আবাসিক হল না খোলে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের প্রায় বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিভাগ চেয়ারম্যানবৃন্দের কাছে আবেদন করেছে আবাসিক হল না খোলে যেন পরীক্ষা না নেওয়া হয় । শিক্ষার্থীদের আবেদন সহ সার্বিক বিষয়ে আজ অনুষদের বিভাগ চেয়ারম্যানবৃন্দের এক সভা অনুষ্ঠিত হয় । সভায় অধিকাংশ চেয়ারম্যানবৃন্দ শিক্ষার্থীদের আবেদনে পক্ষে মত দিয়েছে । তবে এ বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য বিভাগ চেয়ারম্যান ও অনুষদের ডীনের।
বৃহস্পতিবার অনলাইন প্লাটফর্ম জুম এপসে অনুষদের ডীন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা সুত্রে জানা যায়, হল না খোলে পরীক্ষা না নেওয়ার পক্ষে শিক্ষার্থীদের যে আবেদন সে আবেদনের সাথে একমত হয়েছেন বিভাগের প্রায় সকল চেয়ারম্যান । তবে কয়েকটি বিভাগ পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন ৷ ইতোমধ্যে ইংরেজী বিভাগসহ কয়েকটি বিভাগ আপাতত পরীক্ষা না নেওয়ার বিষয়টি শিক্ষার্থীদের মৌখিকভাবে জানিয়ে দিয়েছেন ।
সভায় পরীক্ষা আয়োজন নিয়ে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে জানতে চাইলে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড মো.শামছুল আলম দৈনিক আনন্দবাজারকে বলেন, এ বিষয়ে আজকে আমরা আমাদের মধ্যে একটি আলোচনা করেছি । শিক্ষার্থীরা যে হল না খোলে পরীক্ষায় বসতে চাচ্ছে না এ ব্যাপারে আজকের সভায় আমরা সকল চেয়ারম্যান মোটমুটি একমত হয়েছি । তবে ১৩ তারিখ ডিনস কমিটির মিটিংএ এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে । তিনি বলেন, তবে আমরা এটা বুঝি যে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ আমাদের মতামত অবশ্যই ফেলবে না।
তবে ভিন্ন কথা বলছেন ইংরেজী বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নেভিন ফরিদা। তিনি বলেন, অধিকাংশ বিভাগের শিক্ষার্থীদের অনুরোধ ছিলো তারা হল না খোলার আগে পরীক্ষা দিতে পারবেনা । তাদের অনুরোধ বিবেচনা করে পরীক্ষা পোস্টপোন্ড করা হয়েছে; অর্থাৎ বিভাগগুলো থেকে পরীক্ষার যে ডেট দেয়া হয়েছে সে তারিখে পরীক্ষা হবে না ।
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান শামছুল আলমের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত ডিনস মিটিংয়ে যাবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজকের মিটিংএ এ বিষয়গুলো শুধু ‘ভার্বালি’ বলা হয়েছে । আর আমরা সেভাবে পরীক্ষা স্থগিতের বিষয়টি শিক্ষার্থীদের মৌখিকভাবে জানিয়ে দিচ্ছি। ফরমালি যেহেতু আমাদের কাছে কিছুই লিখিত আসেনি , তাই এগুলো ডিনস মিটিংএ যাবে কি যাবে না সেটি জানি না।
তিনি বলেন, সভায় কয়েকটি বিভাগের চেয়ারম্যান পরীক্ষা নিতে চেয়েছিলো । আমরা বলেছি এটা ত ‘রিয়েলিস্টিক’ না। তাদেরকে ত কিছু সময় দিতে হবে।
এই অধ্যাপক বলেন, সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে চেষ্টা করা হবে কালেক্টিভ ডিসিশনটা রাখার ।
ইংরেজী বিভাগ সুত্রে জানা যায়, মাস্টার্স এবং অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীদের চলতি মাসের ২০ তারিখ থেকে, অনার্স তৃতীয় ,দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের ফেব্রুয়ারীর ৫ তারিখ থেকে এবং প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ১৮ তারিখ থেকে পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিলো। তবে আজকের মিটিংয়ের পর বিভাগ থেকে প্রত্যেক ব্যাচে জানানো হচ্ছে, ঘোষিত তারিখে পরীক্ষা হচ্ছে না। পরীক্ষার তারিখ পরবর্তীতে জানানো হবে ৷
তবে পরীক্ষা না হওয়ার ব্যাপারে এখনো কোন সিদ্ধান্তই হয়নি বলে জানান কলা অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড আবু মোহাম্মদ দেলওয়ার হোসেন ৷ দৈনিক আনন্দবাজারকে তিনি বলেন, এসব বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয় নি । আগে আমরা সিদ্ধান্তগুলো ফাইনালাইজ করবো, তারপর প্রিন্ট করবো এরপর বিভাগ চেয়ারম্যানবৃন্দের কাছে পাঠাবো। তারপরই সিদ্ধান্ত । তিনি বলেন, মিটিংএর সিদ্ধান্তসমূহ যে পর্যন্ত রেভ্যুলেশন আকারে না যায় সে পর্যন্ত সেটা কোন সিদ্ধান্ত না।
আনন্দবাজার/শহক