শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
হবিগঞ্জে পানিবন্দি লাখো মানুষ-

পানিতে ভাসছে ২৫০ গ্রাম

পানিতে ভাসছে ২৫০ গ্রাম

সিলেট ও সুনামগঞ্জের পর এবার বন্যায় কবলিত হয়েছে হবিগঞ্জ। গত কয়েকদিনের টানাবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে পাহাড়ি ঢলে জেলার ৪ উপজেলার অন্তত্ব ২শ ৫০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তাছাড়া একদিকে সিলেট ও সুনাগঞ্জের বন্যার পানি কালনি-কুশিয়ারা দিয়ে ঢুকছে হবিগঞ্জে। অন্যদিকে মেঘনা নদীর পানি বেড়ে প্রবেশ করছে উজানে। এতে উজান-ভাটি দু’দিক থেকেই হবিগঞ্জে ঢুকছে পানি। যে কারনে তীব্র আকার ধারণ করছে বন্যা পরিস্থিতি। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন আড়াই’শ গ্রামের কয়েক লাখ মানুষ। তবে এ পর্যন্ত ৯৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রবেশ করেছেন ৭ হাজার মানুষ। অনেক কেন্দ্রে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। পাশা পাশি টিউবওয়েল টয়লেট না থাকায় চরম দূর্ভোগ ও অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন বানবাসীরা।

যদিও জেলা প্রশাসক বলছেন, ‘বানবাসীদের পাশে রয়েছে পুলিশ-প্রশাসন। বানবাসীদের উদ্ধারে প্রশাসনের ব্যাপক তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। বন্যাদূর্গতদের জন্য সরকারী ভাবে ৭শ ৬৩ টন চাল, ২০ লাখ ২৭ হাজার ৫শ টাকা ও ২ হাজার শুকনো খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তবে এ পর্যন্ত বন্যার্তদের মধ্যে সাড়ে ১৫ টন চাল ও ৫ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। পর্যায়ে ক্রমে বানবাসিদের মধ্যে বরাদ্দকৃত এসব চাল ও টাকা বিতরণ করা হবে’।

এদিকে, খোয়াই নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রভাবিহত হচ্ছে। নদীর বাল্লা পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১২৭ সেন্টিমিটার ও শহরের মাছুলিয়া পয়েন্টে ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে শহর রক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে রয়েছে। বন্যা পরিস্থিতিতে পানি বাড়তে থাকলে পুরো জেলা তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

জানা যায়, গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বাড়তে থাকে জেলার বিভিন্ন নদ-নদীর পানি। এক পর্যায়ে কালনি-কুশিয়ারা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করে। শনিবার কুশিয়ারা নদীর বাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। এতে আজমিরীগঞ্জ ও নবীগঞ্জ উপজেলার বেশ কিছু নিম্নাঞ্চল এলাকা প্লাবিত হয়। রোববার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়। ফলে কুশিয়ারা নদীর বিভিন্ন অংশ ভেঙ্গে পড়ে। যে কারণে প্লাবিত হয় নতুন নতুন এলাকা। বিকেলে সিলেট ও সুনামগঞ্জের পানি কুশিয়ারা দিয়ে হবিগঞ্জে ঢুকে পড়ে। এতে জেলার আজমিরীগঞ্জ, নবীগঞ্জ, বানিয়াচং ও লাখাই উপজেলার ২২টি ইউনিয়নরে অন্তÍত্ব আড়াই’শ গ্রাম পানিবন্দি হয়ে পড়ে। জেলায় ৯৩টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এরই মধ্যে প্রায় ৭ হাজার মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদেরকে দেয়া হচ্ছে শুকনো খাবার ও পানি। তবে অনেক কেন্দ্রে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। টিউবওয়েল ও টয়লেট না থাকায় চরম দূর্ভোগে পড়েছেন কেন্দ্রে থাকা বানবাসীরা। তাছাড়া বন্যার পানিতে তলিয়ে যায় জেলার ১৫ হাজার হেক্টও জমি। এতে আমন ও আউশ ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
সোমবার সকাল থেকে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যার পানি কুশিয়ারা নদী দিয়ে হবিগঞ্জে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বদলপুর ও পৌর এলাকা দিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। অন্যদিকে, মেঘনা নদীর পানি উজান বয়ে আজমিরীগঞ্জের কাকাইলছেও এবং লাখাই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে প্রবেশ করছে। যে কারনে তীব্র আকার ধারণ করছে বন্যা পরিস্থিতি।

