শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লেনদেনে উতল হাওয়া

বেড়ে প্রায় ৯শ কোটি টাকা

  • ডিএসইতে ৮৯৫ কোটি, সিএসইতে ৪০
  • সূচক ডিএসইএক্স ২০ পয়েন্ট, সিএএসপিআই ৫২

মন্দায় পর কয়েক কার্যদিবস ধরে উত্থানে রয়েছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন। গতকাল রবিবার ডিএসইর লেনদেন বেড়ে ৯শ কোটি টাকার কাছাকাছিতে চলে এসেছে। এদিন বেড়েছে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর। বেড়েছে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স।

ডিএসই লেনদেন খরা থেকে বের হয়ে উত্থানে ফিরেছে। ধারবাহিক মন্দায় ভাসিয়ে নেওয়া বিনিয়োগকারীদের পুঁজি ফেরত আসা শুরু করেছে। সামনে আরো জোয়ার থাকলে, লোকসান বৃত্ত কমিয়ে আনতে পারবে অনেকে। জোয়েরের এমন পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি রক্ষায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) বিশেষ সতর্ক থাকার আহবান জানান পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা।

তারা বলেন, দেড় হাজার কোটি টাকার লেনদেন কিছুদিন আগে ৪শ কোটি টাকার নিচে নেমে এসেছিল। ওই সময় কমেছিল সব ধরনের সূচক। পতন হয়েছিল অধিকাংশ প্রতিষ্ঠার শেয়ার দর। পতনে পুঁজিবাজার তার স্বাভাবিক রূপ হারিয়েছিল। ঠিক এমন পরিস্থিতিতে গত কয়েক কার্যদিবস পুঁজিবাজার উত্থান। বেশ শান্তিতেই রয়েছে বিনয়োগকারীরা। এমন পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে আরো পেশা দ্বারিত্বের পরামর্শ দেন।

বেশ কয়েকদিন লেনদেন, সূচকসহ অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর উত্থান স্বাভাবিক হিসেবে নিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা জানিয়ে সংশ্লিষ্টরা বলেন, চলতি বছরের শুরুতে উত্থান ছিল পুঁজিবাজার। দিন বদলে উত্থান হারিয়ে পতনে চলে এসেছিল। সেই উত্থান ফের ফিরে এসেছে। এটা স্বাভাবিক বলেই মনে হচ্ছে।

পুঁজিবাজারে (ডিএসই ও সিএসই) এদিন ৫২ দশমিক ৩৬ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর উত্থান হয়েছে। এর মধ্যে ডিএসইর ৫২ দশমিক ৪৯ শতাংশ এবং সিএসইর ৫২ দশমিক ২৪ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর উত্থান হয়েছে। এদিন পুঁজিবাজারে ৩৭ দশমিক ৩২ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর পতন হয়েছে। এর মধ্যে ডিএসইর ৩৭ দশমিক ২৭ শতাংশ এবং সিএসইর ৩৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর পতন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর এই ধরনের বাড়া-কমা স্বাভাবিক হিসেবে দেখছেন বিনিয়োগকারীরা বলে জানায় পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা।

আরও পড়ুনঃ  শেয়ারবাজারে সূচকের ইতিবাচকতায় লেনদেন শেষ

এদিন ব্যাংক, সিরামিক, নন ব্যাংকিং আর্থিক, জ্বালানী শক্তি, বিমা, পাট, বিবিধ এবং টেলিকম খাতের কোম্পানির শেয়ার দর উত্থান হয়েছে। এর মধ্যে বিমা ৮১ শতাংশ, নন ব্যাংকিং আর্থিক খাতের ৭৮ শতাংশ, ব্যাংক খাতের ৭০ শতাংশ, পাট খাতের ৬৭ শতাংশ, টেলিকম খাতের ৬৭ শতাংশ, জ্বালানী শক্তি খাতের ৬৫ শতাংশ,সিরামিক খাতের ৬০ শতাংশ এবং বিবিধ খাতের ৫৪ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর উত্থান হয়েছে।
এদিন সিমেন্ট, খাদ্য আনুষঙ্গিক, ইঞ্জিনিয়ারিং, আইটি, পেপার, ওযুধ রসায়ন এবং সেবা আবাসন খাতের কোম্পানির শেয়ার দর পতন হয়েছে। এর মধ্যে আইটি খাতের ৮১ শতাংশ, সেবা আবাসন খাতের ৭৫ শতাংশ, পেপার খাতের ৬৭ শতাংশ, খাদ্য আনুষঙ্গিক খাতের ৬৫ শতাংশ, সিমেন্ট খাতের ৫৭ শতাংশ, ইঞ্জিনিয়ারিং খাতের ৪ শতাংশ এবং ওযুধ রসায়ন খাতের ৫৩ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর পতনন হয়েছে। অপরদিকে ফান্ড, বস্ত্র এবং ভ্রমন অবসর খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ার দরে উত্থান পতন ছিল ছন্দ। এর ধরনের শেয়ারের দর কমা-বাড়া স্বাভাবিক ভাবেই নিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।

ডিএসইতে রবিবার লেনদেন হয়েছে ৮৯৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবস বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছিল ৭৫৪ কোটি ৭ লাখ টাকার শেয়ার। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৮১টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ২০০টির, কমেছে ১৪২টির এবং পরিবর্তন হয়নি ৩৪টির। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২০ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৬৮৩ দশমিক ২৩ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই-৩০ সূচক ৮ দশমিক শূন্য ৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৪৮৬ দশমিক ১২ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসইএস সূচক ৩ দশমিক শূন্য ৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪৬১ দশমিক ৫৪ পয়েন্টে।

আরও পড়ুনঃ  ঊর্ধমুখী জ্বালানি তেলের দাম

অপর পুঁজিবাজার চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) এদিন লেনদেন হয়েছে ৪০ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবস বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছিল ৩২ কোটি ৪১ লাখ টাকার শেয়ার। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৮৯টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ১৫১টির, কমেছে ১০৮টির এবং পরিবর্তন হয়নি ৩০টির। এদিন সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৫২ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ৬৪৫ দশমিক ৯৭ পয়েন্টে। সিএসই-৫০ সূচক ৪ দশমিক ৯৩ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স সূচক ৩২ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট এবং সিএসআই সূচক ১ দশমিক শূন্য ১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৪৬৮ দশমিক ৯৪ পয়েন্টে, ১১ হাজার ৭৮৯ দশমিক ৩৩ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ২১৫ দশমিক ৬১ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসই-৩০ সূচক ৫৫ দশমিক ৯৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ১৯৩ দশমিক ৩১ পয়েন্টে।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন