন ধরে পেট্রোল পাওয়া যায়নি আর গতকাল থেকে পাওয়া যাচ্ছে না অকটেনও।

পেট্রোল ও অকটেন পাওয়ার জন্য চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন মোটরসাইকেল চালকেরা। অনেকে পেট্রোল না পেয়ে যেতে পারছেনা গন্তব্যে। মোটরসাইকেল সাথে নিয়ে পায়ে হেটে এক ফিলিং স্টেশন থেকে আরেক ফিলিং স্টেশন গেলেও পাওয়া যাচ্ছেনা প্রতিকার।

মোটরসাইকেল চালক রিপন আহমেদ বলেন, পাম্প মালিকদের দুর্নীতির কারণে আমাদের মোটরসাইকেল চালকের এ ভোগান্তি। আর অন্য কোনো কারণ থাকতে পারেনা। সরকার পেট্রোল আর ডিজেলে ভর্তুকি দেয়। তবে আমরা পেট্রোল আর অকটেন পাচ্ছিনা। আন্তর্জাতিক বাজারের যে তেলের দাম বেশি এ জন্য এরা সিন্ডিকেট করছে। আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। বিষয়টি যাতে করে খুব দ্রুত নিরসন করা হয়।

আরেক মোটরসাইকেল চালক রাকিব বলেন, পেট্রোল না পাওয়ার কারনে আমরা চরম দুর্ভোগে আছি। গতকাল থেকে আবার অকটেন পাওয়া যাচ্ছে না। ঈদের সময় আমরা যারা ছুটি নিয়ে বাসায় আসি আমাদের জন্য এটা অনেক কষ্টের। এবারে ঈদে মোটামুটি রকম ছুটি বেশী পাওয়া গেছে। আমরা আত্মীয় স্বজনদের বাড়ি যাওয়ার জন্য প্রস্তুতিও নিয়েছি। তবে শহরের কোথাও কোন পাম্পে পেট্রোল ও অকটেন পাওয়া যাচ্ছেনা। এটি কি আসলে পাম্প মালিকদের কোনো ধরনরে সিন্ডিকেট নাকি সরবরাহ নেই ডিপোতে এ বিষয়টি প্রশাসনের খতিয়ে দেখা দরকার বলে আমি মনে করছি। আর দ্রুত সময়ের মধ্যে বিষয়টি সমাধান করা দরকার।

আরও পড়ুনঃ  এবার ১৫ শতাংশ বাড়ল লাইটার জাহাজে ভাড়া

এনামুল ফিলিং স্টেশনের প্রধান নির্বাহী মারুফ হাসান বলেন, আমরা প্রায় পনের দিন ধরে পেট্রোল দিতে পারছিনা। দুইদিন ধরে অকটেন সরবরাহ নেই। আমরা ডিপোতে গাড়ি পাঠিয়েছি। তবে তারাও আমাদের সরবরাহ দিতে পারছেননা। তারা বলছেন ডিপোতেও নাকি তেল সরবরাহ নেই। এ জন্য মোটরসাইকেল চালকেরা বিপাকে পরেছেন। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি সমস্যা সমাধানে।

চৌধুরী ফিলিং স্টেশনের কর্মরত ম্যানেজার প্রফুল্ল বলেন, আমি পার্বতীপুর, বাঘাবাড়িসহ যে সকল ডিপো থেকে তেল নেই সব জায়গায় যোগাযোগ করেছি। তারা বলছেন তাদের কাছে নেই। প্রায় পাঁচ ছয়দিন থেকে আমরা কোনো ধরনের পেট্রোল পাইনি। তারা বলছে দেখছি আর চেষ্টা করছি।

এ নিয়ে পার্বতীপুর ডিপোর সাথে যোগাযোগ করা হলে সেখানকার ইনচার্জ ফারুক হোসেন বলেন, ডিপোতে তেল না থাকার কারনে তারা ফিলিং স্টেশনগুলোতে সরবরাহ দিতে পারছেননা। তবে তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ঠাকুরগাঁও পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এনামুল হক জানান, শহরের কোনো পেট্রোল পাম্পে পেট্রোল নেই। যে কয়েকটাতে ছিল সেগুলোও শেষ হয়ে গেছে। আমি বগুড়া, খুলনা ডিপোতে কথা বলেছি। তারা বলেছে তাদের কাছে আসলে তারা আমাদের পাঠাবে। আমরা যোগাযোগ অব্যহত রেখেছি। আশা করছি বিষয়টি নিরসন হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, পেট্রল সংকট নিয়ে আমি কথা বলেছি। আসলেই পেট্রোল সরবরাহ কম আছে। ডিপোগুলোতে একই অবস্থা। পার্বতীপুর ডিপোতে আমরা কথা বলেছি। সেখানেও সরবরাহ অনেক কম।  আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি স্বল্প সময়ের মধ্যে সমস্যাটি সমাধান হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন