রবিবার, ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ক্রেতাসেবায় উন্মুক্ত রিসোর্ট-রেস্তরাঁ

ভেলেন্টাইনস্ ডে বা ভালোবাসা দিবস উদযাপনে অনেকেই যাচ্ছেন বিভিন্ন রিসোর্টে। বিশেষভাবে নামি দামি রিসোর্টগুলোতে দিন পনেরো আগেই বুকিং দিয়ে রেখেছেন অনেকে। অনেকে পরিবারের সদ্যসদের নিয়ে যাচ্ছেন। তবে এদিনে রিসোর্টে যাওয়া নতুন দম্পতির সংখ্যাই বেশি।

ভালোবাসা দিবসে রিসোর্টে যাওয়া অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় ভালোবাসা দিবসে খরচ বাড়ানো হয়েছে। তবে রিসোর্ট কর্তৃপক্ষের অনেকে জানিয়েছেন ভালোবাসা দিবসে আসা সবাইকে বাড়তি সুবিধা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এতে খরচ আগের চেয়ে কিছুটা বাড়বে। তবে তা প্রকৃত হিসাবের চেয়ে অনেক কম।

রিসোর্টে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে সদ্য বিয়ে হওয়া নতুন দম্পতি আফসার ও রজনী। তারা আনন্দবাজারকে বলেন, রাজধানীর ব্যস্ত জীবন থেকে খানিকটা দূরে নিরিবিলি জায়গায় একান্তে ভালোবাসা দিবসের সময় কাটাতে রিসোর্টে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হয়। তারা ভালোবাসা দিবসের দিন পনেরো আগেই পছন্দের রিসোর্টে বুকিং দিয়ে রেখেছেন।

অন্যদিকে গত বছর পাচেক থেকে বিশেষ এ দিনে রাজধানীসহ বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহরের হোটেল রেস্তরাঁতেও ভিড় বাড়ে। এবারেও ভালোবাসা দিবসে বাড়তি ক্রেতা সামলাতে রেস্তরাঁগুলি আগেভাগে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। অনেক রেস্তঁরাতে খাবার আনা নেওয়াসহ বিভিন্ন সার্ভিস দিতে বাড়তি লোক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হোটেল, রেস্তরাঁগুলোতেও খাবারের বাড়তি দাম ধরা হবে।

নব্বই দশকে দেশে ভালোবাসা দিবসের উদযাপন শুরু হয়। প্রতিবছরই এদিবস উদযাপনে ব্যাপকতা বাড়ছে। প্রথমদিকে প্রিয়জনকে ফুল দেয়াতেই সীমাবদ্ধ ছিল। ধীরে ধীরে উদযাপনে উপহার দেয়া, হোটেল রেস্তরাঁতে খাওয়া দাওয়ার প্রচলন শুরু হয়। গত বছর দশেক ফুল ও উপহার দেয়া- নেয়া, হোটেল-রেস্তরাঁয় খাওয়ার পাশাপাশি ভালোবাসা দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে কিছুটা নিরিবিলি জায়গায় ঘুরতে যাওয়া শুরু হয়।

আরও পড়ুনঃ  ভয় কাটিয়ে জয়

অনেকে কর্মক্ষেত্র থেকে ছুটি নিয়েও বাসস্থান থেকে কিছুটা দূরে রিসোর্টে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। অন্যান্য সময়ে রাজধানীর আশেপাশে এলাকাতে অবস্থিত বিভিন্ন রিসোর্টে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত একজনের জন্য খরচ হবে ১৫শ থেকে দুই হাজার টাকা। এর মধ্যে রয়েছে সাইকেলে চড়া, নৌকায় ঘোরা, সুইমিংপুলে গোসল, দুপুরের খাবার, সকাল ও সন্ধ্যায় হালকা নাশতা সব পাওয়া যাবে।

