শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চাকরি ছেড়ে সফল উদ্যোক্তা

চাকরি ছেড়ে সফল উদ্যোক্তা

অবসর প্রাপ্ত সেনা সদস্য মাহফিজুর রহমান। তিনি সাপাহার উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে। ১৯৯৭ সালে যোগদেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে। কঙ্গোতে সেনা সদস্য হিসেবে দয়িত্ব পালন করেন দেড় বছর। পরে ২০১৭ সালের জুলাই মাসে স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে দেন। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন একজন সফল উদ্যোক্তা। গড়ে তোলেন মাহফুজ মন্ডল এগ্রোফার্ম।

রবিবার সরেজমিনে সমন্বিত কৃষি খামারে গিয়ে জানা যায়, কি নেই মাহফুজ মন্ডল এগ্রো ফার্মে। চারিদেকে সবুজের সমারোহ। শুধু কি আম-বরই! পুঁইশাক, ঢেঁড়শ, স্কোয়াশ, মিষ্টিকুমড়া, শশাসহ বিভিন্ন সবজির গাছে ছেয়ে গেছে। যেন পা ফেলবার জায়গা নেই। নিজস্ব গভীর নলকূপ থাকায় পানি সংকট নেই। যার কারণে সব ধরণের ফসল হয়ে থাকে এ কৃষি খামারে। পাশাপাশি তিনি নিজেই মাল্টা, বরই, আম ইত্যদির গ্র্যাফটিং করে থাকেন। এছাড়াও সৌদি খেজুরের বীজ সংগ্রহ করে চারা উৎপাদন করে নিজেই বাগান তৈরি করেন বলে জানান মাহফিজুর।

এ বিষয়ে মাহফিজুর রহমান বলেন, সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেবার পরে আমি দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে থাকি। দেখতে থাকি উদ্যোক্তাদের নানাবিধ কর্ম। তাদের দেখে উৎসাহিত হয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে নিজের কিছু জমি ও কিছু লিজ নিয়ে শুরু করি আম বাগান। প্রথম পর্যায়ে ১৪ বিঘা জমিতে আম গাছ রোপন করি। পরে বিভিন্ন অভিজ্ঞজনদের সঙ্গে পরামর্শ করে আম বাগানের মধ্যেই বিভিন্ন ফসল চাষ আরম্ভ করি। যাতে গড়ে ওঠে সমন্বিত একটি বাগান। এতে করে আরো দ্বিগুণ লাভজন হয়ে ওঠে আমার প্রকল্প। পরবর্তী সময়ে আরো বেশ কিছু জমি লিজ নিয়ে দেশি-বিদেশি নানা ধরণের ফলজ এবং শাক-সবজি রোপন করি। বর্তমানে আমার ২৭  বিঘা জমির প্রজেক্ট।

আরও পড়ুনঃ  নীলফামারীতে খাবারের দাবীতে সড়ক অবরোধ

তিনি আরো বলেন, আমার সমন্বিত বাগানে রয়েছে আম, মাল্টা, বরই, মাল্টা, কমলা, লেবু, না প্রকার শাক সবজি, সৌদি খেজুর, স্কোয়াশ, ওটিসি-৩ বা বারোমাসি সজনে, বার্লি, জামরুল ইত্য্যাদি। এছাড়াও দেশি আমের পাশাপাশি আমার বাগানে বিদেশী জাতেরও আম রয়েছে। যেমন, আম্রপালি, বারি-৪, কিউজাই, পালমা, ব্যানানা, মিয়াজাকি জাতের আম আমার সমন্বিত বাগানে রয়েছে।

কৃষিখাতেই কেনো তিনি ঝুঁকলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি মূলতঃ কৃষকের সন্তান। সেজন্য যতই বাইরে থাকি বা চাকরি করি কৃষি আমাদের টানে। এজন্য অনেক উদ্যেক্তার সঙ্গে পরামর্শ করে আমি এ ধরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।

শুরুর দিকে লভ্যাংশ কম হলেও বর্তমানে প্রতি বছরে মাহফুজ মন্ডল এগ্রোফার্ম হতে প্রায় কোটি টাকার বাণিজ্য হয়ে থাকে। বর্তমানে আমের মৌসুম হওয়ায় বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন মাহফিজুর রহমান। তার ফার্মে কর্মসংস্থান হয়েছে ১০ থেকে ১২ জন বেকার যুবকের। এছাড়াও মৌসুম অনুযায়ী প্রায় ৩০ থেকে ৪০জন লোকের কর্ম সংস্থান হয়ে থাকে এ ফার্মে।

মাহফিজুর রহমান জানান, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে সঠিক তদারকি ও পরামর্শ প্রদান করা হলে আরও উপকৃত হতে পারতাম। কৃষি অফিসের কোনো অফিসার আমার বাগানে আসেনা বললেই চলে। তবে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, আমাদের অফিস থেকে সকল ধরণের সহায়তা অব্যহত রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন