বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বৃষ্টি-জলাধারের পানি সংরক্ষণ করতে হবে

বৃষ্টি-জলাধারের পানি সংরক্ষণ করতে হবে

৪০ ফায়ার স্টেশনের কার্যক্রম ‍উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী

স্থাপনা, ভবন বা শিল্প-কারখানা ডিজাইনের সময় অগ্নিনির্বাপনে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, স্থাপত্যবিদদের আধুনিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি কখনও আগুন লেগে গেলে সেটা নির্বাপনে পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য জলাধারগুলো সংরক্ষণ করতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের জলাধারগুলো সংরক্ষণ করতে হবে। পাশাপাশি বৃষ্টির পানি সংরক্ষণেরও ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল রবিবার সকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে ৪০টি নবনির্মিত ফায়ার স্টেশনের উদ্বোধনকালে দেয়া ভাষণে এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর ভবনে অনুষ্ঠিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে ৫ বিভাগের ২৫ জেলার ৩৯টি উপজেলার ৪০টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।

রাজধানীর জলাধারের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজধানীর পান্থপথের পুরো এলাকাটাই বিল ছিল, যেখানে বসুন্ধরা শপিং মল তৈরি হয়েছে। সেখানকার জলাধার ভরাট করে বক্স কালভার্ট করে পুরো এলাকার জলাধার বিলীন করে ফেলা হয়েছে। ২০০৯ সালে বসুন্ধরা শপিং মলের টাওয়ার অংশে আগুন লাগলে সেটি নেভানোর জন্য হোটেল সোনারগাঁওয়ের সুইমিং পুল থেকে দমকলকর্মীদের পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হয়েছে।

এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী দুর্গত এলাকায় যেন দমকল বাহিনীর গাড়ি পৌঁছতে পারে, সেজন্য রাস্তার প্রশস্ততার পাশাপাশি পানির সহজ প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন। শেখ হাসিনা বলেন, শিল্প কলকারখানাসহ প্রতিটি ভবন, যেখানে অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়,  বিভিন্ন ইনস্টিটিউশন, শপিং মল, বিনোদন কেন্দ্র, সিনেমা হল, প্রতিটি ক্ষেত্রেই অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ  বাউফলে যথাযথ মর্যাদায় জাতীয় শোক দিবস পালিত

প্রধানমন্ত্রী সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিষয় উল্লেখ করে বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এ জন্য প্রতিটি ক্ষেত্রে অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা থাকাটা অত্যন্ত জরুরি। বিভিন্ন এলাকায় যে সব প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে সেখানেও অগ্নিনির্বাপনের ব্যবস্থাটা থাকতে হবে। আমাদের দমকল বাহিনীর এখন ২০ তলা পর্যন্ত অগ্নিনির্বাপন সক্ষমতা রয়েছে। ক্রমেই এই সক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বহুতল ভবন নির্মাণের সময় দুর্ঘটনা ঘটলে সেখান থেকে উদ্ধার পাবার কৌশল সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েই নির্মাণ পরিকল্পনা করার পরামর্শ দেন। এজন্য নিয়মিত অগ্নিনির্বাপন মহড়ার আয়োজন এবং বহুতল ভবনে খোলা বারান্দা রাখার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।

অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন বক্তব্য দেন। সূচনা বক্তব্য দেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইন। অনুষ্ঠানে দমকল বাহিনীর আধুনিকায়ন এবং নবনির্মিত ৪০টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ওপর একটি ভিডিও চিত্রও প্রদর্শিত হয়। প্রকল্প গ্রহণকালে বাণিজ্যিক চিন্তা-ভাবনার জন্য মানুষের জীবন যাতে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে না পড়ে তা নিশ্চিত করার এবং মানুষের চলাচলের জন্য ফুটপাত যেন উন্মুক্ত থাকে প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের সে বিষয়েও লক্ষ্য রাখার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

এদিন দেশের  ৫টি বিভাগের, ২৫টি জেলার, ৩৯টি উপজেলার ৪০টি ফায়ার স্টেশনের কার্যক্রম নতুন করে চালু হলো। সারাদেশে প্রত্যেক উপজেলা ও গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে ফায়ার স্টেশন নির্মাণে তিনটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। চলমান ৩টি প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ফায়ার স্টেশনের মোট সংখ্যা হবে ৫৪৪টি।

আরও পড়ুনঃ  ১১ দিন পর খুললো শপিংমল-দোকানপাট

প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে ফায়ার স্টেশন নির্মাণ ছাড়াও অত্যাধুনিক অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রপাতি সংযুক্ত করা, দেশে-বিদেশে ফায়ার ফাইটারদের উন্নত প্রশিক্ষণসহ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সংস্থাটির সক্ষমতা বাড়াতে সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা তুলে ধরেন। এ প্রসঙ্গে বলেন, আমি সিদ্ধান্তই দিয়েছিলাম আমাদের প্রতি উপজেলায় অন্তত একটি করে ফায়ার স্টেশন হতে হবে। দেশের জনগণকে আরো সচেতন করে তুলতে হবে। আমাদের ফায়ার ফাইটাররা যাতে আধুনিক প্রশিক্ষিত হয় এবং আন্তর্জাতিক মানের হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই তার সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ফায়ার একাডেমি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন