সারাবিশ্বে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্ত করার জন্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের তৈরীকৃত কিট উৎপাদনের অনুমতি দিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী রাইজিংবিডিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, কিছুক্ষণ আগে আমরা সরকারের কাছ থেকে এ কিট তৈরির অনুমোদন পেয়েছি। ইংল্যান্ড থেকে কাঁচামাল আনতে স্পেশাল প্যাকিং ও কুরিয়ারসহ যাবতীয় প্রসেসিংয়ের জন্য ৫-৭ দিন সময় লাগবে। তারপর তা নিয়ে আমরা বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় কাজ করে দশ দিনের মধ্যে নমুনা কিট তৈরি করতে পারবো। ১ মাসের মধ্যে অন্তত ১০ হাজার কিট বাজারে সরবরাহ করতে পারবো।
গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপ্যাল ডা. মুহিব উল্লাহ খন্দকার বলেন, যে পদ্ধতিতে এই কিট তৈরি করা হবে তাকে বলা হয় ‘ডট ব্লট টেকনোলজি’। আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে এই কিটে ভাইরাস শনাক্ত করা যাবে। এর জন্য স্পুটাম নেওয়ার প্রয়োজন নেই। প্রথমে সন্দেহজনক ব্যক্তির রক্তের নমুনা নেওয়া হবে। সেই রক্ত থেকে ‘সিরাম’ আলাদা করতে হবে। কিটে সেই সিরাম রেখে তার ওপর এন্টিজেনের বিক্রিয়া ঘটানো হবে।
যদি বিক্রিয়া হয় তাহলে সন্দেহজনক ব্যক্তির শরীরে ভাইরাসের প্রাথমিক উপস্থিতি রয়েছে বলে প্রমাণ হবে। বিক্রিয়া না করলে তিনি আক্রান্ত নন বলে বিবেচিত হবে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র এই কিট মাত্র ২০০ টাকায় সরবরাহ করতে পারবে। তবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অনুরোধ রয়েছে সরকার যেন জনসাধারণের কাছে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকায় এই টেস্ট ছড়িয়ে দেয়। এই পদ্ধতিতে ৫ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা যাবে। কিট উৎপাদনের জন্য ইতোমধ্যে সাভারের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে হাইটেক ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে।
২০১৯ সালে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে ১৭৬ দেশে ছড়িয়ে গেছে করোনা ভাইরাস। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অঙ্গ সংগঠন গণস্বাস্থ্য-আরএনএ বায়োটেক লিমিটেড কোভিড-১৯ শনাক্তে এই কিট তৈরি করেছে। প্রতিষ্ঠানটির উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন একটি দল গত ফেব্রুয়ারি থেকে কিট তৈরি ও উৎপাদনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এ দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ড. বিজন কুমার শীল, যিনি ২০০৩ সালে সিঙ্গাপুরে সার্স পিওসি কিট তৈরি করা দলের সদস্য ছিলেন।
আনন্দবাজার/শাহী