আরও পড়ুনঃ  দুর্যোগ মাথায় রেখে অবকাঠামো নির্মাণ

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (অতিরক্তি) মিনহাজ আহমেদ শোভন দৈনিক আনন্দবাজারকে বলেন, ‘প্রতি ঘন্টায় ১০ সেন্টিমিটার করে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। খোয়াই নদীর বাল্লা পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১শ ২৭ সেন্টিমিটার ও শহরের মাছুলিয়া পয়েন্টে ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে শহর রক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে রয়েছে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে শহরবাসীকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। খোয়াই নদীর বাধ সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। তবে পানি এভাবে বৃদ্ধি বাঁধ উপচে শহরে পানি প্রবেশ করার সম্ভাবনা রয়েছে’।

জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান বলেন, ‘উদ্ধার তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। অনেকে গবাদি পশু রেখে আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে চাচ্ছে না। স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে তাদেরকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে। ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ত্রাণ সহায়তা প্রদান করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে’।

খোয়াই নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত:
হবিগঞ্জে খোয়াই নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রভাবিহত হচ্ছে। এতে হুমকির মুখে রয়েছে শহর রক্ষা বাঁধ। এ বিষয়ে বন্যাসহ যে কোন পরিস্থিতি মোকাবিলায় শহরবাসীকে সতর্ক থাকতে মাইকিং করছে জেলা প্রশাসন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (অতিরিক্তি) মিনহাজ আহমেদ শোভন জানান, খোয়াই নদীর বাল্লা পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১২৭ সেন্টিমিটার ও শহরের মাছুলিয়া পয়েন্টে ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে শহর রক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে রয়েছে। তাই শহরবাসীকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

অতিরিক্ত বাস ভাড়া নেয়া ৮ জনকে চাকরিচ্যুত:
সিলেট ও সুনামগঞ্জ থেকে আসা বন্যার্তদের কাছ থেকে অতিরিক্ত বাস ভাড়া নেয়ার অভিযোগে হবিগঞ্জে ৪টি বাসের চালক ও কন্ট্রাক্টরসহ মোট ৮ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন হবিগঞ্জ মোটর মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক শঙ্খ শুভ্র রায়।
তিনি জানান, বন্যার্তদের কাছ থেকে অতিরিক্ত বাস ভাড়া নেয়া হচ্ছে এমন সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে হবিগঞ্জ মোটর মালিক গ্রুপ। পরে এ বিষয়ে প্রমান পাওয়ায় ৮ জনকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এছাড়াও অভিযুক্ত ৯টি গাড়ির আরো ১৮ জন শ্রমিকের বিরুদ্ধে একই অভিযোগে তদন্ত চলছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদেরকে চাকুরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হবে। পরবর্তীতে সমিতির পক্ষ থেকে আর কোনো সিদ্ধান্ত আসার আগ পর্যন্ত অব্যাহতি প্রাপ্ত শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে পারবেন না। আর যেন কোনো যাত্রী হয়রানির শিকার না হন সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা হবে।

