শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সন্ধান মিললো আমাজনের গহীনে হারিয়ে যাওয়া প্রাচীন শহরের

আমাজনের গহীনে লেজার ইন দ্য স্কাই প্রযুক্তি ব্যবহার করে হারিয়ে যাওয়া প্রাচীন এক শহরের সন্ধান মিলেছে। গবেষকরা ধারণা করছে, প্রচীন এই শহরটি ৫০০-১৪০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যকার সময়ে কাসারাবে সম্প্রদায় নির্মাণ করেছিল। এই শহরগুলি বলিভিয়ার ল্যানোস ডি মোজোস সাভানা-বনে অবস্থিত ও বহু শতাব্দী ধরে ঘন গাছের ছাউনির নীচে লুকিয়ে থাকায় অনুসন্ধানে ধরা দেয়নি।

ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লেজার ইন দ্য স্কাই প্রযুক্তির (ঘন গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বনের গভীরে কী আছে, তা জানতেই এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়) মাধ্যমে আবিষ্কৃত এই শহরে ৫৪ একর জুড়ে বিস্তৃত ১৬ ফুট-উঁচু সোপান, ৩০ টি ফুটবল পিচের সমতুল্য ও ৬৯ ফুট লম্বা শঙ্কুযুক্ত পিরামিডেরও সন্ধান পাওয়া গেছে।

এই প্রযুক্তিতে হেলিকপ্টার, ছোট বিমান বা ড্রোনের সাথে যুক্ত একটি লেজার স্ক্যানার দিয়ে আকাশ থেকেই ভূখণ্ড জরিপ করে দেখা হয়। লেজার স্ক্যানিংয়ের ফলে ওই ভূখণ্ডের একটি ডিজিটাল মডেল কম্পিউটারের পর্দায় ধরা পড়ে।

ইউনিভার্সিটি অফ এক্সেটারের জোসে ইরিয়ার্তে জানান, আমাজনের বলিভিয়ার এই অংশের পুরো অববাহিকা জুড়ে সবচেয়ে জটিল প্রাক-কলম্বিয়ান সমাজ ব্যবস্থা গড়ে ওঠার অনুমান আমরা দীর্ঘ দিন ধরে করে আসছিলাম। কিন্তু বনের বিশালাকার ছাউনির নিচে প্রমাণগুলো ঢেকে পড়ায় আমাদের পক্ষে খুঁজে পাওয়া মুষ্কিল হয়ে পড়ে। লেজার ইন দ্য স্কাই প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে অবশেষে আমরা তা খুঁজে পাই।

গবেষণায় সাথে জড়িত জার্মান প্রত্নতাত্ত্বিক ইনস্টিটিউটের ড. হেইকো প্রুমারস জানান, শহরটি প্রাক-হিস্পানিক সময়কার তুলনামূলকভাবে ঘন বসতির সাক্ষ্য দেয়। আমাদের কাজের উদ্দেশ্য ছিল ছিল মৌলিক গবেষণা পরিচালনা করে সেখানকার বসতি এবং জীবনের ইতিহাসের খোঁজ করা।

আরও পড়ুনঃ  নিউজিল্যান্ডে ফাইজারের ভ্যাকসিন নেওয়ার পর নারীর মৃত্যু

এছাড়া আমেরিকা ও জার্মানির গবেষকদের আন্তর্জাতিক দল এই শহরের কয়েক মাইলের মধ্যে বিস্তৃত জলাধার ও একাধিক ছোট ছোট কাঠামোও খুঁজে পেয়েছেন। আবিষ্কৃত এই শহর আমাজনে বসবাসকারী সম্প্রদায়ের সম্পর্কে পুরনো সব ধারণা বদলে দিয়েছে। কারণ, এই শহরটি প্রমাণ করছে বনাঞ্চলে বসবাস করলেও আমাজনে এমন কিছু সম্প্রদায় বাস করত যারা সময়ের তুলনায় বেশ কিছুটা এগিয়ে ছিল। এই এলাকাকে কেন্দ্র করে নগর-সভ্যতা গড়ে উঠেছিল বলেও ধারণা করছেন গবেষকরা।

গবেষণাকারীরা জানান, এখানে জনবসতি নির্মাণের জন্য যে পরিশ্রম ও পরিকল্পনা করা হয়েছিল তা আমাজোনিয়ায় অভূতপূর্ব ও এর পরিবর্তে কেবলমাত্র কেন্দ্রীয় আন্দিজের প্রাচীন রাজ্যগুলির সঙ্গে তুলনীয়। শহরটিতে প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে সফল টেকসই জীবিকা নির্বাহের কৌশল নিযুক্ত করা হয়েছিল যা আশেপাশের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সহায়ক।

আনন্দবাজার/টি এস পি

সংবাদটি শেয়ার করুন