বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা

স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা
  • বিদ্যালয়ে টয়লেট-বিশুদ্ধ পানিসংকট
  • ব্যবহার অনুপযোগী ৮০ ভাগ প্রতিষ্ঠানের টয়লেট
  • বিপাকে ৮৫ হাজার কোমলমতি শিক্ষার্থী

মানসম্মত টয়লেট ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে নেত্রকোণার দশটি উপজেলার শতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৮৫ হাজার ক্ষুদে শিক্ষার্থী। অধিকাংশ বিদ্যালয়ে পরিবেশ নোংরা ও স্যাঁতসেতে। এছাড়া নানা অব্যবস্থাপনার কারণে ব্যাহত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম। তবে বিদ্যালয়ের প্রধান ও তদারকির দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আন্তরিক না হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে এ সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।

অনুসন্ধানে জানা যায়, জেলার দশ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ২১০ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৮৫ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। তবে এদের স্বাস্থ্যরক্ষায় তেমন কোনো উদ্যেগ নেই প্রাথমিক শিক্ষাবিভাগে।

স্যানিটেশন নিয়ে কাজ করা এনজিওদের মতে, জেলার প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের শতকরা প্রায় ৮০ ভাগ স্কুলের টয়লেট ব্যবহারের অনুপযোগী। এছাড়া অনেক বিদ্যালয়ের টয়লেটের ব্যবস্থা না থাকায় স্কুল সংলগ্ন বাসিন্দাদের বাড়ির টয়লেট ব্যবহার করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

আদিবাসী অভিবাবকসহ সকল শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের অভিযোগ, অধিকাংশ স্কুলের টয়লেট অন্ধকার, পানি নেই, আলো নেই, নোংরা স্যাঁতসেতে ও র্দুগন্ধযুক্ত। ময়লা আবর্জনার কারণে মশার উপদ্রব বেশি। এছাড়া সাবান কিংবা হ্যান্ডওয়াশ নেই এবং ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদা টয়লেটের ব্যবস্থা নেই। যার কারণে সন্তানদের নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তা তাদের। এজন্য তারা স্কুল কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের দায়ি করেন। 

তাদের মতে, কোমলমতি শিশুদের স্বাস্থ্যসুরক্ষার বিষয়গুলো সকলের অধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখা প্রয়োজন। পাশাপাশি এ নিয়ে শিক্ষার্থীসহ অভিবাবকদের নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সচেতনতামূলক সভা করা উচিত। জেলার পাচঁ গাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, বিষয়টি জেলা শিক্ষাদপ্তরের কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়েছে। তারা উদ্যোগ নিলে টয়লেট সমস্যার সমাধান হবে। জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেলিম মিয়া বলেন, অপরিস্কার টয়লেট ব্যবহারের কারণে ডায়রিয়া, কৃমি, কলেরাসহ অনেক রোগে আক্রান্ত সম্ভাবনা থাকে। তাই সকলকে মানসম্মত টয়লেট ব্যবহারের পরামর্শ দেন তিনি।

আরও পড়ুনঃ  নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও থেমে নেই পাহাড় কাটা 

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ওবায়দুল্লাহ বলেন, আদিবাসী এলাকার শিক্ষার্থীসহ উক্ত সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সরকারি বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে পর্যায়ক্রমে জেলার সকল স্কুলে মানসম্মত টয়লেট নির্মাণ করা হবে। এছাড়া কোনো বিদ্যালয় জরাজীর্ণ টয়লেট থাকলে তা স্লিপের টাকায় মেরামত করার নির্দেশ দেয়া আছে।

জেলা জনস্বাস্থ্য নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেণ, আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি আদিবাসী এলাকার শিক্ষার্থীসহ সকল স্কুলের শিক্ষার্থীরা যেন নিরাপদ পানি ব্যবহার করতে পারে।

নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক কাজি আবদুর রহমান বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আদিবাসী এলাকার শিক্ষার্থীসহ যেখানে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট নেই, সেখানে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে নিরাপদ পানি ও টয়লেটের ব্যবস্থা করা হবে।

আনন্দবাজার/এম.আর

সংবাদটি শেয়ার করুন