রাতে থাকতে হলে সাধারণ রিসোর্টগুলোতে একটি দম্পতিকে দিতে হবে ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা। এবারের ভালোবাসা দিবস উপলক্ষ্যে প্রতিটি রিসোর্টে খরচ ১ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা বেশি রাখা হচ্ছে।

ভালোবাসা দিবসে রাজধানী থেকে ঘণ্টাখানিকের পথ বর্ণিল রিসোর্ট। সেখানে পরিবারের সবাইকে নিয়ে হাফিজুর রহমান যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। তিনি আনন্দবাজারকে বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন হোটেল রেস্তরাঁতে প্রচণ্ড ভিড় থাকবে। নিজেদের মতো সময় কাটানো যাবে না। তাই রিসোর্টে যাওয়ার পরিকল্পনা। তবে খচর কিছুটা বেশি রাখা হচ্ছে।

রাজধানীর আশেপাশে ব্র্যাক সিডিএম, সারা, রুপকথা, শীতালক্ষ্য, কুঠিরসহ বিভিন্ন রির্সোট রয়েছে। খরচ প্রায় একই ধরনের। এক সময়ে ধনী পরিবারের তরুণ-তরুণীরাই ভালোবাসা দিবস উদযাপন করতেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার তরুণ-তরুণী, কিশোর-কিশোরীরা যে যার সামর্থ্য অনুযায়ী দিবসটি উদযাপন করে। তাই রাজধানীসহ বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহরের নামি-দামি হোটেল-রেস্তরাঁর পাশপাশি সাধারণ মানের হোটেল রেস্তরাঁতেও আয়োজন করা হয়। সাধারণ মানের হোটেল রেস্তরাঁয় আয়োজনে খাবারের মান সাদামাটা হয়।

রাজধানীর শেফ টেবিলের বিক্রয় কর্মী সুমি আনন্দবাজারকে বলেন, ভালোবাসা দিবসে এখানে কোনো টেবিল চেয়ার ফাঁকা থাকে না। অনেকে আগেই বুকিং দিয়ে রেখেছে। গত বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনা সংক্রমণের কারণে ভালোবাসা দিবস সীমিত পরিসরে আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশেও দিবসটি স্বাভাবিক সময়ের মতো ব্যাপক আয়োজন করা হয়নি।

আরও পড়ুনঃ  লকডাউনে চালু থাকবে পোশাক কারখানা

এবারে করোনা পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভালো। তাই শেফ টেবিলের বিভিন্ন রেস্তরাঁগুলো এদিনে অন্যান্য দিনের কয়েকগুণ বেশি ক্রেতা আশা করছি। এজন্য এখানকার সব রেস্তরাঁ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে যেন ক্রেতাদের চাহিদামতো খাবার ও সার্ভিস দেয়া যায়।

রাজধানীর গুলশান, বারিধারা, উত্তরা, ধানমন্ডি, বনানীসহ বিভিন্ন আভিজাত্যপূর্ণ এলাকাতে হোটেল রেস্তরাঁ বেশি রয়েছে। এছাড়া প্রায় সব এলাকাতেই হোটেল রেস্তরাঁ রয়েছে। রাজধানীর লা মেরিডিয়ান, আমারি, লেকশো, সিক্স সিজনস, ওয়েস্টইন, লংবিচসহ রাজধানীর অনেক নামিদামি হোটেল-রেস্তরাঁতে ভালোবাসা দিবস উপলক্ষ্যে মূল্য ছাড়ের অফার দেয়া হয়েছে। এছাড়া যমুনা ফিউচার পার্ক, বসুন্ধরা শপিং মল, রাপা প্লাজা, জেনেটিক প্লাজা, মেট্রোশপিং মলসহ বিভিন্ন শপিং মলের মধ্যে বিভিন্ন রেস্তরাঁতেও ভালোবাসা দিবস উপলক্ষ্যে ব্যাপক সাজসজ্জা করা হয়েছে। ক্রেতা সামলাতে বাড়তি প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন