মুখের সাহায্যে লিখে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা দিচ্ছে লিতুন জিরা। জন্ম থেকেই হাত-পা না থাকায় মুখে ভর করে পিইসি পরীক্ষা দিতে হচ্ছে তাকে।
যশোরের মনিরামপুর উপজেলার শেখপাড়া খানপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে লিতুন জিরা। খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এবার পিইসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে সে।
হাত-পা না থাকা সত্ত্বেও হাল ছাড়েনি লিতুন জিরা। দিনের পর দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে রপ্ত করেছে মুখের সাহায্যে লেখার কৌশল। সমাজের বোঝা না হয়ে মুখের সাহায্যে লিখেই মানুষের মতো মানুষ হতে চায় সে।
নিজের ইচ্ছা জানাতে গিয়ে লিতুন জিরা বলেন, পরনির্ভর না হয়ে লেখাপড়া শিখে নিজেই কিছু করতে চাই।
লিতুন জিরা লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহী। তাই তো এত বাধা বিপত্তি পেরিয়ে এগিয়ে চলেছে নিজের লক্ষ্যে। হুইলচেয়ারে করেই বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করে সে। হুইলচেয়ারটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কারণে তার চলাফেরায় এখন অনেক কষ্ট হচ্ছে।
লিতুন জিরার বাবা উপজেলার এআর মহিলা কলেজের প্রভাষক। তার বাবা পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। এআর মহিলা কলেজ এমপিওভুক্ত না হওয়ায় নতুন হুইলচেয়ার কেনাও সম্ভব হচ্ছে না তার পক্ষে।
লিতুন জিরার বাবা হাবিবুর রহমান ও মা জাহানারা বেগম বলেন, মেয়ের মেধা তাদের আশার সঞ্চার করছে। লিতুন জিরা আর ১০ জন শিশুর মতো স্বাভাবিকভাবেই খাওয়া-দাওয়া, গোসল সব কিছুই করতে পারে। মুখ দিয়েই লিখে সে। তার চমৎকার হাতের লেখা যে কারও দৃষ্টি কাঁড়বে।
লিতুন জিরার প্রধান শিক্ষক সাজেদা খাতুন বলেন, ২৯ বছর শিক্ষকতা জীবনে লিতুন জিরার মতো মেধাবী শিক্ষার্থীর দেখা পাইনি। এক কথায় সে অসম্ভব মেধাবী। শুধু লেখাপড়ায় না, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও অন্যদের থেকে অনেক ভালো সে। সে মডেল টেস্টে কেন্দ্রে প্রথম হয়েছে।
আনন্দবাজার/ডব্লিউ এস