সংশ্লিষ্টদের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন
চালে ঘাটতি নেই অথচ ঘাটতি দেখানো হয় তথ্যে। এই খবরটি আজ প্রধান শিরোনাম হিসেবে বেরিয়েছে দৈনিক আনন্দবাজারে। খবরটি নিঃসন্দেহে আমাদের আশান্বিত করেছে। খবরে আরও জানা গেছে, দেশে খাদ্য চাহিদার চেয়ে উৎপাদন ৩৪ লাখ টন বেশি।
যে দেশের মানুষ একসময় খাদ্যের অভাবে অখাদ্য-কুখাদ্য খেয়েছে, সেই দেশে এখন চালের চাহিদা পূরণ করে উদ্বৃত্ত হচ্ছে। যা দেশবাসীর জন্য শুধু আনন্দ সংবাদ নয়, গর্বে বুক ভরে যাওয়ার মতো। তবে এরমধ্যে খারাপ সংবাদও নানা প্রশ্নের জন্ম দেয়। দেশের ৩৪ লাখ টন চাল উদ্বৃত্ত সত্ত্বেও ৩৯ লাখ টন চাল কেন আমদানি করা হচ্ছে? এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তদের সহজ উত্তর আসাটা অস্বাভাবিক নয়। তবে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশ্ন আসতেই পারে, চাল উদ্বৃত্ত সত্ত্বেও আমদানি কেন করা হচ্ছে? শুধু এই প্রশ্নই নয়, দেশে এতো চাল উৎপাদন হওয়া সত্ত্বেও দাম এত কেন?
দৈনিক আনন্দবাজারের আরেক সংবাদে দেখা গেছে, উত্তরাঞ্চলে ৫০ টাকার নিচে কোনো চালই ক্রেতারা পাচ্ছে না। যা ভাববার বিষয়। সাধারণ খেটে খাওয়া, দিনমজুর মানুষের বাঁচার উপায় কী? চালের দাম এত বেশি হওয়ায় দিন এনে দিন খাওয়া মানুষ মানবেতর জীবন কাটায়। তাদের ভাগ্যে ওএমএসের চাল জুটলে খাবার খায়, নইলে অনাহারে দিন কাটে। যা থেকে পরিত্রাণ প্রয়োজন। এ অবস্থার উন্নতি না হলে, মানুষ অনাহারী থাকলে দেশে চালের উৎপাদন যে উদ্বৃত্ত তা ঢাকা পড়ে যায়। ফলে কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। বিশেষ করে চালের বাজার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসার পদক্ষেপ নিতে হবে। ওএমএসের চাল আর আমদানির চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
দেশে যে চাল উৎপাদন হচ্ছে সেই চাল যথাযথ কাজে লাগানোর উদ্যোগ সঠিকভাবে নিতে হবে। দেশের মানুষের খাদ্যের অভাব পূরণে যে ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি সেই পদক্ষেপই নিতে হবে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ায় সরকারের যে গৌরব তা সামান্য ভুলের কারণে যেন বিবর্ণ না হয় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মহলকে তৎপর হতে হবে। চাল উৎপাদনের হিসাব শুধু কাগজে কলমে থাকলেই চলবে না, এ হিসাবকে কাজে লাগাতে হবে। তবেই চাল উৎপাদনে ও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে বর্তমান সরকারের যে কৃতিত্ব তা ঘরে তোলা সম্ভব হবে।