নিম্মমধ্যবিত্তের বাতিঘর নামে পরিচিত সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে (গবি) অনলাইনে ক্লাস সমাপ্তির পরে সেমিস্টার চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষ হয়েছে। ১৭ মার্চ যখন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়, তখন গবি এপ্রিল ২০২০ সেমিস্টারের বয়স মাত্র দুই মাস। বাঁকি ক্লাসগুলো সম্পন্ন হয় অনলাইন প্রযুক্তিতে।
এতে সেমিস্টার ফি গ্রহণে কোনো তারতম্য হবে কিনা সে প্রশ্ন সকল শিক্ষার্থীরই। এবিষয়ে গবি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মীর মুর্ত্তজা আলী বাবু বলেন, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জরি কমিশনের পরামর্শ ও নির্দেশনা অনুসরণ করে অন্যান্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা সম্পন্ন করতে পারেনি। গণ বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণ করেছে। অনেক বিভাগের ফলাফলও ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। সুতরাং আমরা পিছিয়ে নেই, সেশন জট আমাদের নেই। পরবর্তী অবস্থা দেখে, বুঝে গণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত নেবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, এ অর্থবাজেটে ইন্টারনেটের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যেই শিক্ষার্থীরা নিজস্ব অর্থায়নে ডাটা কিনে ক্লাস করেছে। অনলাইন লেকচার ছাড়া আর কোনো সুযোগ সুবিধা বিশ্ববিদ্যালয় দিতে পারেনি। তাই পূর্বের নিয়মে সেমিস্টার ফি নেয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। এবার আমরা ল্যাব ক্লাস করতে পারিনি। যার ফলে গবেষণা ও উন্নয়নে অর্থ খরচ হয়নি। খেলাধুলা, লাইব্রেরি, বিদ্যুৎ বিল, বাসের তেল ও অন্যান্য কোনো খাতে এবার অর্থ ব্যয়ের সুযোগ ছিল না।
শিক্ষার্থী আরও বলেন, এ ছাড়া মহামারীর তান্ডবে অনেকের জীবিকা থমকে গেছে সঙ্গে নতুন যোগ হলো বন্যা। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের অনুদান দেয়া উচিত। পুরো সেমিস্টার ফি চাওয়া মানবিকতার বিপরীত বলে আমাদের মনে হয়।
কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) নজরুল ইসলাম রলিফ বলেন, সময় এখন অনুকূলে নেই। তাই এমন সিদ্ধান্ত নিতে হবে যা শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়ের জন্যই ভাল হয়। মূল সেমিস্টার ফি’র ৫০% মওকুফ করে পরবর্তী সেমিস্টার অনলাইনে আরম্ভ করা যেতে পারে। এতে শিক্ষকদের বেতনের দিক চলে আসছে। আমরা ছাত্র সংসদ সবসময়ই প্রশাসনের সাথে শিক্ষার্থীদের পক্ষে কথা বলি। প্রয়োজনে এবারও বলবো।
গবি সহকারী রেজিস্ট্রার আবু মোহাম্মদ মোকাম্মেল বলেন, সেমিস্টার ফি কমানোর বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। ফি দেওয়ার নোটিশ সম্বন্ধে আমি অবগত নই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক ডা. মো. দেলওয়ার হোসেন মঙ্গলবার বলেন, সেমিস্টার ফি গ্রহণ এখনও শুরু হয়নি। এখন যারা দিতে পারবে তারা জমা দিবে। ফি কমানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জরি কমিশন এ বিষয়ে আমাদের কিছু জানায়নি। শিক্ষার্থীদের একটি করে মুঠোফোন দেওয়া হবে। শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন তারা চেষ্টা করবে ফ্রী’তে দেবার জন্য। এই কাগজ আমি পেয়েছি।
আনন্দবাজার/ডব্লিউ এস।এ আর