বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
জনশুমারি-গৃহগণনার উদ্বোধন--

সব বাহিনীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

সব বাহিনীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

সপ্তাহব্যাপী ষষ্ঠ জনশুমারি ও গৃহগণনার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জনশুমারি ত্রুটিমুক্ত ও সফল করতে দেশে এই প্রথমবারের মতো গণনা ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরিচালিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব মো. আশরাফ সিদ্দিকী বিটু জানান, গতকাল বুধবার সকালে গণভবনে এক অনুষ্ঠানে বহুল প্রতীক্ষিত জনশুমারির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। জনশুমারির জন্য মাঠ-পর্যায়ে ১৫-২১ জুনের মধ্যে তথ্য সংগ্রহ করা হবে, যা ‘শুমারি সপ্তাহ’ হিসেবে বিবেচিত হবে।

প্রায় ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৬৯৭ জন গণনাকারী, ৬৩ হাজার ৫৪৮ জন সুপারভাইজার, ৩ হাজার ৭৭৯ জন আইটি সুপারভাইজার, ৩ হাজার ৭৭৯ জন জোনাল অফিসার, ১৬৩ জন জেলা জনশুমারি সমন্বয়কারী এবং প্রায় ১২ জন বিভাগীয় জনশুমারি সমন্বয়কারী বিভিন্ন স্তরে শুমারি কার্যক্রমে সক্রিয় থাকবেন। বিবিএস সদর দফতরে ইতোমধ্যেই একটি অত্যাধুনিক কল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে, যেখান থেকে যে কেউ ০৯৬০২৯৯৮৮৭৭ নন্বরে ফোন করে আদমশুমারি সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য পেতে পারবেন।

এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বিরোধিতাকারীরা যাতে কোন রকম ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালাতে না পারে সে জন্য সশস্ত্র বাহিনীসহ সকল বাহিনীকে সজাগ থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের মত এত বড় একটা চ্যালেঞ্জ নিয়ে সেতু নির্মাণের কাজ আমরা সম্পন্ন করেছি। তবে যারা সেতু নির্মাণের বিরোধিতা করেছিল তাদের একটা উদ্দেশ্য রয়েছে। যার কিছু কিছু তথ্যও আমরা পেয়েছি। আমরা জানতে পেরেছি, এমন একটা ঘটনা ঘটানো হবে যাতে ২৫ তারিখে আমরা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করতে না পারি। বিরোধিতাকারীরা কী করবে তা কিন্তু আমরা জানি না।

আরও পড়ুনঃ  পদ্মা সেতুর টোল আদায় করবে কোরিয়ার কেইসি

তিনি সকালে তাঁর কার্যালয়ের (পিএমও) শাপলা হলে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ)-এর ৩৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে এ সব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে উপস্থিত তিন বাহিনী প্রধান, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি এবং আনসার ও ভিডিপি’র প্রধানদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আমাদের সবাইকে কিন্তু সতর্ক থাকতে হবে। সমস্ত বিষয়টাই একটু রহস্যজনক। এ জন্য সবাইকে বলবো একটু সতর্ক থাকতে হবে এবং আমাদের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার দিকেও সবাইকে নজর দিতে হবে। সেগুলোর নিরাপত্তা দিতে হবে।

সরকারপ্রধান বলেন, ভুয়া দুর্নীতির অভিযোগ তুলে এ দেশের ব্যক্তি বিশেষের প্ররোচনায় বিশ্ব ব্যাংক পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থায়ন বন্ধ করে দিলে তাঁর সরকার ঘোষণা দিয়েছিল নিজেদের অর্থায়নে করবে, না হলে করবে না। তাঁর সরকার সেই পদ্মা সেতু নিজেদের অর্থে নির্মাণ করেছে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আপনারা দেখেছেন রেলে আগুন, লঞ্চে আগুন. ফেরীতে আগুন এমনকি সীতাকুন্ডে যে আগুনটা সেটা একটা জায়গা থেকে লাগতে পারে, কিন্তু বিক্ষিপ্তভাবে কয়েকটা জায়গায় আগুন লাগে কীভাবে। আর রেলের আগুনের বিষয়ে একটি ভিডিও পাওয়া গিয়েছে যেখানে দেখা গেছে রেলের চাকার নিকটে আগুন জ্বলছে, সেটা কী করে সম্ভব সে প্রশ্নও তোলেন তিনি।

এসএসএফ’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) মো. মজিবুর রহমান স্বাগত বক্তব্য রাখেন। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের আরো সতর্ক থাকতে হবে এবং মনে রাখতে হবে আমরা যখন এগিয়ে যাই তখনই এ ধরনের ঘটনা কোন কোন মহল ঘটনানোর চেষ্টা করে থাকে। এটাই আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যের বিষয়। সে জন্য সবাইকে আমি সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।

আরও পড়ুনঃ  বাংলাদেশ সফর বাতিল করল নরেন্দ্র মোদি

শেখ হাসিনা বলেন, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীতে নারী সদস্য নিয়োগ আমরা শুরু করি। পুলিশে নারী সদস্য নিয়োগ জাতির পিতাই শুরু করেছেন। তিনি বলেন, ভৌগলিক সীমারেখায় আমরা হয়তো ছোট, কিন্তু জনসংখ্যায় বড়। আমরা বড় হয়ে চলবো, বিশ্বে মর্যাদা নিয়ে চলবো। আমরা দেশটাকে সেভাবে গড়ে তুলতে চাই। প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীন দেশ হিসেবে আমরা যে মর্যাদা পেয়েছি সেই মর্যাদা নিয়ে আমরা যেন মাথা উঁচু করে চলতে পারি। আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের যে মর্যাদা পেয়েছি তা নিয়েই যেন সামনে এগিয়ে যেতে পারি এবং দেশি-বিদেশি কোন শক্তিই যেন এই অগ্রযাত্রায় বাধা সৃষ্টি করতে না পারে।

তিনি বলেন, জাতির পিতার করে দেয়া পররাষ্ট্রনীতি ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়,’ এই নীতি নিয়েই বাংলাদেশ আগামীতেও সামনে এগিয়ে যাবে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন