মঙ্গলবার, ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২রা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মূল্যবৃদ্ধির যৌক্তিকতা খুঁজছে ভোক্তা অধিকার

মূল্যবৃদ্ধির যৌক্তিকতা খুঁজছে ভোক্তা অধিকার

নিত্যপণ্যের যৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে চায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সে লক্ষ্যে উৎপাদন কারখানাগুলো পরিদর্শন করে পণ্যের দাম বাড়ানোর যৌক্তিকতা খুঁজে বের করা হবে বলে জানিয়েছে মহাপরিচালক এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান। গতকাল বুধবার অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে ভোক্তা ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সভায় নিত্যব্যবহার্য পণ্য সাবান, ডিটারজেন্ট, টুথপেস্ট, লিকুইড ক্লিনারের উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় হয়েছে।

গত কয়েকমাস ধরেই নিত্যব্যবহার্য পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, ডলার ও কাঁচামালের দামসহ উৎপাদন খরচ যে পরিমাণ বেড়েছে তাতে পণ্যের দাম আরো বাড়ানো দরকার। যদিও তারা ভোক্তাদের কথা বিবেচনায় রেখে সে পরিমাণ দাম বাড়াতে পারছেন না।

মতবিনিময় সভায় প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরা দাবি করেন, ২০২০ সালের শেষ দিক থেকে এ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দামসহ উৎপাদন খরচ বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। কিন্তু পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে এর অর্ধেক। বিগত সময়ে দাম সমন্বয়ও করা হয়নি। এ অবস্থায় কোম্পানিগুলোর পিঠ এখন দেয়ালে ঠেকে যাচ্ছে। এর কিছুটা চাপ পড়ছে ভোক্তাদের ঘাড়ে।

এসময় ভোক্তা অধিদপ্তর বাজারের তথ্য তুলে ধরে জানায়, ২০২০ সালে আধা কেজির যে ডিটারজেন্টের দাম ছিলো ৬০ টাকা, সেটি এখন ৯০ টাকা। ৫২ টাকার সাবানের দামও এখন ৭৫ টাকা। অর্থাৎ এ দুই পণ্যের দাম বেড়েছে ৪৪ শতাংশ পর্যন্ত।

এর কারণ হিসেবে কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিরা বলেন, তাদের টয়লেটিজ পণ্যের ৮০ ভাগ কাঁচামালই আমদানি করতে হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে এসব কাঁচামালের দাম বাড়ার কারণে উৎপাদন খরচ বেড়েছে ৯৬ শতাংশ পর্যন্ত।

আরও পড়ুনঃ  করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৯২ হাজার

কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিদের মধ্যে ইউনিলিভারের সিএফও জাহিদ মালিথা, স্কয়ারের হেড অফ অপারেশন মালিক সাইদ, এসিআইয়ের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ পলাশ হোসাইনসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন। সভায় কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) প্রতিনিধি কাজী আব্দুল হান্নান বলেন, ব্র্যান্ড-ভ্যালু আর মানুষের ইমোশনকে পুঁজি করে বড় কোম্পানিগুলো ভোক্তাদের ব্ল্যাকমেইল করছে কি না, সে বিষয়ে নজরদারির সময় এসেছে।

ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, কোনো পণ্যের দাম বাড়াতে হলে তার পক্ষে যৌক্তিক কারণ দেখাতে হবে। সেজন্য তাদের ফ্যাক্টরিতে আমরা যাবো। কত দামে কাঁচামাল আমদানি হচ্ছে, কোনো পণ্য উৎপাদনে কত খরচ হচ্ছে এবং কোন পণ্য কী দামে বাজারে বিক্রি হচ্ছে সেগুলো আমরা বিশ্লেষণ করতে চাই। পরবর্তী সময়ে আমরা পর্যবেক্ষণ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে প্রতিবেদন দেবো। এরপর বিষয়গুলো নিয়ে সিদ্ধান্ত আসবে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন