ঢাকা | রবিবার
৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
২১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও থেমে নেই পাহাড় কাটা 

পরিবেশ অধিদপ্তরের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও একের পর এক পাহাড় কাঁটছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এবার শিক্ষক ক্লাব কাম গেস্ট হাউস ভবনের নির্মাণ কাজের জন্য পাহাড় কাটা শুরু করেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এতে পরিবেশ বিপন্নের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় হারাচ্ছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের দক্ষিণ পাশে নির্মাণাধীন শিক্ষক ক্লাব কাম গেস্ট হাউসের উত্তর পাশের পাহাড়ের প্রায় অর্ধেক কেটে ফেলা হয়েছে। ফলে যেকোন সময় পাহাড় ধসের আশংকা রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একের পর এক এমন অপরিকল্পিত উন্নয়ণে পাহাড় কেটে ফেলায় শিক্ষার্থীদের ভেতরে জন্ম নিচ্ছে তীব্র ক্ষোভ।
বিভিন্ন বিভাগের অন্তত ১৫ জন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা যায়, “লাল পাহাড়ের সবুজ ক্যাম্পাস বলে সকলের কাছে গর্বের সাথে পরিচয় দিতেন। কিন্তু প্রশাসনের এমন অপরিকল্পিত সিদ্ধান্তের কারণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সেই পাহাড়। প্রশাসনকে অনুরোধ করবো এই পাহাড়গুলো কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য। একে রক্ষা করা প্রশাসনের দায়িত্ব।”
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তনকে সামনে রেখে মাঠের উত্তর পাশের পাহাড় কাটে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তারও আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের পশ্চিম পাশের পাহাড়ের একটি অংশ মেশিনের সাহায্যে কেটে ফেলা হয়। সেই মাটি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে নির্মাণাধীন সড়কদ্বীপ ও ডরমিটরির নিচু স্থান ভরাট করেছে প্রশাসন।
এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে পাহাড় কাটার সাথে জড়িত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে পরিবেশ আইনে দোষী সাব্যস্ত করে সতর্কতা নোটিশ জারি করা হয়।
বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ (সংশোধন) আইনের ২০১০-এর ৬-এর ‘খ’ ধারায় বলা হয়েছে ‘কোনো পাহাড় বা টিলা কর্তন বা মোচন করা যাইবে না, তবে অপরিহার্য জাতীয় স্বার্থের প্রয়োজনে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র গ্রহণক্রমে পাহাড় কর্তন করা যাইবে।’ আইনে পাহাড় বা টিলা কাটার জন্য ছাড়পত্রের বিধান থাকলেও পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে অনুমতি নেয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে প্রশাসনের বিরুদ্ধে।
এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর কুমিল্লা কার্যালয়ের পরিদর্শক মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমরা জেনেছি। আমাদের দপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নির্মাণাধীন ভবনের ঠিকাদার জাহাঙ্গীর বলেন, ভবনের মূল অংশে মাটির প্রয়োজন হওয়ায় নীচের অংশ কাটা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো: আবু তাহের বলেন, ‘শিক্ষক ক্লাব কাম গেস্ট হাউস ভবনের বেইজমেন্ট কাটতেছে। পাহাড় কাটার সংবাদ শুনে সাথে সাথে প্রকৌশলীকে পাঠিয়েছি। তারা জানিয়েছে ক্যাম্পাসের কোথাও পাহাড় কাটা হয়নি।’
আনন্দবাজার/শাহী

সংবাদটি শেয়ার করুন