আরও পড়ুনঃ  সিলেট-সুনামগঞ্জে সেনা মোতায়েন

বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে ১৫ হাজার হেক্টর জমি:
বন্যায় কবলিত হয়ে হবিগঞ্জে ১৩ হাজার হেক্টর বোনা আমন ও ২ হাজার হেক্টর আউশ ধানের জমি তলিয়ে গেছে। এতে চরম ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন কৃষক। তাছাড়া বন্যায় কবলিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৪শ হেক্টর সবজি ক্ষেত। বৃষ্টি ও বন্যায় হবিগঞ্জ জেলার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রধান নদীগুলোর পানি ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি থাকলে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
হবিগঞ্জ জেলা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক আশেক পারভেজ জানান, বৃষ্টি ও বন্যায় জেলার ১৩ হাজার হেক্টর বোনা আমন ও ২ হাজার হেক্টর আউশ ধানের জমি তলিয়ে গেছে। এতে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন্যায় কবলিত হয়ে ৪শ হেক্টর সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়েছে।

বন্যার্তদের জন্য ৭শ ৬৩ টন চাল বরাদ্দ:
হবিগঞ্জে বন্যাদূর্গতদের জন্য সরকারী ভাবে ৭শ ৬৩ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তাছাড়া বরাদ্দের তালিকায় রয়েছে আরো ২০ লাখ ২৭ হাজার ৫শ টাকা ও ২ হাজার শুকনো খাবারের প্যাকেট। তবে এ পর্যন্ত বন্যার্তদের মধ্যে সাড়ে ১৫ টন চাল ও ৫ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। পর্যায়ে ক্রমে বানবাসিদের মধ্যে বরাদ্দকৃত এসব চাল ও টাকা বিতরণ করা হবে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গনমাধ্যমকে দেয়া এ তথ্য নিশ্চিত হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী জেলার ৪টি উপজেলার ২২টি ইউনিয়ন বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়েছেন ৪ হাজার ৫শ ৮১টি পরিবার। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন প্রায় ১৮ হাজার ৪শ ১০ জন। তাদের জন্য সরকার থেকে এ পর্যন্ত ৭শ ৬৩ টন চাল, ২০ লাখ ২৭ হাজার ৫শ টাকা ও ২ হাজার শুকনো খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত বন্যাদূর্গতদের মধ্যে সাড়ে ১৫ টন চাল ও ৫ লাখ টাকা বিতরণ হয়েছে। বরাদ্দকৃত অবশিষ্ট চাল ও টাকা পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হবে বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুনঃ  আজ বন্ধ থাকবে রাজধানীর যেসব এলাকা

জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহানের পরিদর্শন:
বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান। তিনি নবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা বন্যাদুর্গতদের সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন। পরিদর্শনকালে তিনি ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ত্রাণ সহায়তা প্রদান করেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিন্টু চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মহি উদ্দিন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) উত্তম কুমার দাশসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ।

সতর্ক থাকার অহবান জানিয়েছেন এমপি আবু জাহির :
শহরের বিভিন্ন এলাকায় খোয়াই নদীর ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ পরিদর্শন করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির এমপি। মাছুলিয়া এলাকায় বাঁধ পরিদর্শন শেষে তিনি উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন। এ সময় এমপি আবু জাহির বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের পক্ষ থেকে প্রশাসন নানা প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। জনপ্রতিনিধি এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও সবসময় মানুষের পাশে থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিলেট অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি দেখে যাবেন। এরপর সরকারি সহায়তা আরও বাড়বে ইনশাল্লাহ। তিনি বলেন, আসুন সকলে মিলে সতর্ক থাকি ও নদীর বাঁধের কোথাও ফাঁটল দেখা দিলে দায়িত্বরতদের জানাই এবং নিজেরা কাজ করি। দুস্কৃতিকারীরা যেন গুজব ছড়াতে না পারে সে ব্যাপারেও চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। এ সময় এমপি আবু জাহির বাঁধ রক্ষার জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করতে উপস্থিত পানি পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোঃ আলমগীর চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আতাউর রহমান সেলিম, পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহ নেওয়াজ তালুকদারসহ সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি এবং আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে এমপি আবু জাহির সদর উপজেলার রিচি উচ্চ বিদ্যালয়ে বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রের বাসিন্দাদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করেন।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন