শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরকারি সেবা মানুষের অধিকার

সসম্পাদকীয়

জেলা প্রশাসকদের সম্মেলন শুরু হয়েছে। এবারে ‘বাংলাদেশের জেলা প্রশাসন, মানুষের পাশে সর্বক্ষণ’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেছেন। ২৪ দফা নির্দেশনা নিয়ে তিনি কথা বলেছেন। এর মূল বিষয় ছিল জনগণের সেবা। কোনোভাবেই সেবাগ্রহীতাদের হয়রানী করা যাবে না বলেও তিনি বলেছেন। এলাকার উন্নয়ন কার্যক্রমে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় করে করার নির্দেশ দিয়েছেন।

এছাড়া যে ২৪টি নির্দেশনা এসেছে তাতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য নিরাপত্তা, নারী-শিশুদের উন্নয়ন, খেলাধুলা, শিল্প-সংস্কৃতির বিকাশ, ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষণ, মাদকমুক্ত বাংলাদেশ, নাগরিক সুবিধাদি, গরীব আসহায় মানুষের উন্নত জীবন ব্যবস্থা, অনগ্রসর মানুষের উন্নয়নে কাজ করা, পরিকল্পিত শহর, নগর গড়ে তোলা, মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে সম্মানজনক অবস্থানে নেয়া, গণকবরসহ যুদ্ধস্থান সংরক্ষণ, পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নেয়া, জেলাভিত্তিক সংস্কৃতি সংরক্ষণ ও প্রচারে ব্যবস্থা, কোভিড পরিস্থিতি মোকাবেলায় যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়। নির্দেশনার মূখ্য বিষয় ছিল সরকারি অফিসসমূহে সাধারণ মানুষের সেবা যথাযথ নিশ্চিত করা। নির্দেশনায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সেবা প্রত্যাশীদের সন্তুষ্টি অর্জনই হয় সরকারি কর্মচারীদের ব্রত। আর একটি বড় বিষয় নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ দেশের কাতারে পৌঁছাতে ব্রতী হতে হবে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনা শুধু নির্দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। মানুষের কল্যাণে আসতে হবে। প্রধানমন্ত্রী মনে প্রাণে যা চান তা বলেছেন। আর এসব চাওয়া তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন কিন্তু বাস্তবায়নের দায়িত্ব যাদের ওপর তাদের এ ব্যাপারে সচেষ্ট হতে হবে। সরকারি সেবা নিতে সাধারণ মানুষ হয়রানি, বঞ্চনার শিকার হন। প্রধানমন্ত্রী সে ব্যাপারেও লক্ষ্য রাখার কথা বলেছেন। এমন অভিযোগ আছে বলেই প্রধানমন্ত্রী কথাটি বলেছেন। সরকারি কর্মচারীদের দ্বারা মানুষ হয়রানি হওয়ার কথা নয়। কিন্তু হয়ে আসছে একথা সত্য। প্রধানমন্ত্রী যেসব নির্দেশনা দিয়েছেন তা প্রতিপালিত হলে দেশ অনেক এগয়ে যাবে৷ বর্তমান সরকার বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার যে প্রত্যয়ে এগিয়ে যাচ্ছে তা করা সম্ভব হবে। দেশের মানুষেরও ভাগ্য উন্নয়ন হবে। দেশ যতটা পিছিয়ে আছে তা কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে।

আরও পড়ুনঃ  রাষ্ট্রীয় পাটকল বেসরকারিকরণ শ্রমিক শোষণের নামান্তর

দেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তাঁর সুযোগ্য কন্যা সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন দেখতে চান। আর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তিনি তাঁর জীবনকে উৎসর্গ করেছেন মানুষের কল্যাণে। ১৯৮১ সালে বাংলাদেশে আসার পর তিনি আর ফিরে তাকান নি। দেশ এবং দেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। তিনি সরকারে না কি বিরোধিদলে তা কখনো চিন্তা করেন নি। মানুষের কল্যাণে কাজ করবেন এই ব্রত নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধুর সোনার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। এর ফলেই শত বাধা বিপত্তি, দুর্যোগ, মহামারী সত্ত্বেও পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এক্সপ্রেসওয়েসহ বৃহৎ বৃহৎ মেগাপ্রজেক্ট সম্পন্ন হচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের নানা বিপত্তি, বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র, সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার, প্রপাগাণ্ডা সত্ত্বেও কোনোকিছুই থেমে নেই। নিজ গতিতে সব কাজ এগিয়ে চলেছে। এই কাজগুলো আরও সহজতর করা সম্ভব যদি সাধারণ মানুষের ভোগান্তি আরও কমতো।

সরকারি অফিসে যথাযথ দায়িত্ব পালন করা হতো। সেই বিষয়গুলো উপলব্ধি করবার জন্যই প্রধানমন্ত্রী সেবা আরও সহজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন। সরকারি নানা কাজে গিয়ে সাধারণ মানুষ নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে একথা সত্য। যার ফলে সরকারের নানা ভালো কাজ সামান্য হয়রানি, ভোগান্তির জন্য ঢাকা পড়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। মানুষের ভোগান্তি, হয়রানি কমাতে হবে। জনগণের সেবক হিসেবে যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে হবে। সরকারি অফিসের সেবা নিয়ে সাধারণ মানুষের বিরূপ ধারণা পাল্টাতে কাজ করতে হবে। আমলাতান্ত্রিক মনোভাব পরিহার করতে হবে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন