শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাজারে মূল্যস্ফীতির নিঃশ্বাস

বাজারে

কোরবানির আগে কেনাবেচা কমেছে শপিংমলে

  • বন্যায় কৃষির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির প্রভাব বাজারে

সদ্যই মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হয়েছে। এবার মুদ্রানীতিতে মুদ্রাস্ফীতিকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। তবে রাজধানীর বাজারগুলোতে নিত্যপণ্যের দামে স্বস্তি নেই ক্রেতাদের। বাজারে যেসব পণ্যের দাম কমার কথা তা কমেনি। বরং অনেক পণ্যের দাম বেড়েছে। বিশেষ করে বন্যাদুর্গত এলাকায় কৃষিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির প্রভাব খানিকটা পড়েছে বাজারে।

সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। একই সঙ্গে কমেছে গাজর ও পেঁপের দাম। তবে আলুসহ বেশিরভাগ সবজি আগের দামে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মুরগি ও গরুর মাংস আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। দাম অপরিবর্তিত রয়েছে মাছেরও।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের কেজি বিক্রি করছেন ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। অবশ্য দুই সপ্তাহ আগে পেঁয়াজের কেজি ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। এ হিসাবে সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে পেঁয়াজের দাম পাঁচ টাকা কমলেও দুই সপ্তাহ আগের তুলনায় ১০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমলেও আগের মতো বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে আলু। গত সপ্তাহে হুট করে দাম বেড়ে প্রতিকেজি আলু বিক্রি হয় ৩০ টাকা, এখনো ওই দামেই বিক্রি হচ্ছে। কিছুদিন আগে আলুর কেজি ছিল ২০ টাকা।

সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা গত সপ্তাহের মতো সব থেকে বেশি দামে বিক্রি করছেন গাজর। এক কেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে গাজরের দাম কেজিতে ৫০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। তবে পাকা টমেটোর কেজি আগের মত ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। নতুন আসা কাঁকরোলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। কাঁচা পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা পেঁপের দাম কেজিতে ১০ টাকা কমেছে।

আরও পড়ুনঃ  লাকসামে জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস পালন

এছাড়া পটল, ঢেঁড়স, ঝিঙে, চিচিঙ্গার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে। কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এ সবজিগুলোর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

বাড়তি দামেই মুরগি

রাজধানীর বাজারগুলোতে গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে মুরগি। আর মুরগির ডিম (লাল) প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। কোথাও আবার তার ১২৫ টাকা নেওয়া হচ্ছে। দেশি মুরগির ডিম ১৯০ থেকে ২০০ টাকা ডজনে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের দামেই ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজি দরে। সেই সঙ্গে লেয়ার মুরগি ২৭০ টাকা, পাকিস্তানি, সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়। মুরগির মতো গরুর মাংসের দামও অপরিবর্তি। গরুর মাংসের কেজি ৬৮০ টাকা ও খাসির মাংস ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অলস সময় কাটাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা

আর মাত্র কয়েকদিন পরই পালিত হবে মুসলমানদের দ্বিতীয় বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ। দুয়ারে ঈদ কড়া নাড়লেও পোশাকের মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের তেমন আনাগোনা নেই। এমনকি দিনের বেশিরভাগ সময় ক্রেতাদের দেখাই পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। ফলে তাদের অলস সময় পার করতে হচ্ছে।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকার অধিকাংশ মার্কেটে ক্রেতাদের তেমন আনাগোনা নেই। ক্রেতা না থাকায় পোশাক ব্যবসায়ী ও কর্মীদের কেউ কেউ গল্প করে সময় পার করছেন। আবার কেউ কেউ মোবাইলে গেম খেলে কিংবা গান শুনে সময় পার করছেন।

আরও পড়ুনঃ  গারো পাহাড়ে ফের মৃত বন্যহাতি উদ্ধার

ব্যবসায়ীরা জানান, গত রোজার ঈদে পোশাকের ভালো বেচা-কেনা হয়েছে। কোরবানীর ঈদকেন্দ্রিক ভালো ব্যবসা হবে না, এমন ধারণা আগেই ছিলো। সে কারণে এবার ব্যবসায়ীরা ঈদকেন্দ্রিক বিনিয়োগ কম করেছেন। তবে যেটুকু প্রত্যাশা ছিলো, সেরকম ক্রেতাও পাওয়া যাচ্ছে না। তারা বলছেন, সবসময় কোরবানির ঈদে সবার নজর থাকে পশুর হাটের দিকে। এ সময় নতুন পোশাক কম বিক্রি হয়।

তবে অভিজাত মার্কেট বসুন্ধরা শপিং মলে ক্রেতাদের কিছু আনাগোনা দেখা গেছে। তবে নিয়ে এখানের ব্যবসায়ীরাও সন্তুষ্ট না। তাদের দাবি, রোজার ঈদে যেমন ক্রেতা ছিলো, এখন তার পাঁচ ভাগের এক ভাগও নেই।

সংবাদটি শেয়ার করুন