শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নারী উদ্যোক্তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে

পরিসংখ্যান বুর‍্যোর তথ্য মতে, দেশের জনসংখ্যার অর্ধেকই নারী। অথচ কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ তেমন উল্লেখযোগ্য নয়। যার ফলে দেশের সার্বিক উন্নয়ন এগিয়ে যাচ্ছে না। দৈনিক আনন্দবাজারে প্রকাশিত খবরের প্রধান শিরোনাম `স্বপ্নের পথে নারী উদ্যোক্তারা'। শিরোনামটি চমকিত করে।

পরিসংখ্যান বুর‍্যোর তথ্য মতে, দেশের জনসংখ্যার অর্ধেকই নারী। অথচ কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ তেমন উল্লেখযোগ্য নয়। যার ফলে দেশের সার্বিক উন্নয়ন এগিয়ে যাচ্ছে না। দৈনিক আনন্দবাজারে প্রকাশিত খবরের প্রধান শিরোনাম `স্বপ্নের পথে নারী উদ্যোক্তারা’। শিরোনামটি চমকিত করে।

আবার পুরো খবরটি পড়লে ব্যথিত না হয়ে পারা যায় না। অথচ দেশের মানুষের অর্ধেকই নারী। এ অবস্থায় এ দেশকে এগুতে হলে সব মানুষকে নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। সমাজের একটা বড় অংশ কর্মহীন বা কাজ থেকে দূরে থাকলে শুধু অর্ধেক পুরুষ মানুষের কর্মে এই দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। সকল ক্ষেত্রেই আমাদের দেশের নারীরা পিছিয়ে আছে। যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। শুধু ব্যবসা, বাণিজ্য, শিল্প, কারখানায়ই নয়, অন্যান্য সবকিছুতেই নারীর অংশগ্রহণ নগণ্য, হতাশাজনক। আর উদ্যোক্তা হিসেবে তো পুরুষের হিসেবে নারী একেবারেই যৎসামান্য।

পরিসংখ্যান বুর‍্যোর তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে নারী উদ্যোক্তা ২ লাখ ৩ হাজার ১শ ৮৯ জন। সেখানে পুরুষ উদ্যোক্তা প্রায় দেড় কোটি। পরিসংখ্যানে দেখা যায় ২০০২-২০০৩ অর্থবছরে এই নারী উদ্যোক্তা ছিল মাত্র ২১ হাজার ৮শ ৬৭ জন। যা ২০১৯-২০ অর্থবছরে এসে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৩ হাজার ১শ ৮৯ জনে। অর্থাৎ দেড় দশকে নারী উদ্যোক্তা বৃদ্ধির হার ৮২৯ শতাংশ।তবে এই পরিসংখ্যানও আশাব্যঞ্জক নয়। নারীর অংশগ্রহণ ব্যতীত দেশের সার্বিক উন্নয়ন কি করে আশা করা যায়। যেখানে দেশের মানুষের অর্ধেকই নারী। সেই নারীদের পশ্চাতে রেখে সঠিক উন্নয়নের চিন্তা করাটা বাতুলতা। দেশকে উন্নয়নের মূল ধারায় নিয়ে যেতে হলে সব মানুষকে কর্মক্ষেত্রে রেখেই এগুতে হবে। না হলে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে। তার উপযুক্ত প্রমাণ দেশ গত দুই দশকে যতটা উন্নয়ন ঘটেছে তা এর আগে ঘটেনি।

আরও পড়ুনঃ  শেখ মনি : ত‌্যাগ আর দেশপ্রেমের এক অনন‌্য প্রতিকৃতি

একথা খুব পরিষ্কার যে, আওয়ামী লীগের সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার আগ পর্যন্ত নারী উন্নয়ন এবং কার্যক্ষেত্রে পুরুষের পাশাপাশি নারীর অংশগ্রহণের বিষয়টি সেভাবে ভাবা হয়নি। বিশেষ করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে পুরুষের পাশাপাশি নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছেন। ফলে সবক্ষেত্রে না হলেও অনেক ক্ষেত্রেই নারীর অংশগ্রহণ কিছুটা লক্ষ্যণীয়। সংবাদের নারী উদ্যোক্তাদের যে খবরটি সেদিকে তাকালেও এ ধরনের আভাসই পাওয়া যায়।

এই খবরে যেমন আমরা আশাবাদী হই, তেমনি সংবাদটিতে নিরাশার সুরও আছে। এই দেড় দশকে হাতে গোনা কয়েকটি ক্ষেত্রে নারী উদ্যোক্তা বেড়েছে ঠিকই কিন্তু মূল ধারার শিল্পে বা ব্যবসায় নারী উদ্যোক্তা তেমন বাড়েনি। যা হতাশাব্যঞ্জক। আমাদের আশাহত করে। মূল ধারার শিল্পে, ব্যবসায়, বিনিয়োগে নারী উদ্যোক্তা বাড়তে হবে। অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। তাদের মেধা বিনিয়োগ হতে হবে। তবেই দেশের অর্থনীতি, দেশের উন্নয়ন সচল হবে। প্রকাশিত খবরে নারী উদ্যোক্তা এগিয়ে না আসার কতগুলো খারাপ দিক তুলে ধরা হয়েছে। যেগুলোর প্রতি সরকারের নীতিনির্ধারকদের যথাযথ নজর দিতে হবে।

দেশের প্রকৃত উন্নয়ন চাইলে পুরুষের পাশাপাশি নারীদের অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। আর এই নিশ্চিতের অন্তরায় এবং বাধাগুলো দূর করতে পদক্ষেপ নিতে হবে। সঠিক এবং সমম্বিত পরিকল্পনা করে এগিয়ে যেতে হবে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন