শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তিস্তায় বাদাম চাষিদের স্বপ্নভঙ্গ

তিস্তায় বাদাম চাষিদের স্বপ্নভঙ্গ

কুড়িগ্রামের উলিপুরে তিস্তার তীব্রস্রোতে তিস্তার পাড় ভেঙে বাদাম চাষিদের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে। এবার বাদামের বাম্পার ফলন হলেও শত শত একর বাদামসহ জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের জুয়ান সতরার চর, পানিয়ালের ঘাটের চর ও গোড়াইপিয়ারের চর তিস্তার বুকে পানি কম থাকলেও ঘন ঘন বৃষ্টির হওয়ার ফলে উজানি পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তা নদীর বুকে তীব্র স্রোত বয়ে যাচ্ছে। এতে চর এলাকায় তিস্তার পাড়ে থাকা বাম্পার ফলন হওয়া বাদামের ক্ষেত নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এতে করে বাদাম চাষিরা অনেক বিপাকে পড়ছেন। বাদাম চাষিরা বলেন, আর মাত্র ২০ থেকে ২৫ দিন পেরিয়ে গেলেই আমরা বাদাম ঘরে উঠাতে পারতাম। আমাদের সেই স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার করে দিল তিস্তা নদী।

তিস্ততার মধ্যে ভেসে উঠা চরে বাদাম চাষির মধ্যে আব্দুল বাতেন, রায়হান, তাজিবর, আব্দুস সোবাহান, জসিম, আইয়ুব, ফজলু, গোলজার, মুহসিনসহ বেশ কয়েকজন জানান, আমাদের বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছিল। তবে, তিস্তা নদী আমাদের এ স্বপ্নভেঙ্গে চুরমার করে দিল। আমরা লোনের পর লাভের উপর টাকা নিয়ে বাদাম চাষ করেছি। সেই বাদাম এখন তিস্তা নদীর পেটে। আমরা এ সকল লোনের টাকা লাভের টাকা কিভাবে পরিশোধ করব। কিভাবে আমরা পরিবারের ছোট ছোট সন্তান নিয়ে সংসার চালাব। আমরা এখন নিরুপায় হয়ে গেছি।

অসহায় এক বাদাম চাষি আব্দুল বাতেন বলেন, আমি ৫ একর জমিতে বাদাম চাষ করেছি। বাদামের ফলন ও ভালো হয়েছিল। তবে, তিস্তা নদী আমারে ধ্বংস করে দিল। আমি একর প্রতি খরচ করেছি প্রায় ৫০ হাজার টাকা। ৫ একরে খরচ হয়েছে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ খরচের টাকা আমি কোথায় পাব। আমি নিঃস্ব হয়ে গেলাম। আর মাত্র ২০ থেকে ২৫ দিন অতিবাহিত হলেই আমি বাদাম ঘরে উঠাতে পারতাম। উপজেলার কৃষি অফিসের উপ সহকারী জামিল হোসেন বলেন, তিস্তার স্রোতে চর এলাকার কিছু কিছু চরের পাড়ে বাদামসহ নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। এতে করে বাদাম চাষিরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বাদাম চাষিদের এ ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে আমি উপজেলা কৃষি অফিসে বাদাম চাষিদের তালিকা করে জমা দিব। সরকারি ভাবে যা বরাদ্দ আসে তা সঠিক ভাবে বিতরণ করা হবে।

আরও পড়ুনঃ  মূল্যবৃদ্ধির যৌক্তিকতা খুঁজছে ভোক্তা অধিকার

কুড়িগ্রাম উপ-প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন, উক্ত ইউনিয়নের তিস্তায় ভেসে উঠা চরের ভাঙ্গন রোধের জন্য কোনো পরিকল্পনা নেই বা কোন বাজেট ও নেই। দ্রুত বাদাম চাষিদের বাদাম ঘরে তোলার আহ্বান জানান তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন