শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খড়ের দখলে সড়ক

খড়ের দখলে সড়ক
  • দুর্ঘটনা বাড়ছে

পাবনার আটঘরিয়াসহ বিভিন্ন উপজেলার মহাসড়ক এখন কৃষকের উঠানে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন সড়কের ওপর ধান, খড়সহ নানাকিছু শুকাতে দেওয়ার কারণে গাড়ি চালকদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। ঘটছে অহরহ সড়ক দুর্ঘটনা। কয়েকদিন ধরে আটঘরিয়াসহ বিভিন্ন উপজেলার মহাসড়কে এ চিত্র সরেজমিন দেখা যাচ্ছে।

দেখা যায়, রাস্তায় চলমান সকল যানবাহন দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলছে প্রতিনিয়ত এবং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন কৃষক-কৃষাণীসহ কৃষক পরিবারের ছোট-ছোট শিশু বাচ্চারা। আবার রাস্তা সংকীর্ণ হওয়ার কারণে অনেক স্থানে যানজটেরও সৃষ্টি হচ্ছে। দুর্ঘটনা এড়াতে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে যে কোন সময় ঘটতে পারে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা।

বোরো আর আউশের এ মৌসুমে চাষিদের অনেক ব্যস্ত দেখা যায় দেশের সবখানে। তারা ধান কাটা থেকে শুরু করে ধান মাড়াই করা, খড় শুকানো ইত্যাদি কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে খড় শুকানোর জন্য অনেকাংশেই তারা বেছে নিয়েছে গ্রামের ছোট বড় কাঁচা পাকা রাস্তা। সড়কে শুকাতে দেয়া খড়ের কারণে দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হচ্ছে ছোট-বড় যানবাহন এমনকি পথচারীদের।

বর্ষা, বৃষ্টি, ওভার লোডের গাড়ি ইত্যাদির কারণে দেখা যায় রাস্তার কোথাও না কোথাও কম বেশি গর্ত তৈরি হয়। সময় মতো সেগুলো সংস্কার করা হয় না। ফলে গর্ত থেকেই যায়। এসব গর্তের উপর দিয়ে যখন সমানতালে খড় বিছিয়ে দেয়া হয় তখন কোনোক্রমেই বোঝা সম্ভব হয় না কোথায় গর্ত রয়েছে। মোটরসাইকেলের আরোহী ছাড়াও ছোট বড় সব যানবাহন সেই গর্তে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। খড় পিচ্ছিল হওয়াতে সাধারণ চলাচলেও বেশ বেগ পোহাতে হয়।

আরও পড়ুনঃ  বাঘড়ায় মাছের মেলা

ধানের মৌসুম এলেই মহাসড়ক সংলগ্ন বসবাসকারী কৃষকরা ধান, খড়, ডাল, কাঠের গুঁড়িসহ নানা পণ্যদ্রব্য শুকাতে ব্যবহার করছে প্রধান সড়কটি। বিশেষ করে দেবোত্তর ইউনিয়ন, একদন্ত ইউনিয়ন, লক্ষীপুর ইউনিয়ন, চাঁদভা ইউনিয়ন, মাজপাড়া ইউনিয়ন ও আটঘরিয়া পৌরসভার বিভিন্ন সড়কের উভয় পাশে হাজারও কৃষকের বসবাস। ওই সব কৃষকের উঠান কর্দমাক্ত থাকায় সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী গাড়ির চালক মো. নায়েব আলী বলেন, ‘ভেজা খড়ের ওপর দিয়ে গাড়ি চালানোর সময় নিয়ন্ত্রণ রাখা যায় না। সে কারণে দুর্ঘটনায় পড়তে হয়। সড়কের অনেক জায়গায় চলাচলের অনুপযোগী হলেও তা চালক নির্ণয় করে অতিক্রম করে। তবে, সড়কে ধান কিংবা খড়কুটো থাকায় সড়কের খানাখন্দ নির্ণয় করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। ফলে দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয় চালক অথবা যাত্রীদের। তিনিসহ সড়কে চলাচলকারী গাড়ির চালকরা দ্রুত সড়কের ওপর এ ধরনের কর্মকান্ড বন্ধ করার দাবি জানান।

বর্ষার আগমনীতে বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠমাসে বেশ বৃষ্টি হয়। ধান মাড়াইয়ের পর রাস্তায় ফেলে রাখা হয় খড়। বৃষ্টির পানিতে খড় ভিজে রাস্তাগুলো মরণ ফাঁদে পরিণত হয়। এতে করে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। তাই পথচারীদের সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি এবং চাষিদের এমনভাবে বন্দোবস্ত করা প্রয়োজন যাতে অন্যের ক্ষতির কারণ না হয়। যথাযথ কর্তৃপক্ষের উচিত হবে দুর্ঘটনা ঘটার পূর্বেই কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন