শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ইবির ইন্টারনেট ব্যবস্থা

ফি আছে সেবা নেই

ফি আছে সেবা নেই

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আবাসিক হলসমূহে ধীরগতির ইন্টারনেট সেবায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। ইন্টারনেট খরচ বাবদ ১০০ টাকা করে দিলেও পর্যাপ্ত ইন্টারনেট সুবিধা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ তাদের। ফলে তাদের ক্লাসসহ অনলাইনের বিভিন্ন কার্যক্রমে পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি। বারবার হল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দেওয়া সত্বেও শিক্ষার্থীরা পাচ্ছে না কাঙ্ক্ষিত সেবা।

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হল রয়েছে ৮টি। এর মধ্যে ছেলেদের ৫টি ও মেয়েদের ৩টি হল। তবে এই হলগুলোতে ধীরগতির ইন্টারনেট ব্যবস্থাতে ক্ষুব্ধ আবাসিক শিক্ষার্থীরা। অ্যাসাইমেন্ট, প্রেজেন্টেশন, রিপোর্ট কিংবা কোনো প্রশ্ন সমাধানের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হয় শিক্ষার্থীদের। কিন্তু কচ্ছপগতির ইন্টারনেট ব্যবস্থার ফলে উক্ত কাজ সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হচ্ছে তারা। ফলে এসব কাজ সম্পন্ন করার জন্য টাকা খরচ করে ডাটা কিনতে হয় তাদের।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, করোনা মহামারী ও বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয়, রেভিনিউ খাতের ব্যয় সাশ্রয় ও হ্রাস করা, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের ব্যয় সাশ্রয় করতে সপ্তাহে একদিন অনলাইন ক্লাসের সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। প্রতি সোমবার এই অনলাইন ক্লাসের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে স্ব স্ব বিভাগ অনলাইনে ক্লাস শুরু করেন। কিন্তু দুর্বল গতির ইন্টারনেট ব্যবস্থার ফলে ক্লাসে যথাসময়ে যুক্ত থাকা কিংবা স্যারদের পুরো লেকচার ভালোভাবে শুনতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে সাদ্দাম হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী শাহীন রানা বলেন, ‘হলে ইন্টারনেট স্লো থাকার ফলে তৎক্ষনাৎ প্রয়োজনীয় কোনো ডকুমেন্টস পাওয়া সম্ভব হয় না। তাছাড়া ব্যক্তিগত এবং প্রয়োজনীয় কোন কাজ করা যাচ্ছে না।’

আরও পড়ুনঃ  করোনার কবলে আবারও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ

শহীদ জিয়াউর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী নাহিদ বলেন, ‘আমাদের হলে কিছুদিন পরপরই ইন্টারনেটের সমস্যা দেখা দেয়। তাছাড়া যেটুকু ইন্টারনেট পাওয়া যায় সেটুকুও ধীরগতির। ফলে আমাদের ডাটা কিনেই চলতে হয়। অথচ আমরা বাৎসরিক ইন্টারনেট ফি বাবদ টাকা দিচ্ছি।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সোলাইমান বলেন, ‘আমরা যারা হলে অবস্থান করি নেটের জন্যও একটা নির্দিষ্ট ফি দেওয়া লাগে। ফি দিয়েও কাঙ্ক্ষিত সেবা হতে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। ‘

এ বিষয়ে প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা বলেন, ‘আমরা এর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেছি। এটা নিয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে। হলের রুমে রুমে নেট দেওয়ার কোনো নীতিমালা নেই। তবে পুরো ক্যাম্পাস সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা ও কমন প্লেসে গতিশীল নেট দেওয়ার জন্য কমিটি করা হয়েছে। আশা করি দ্রুত এই সমস্যা সমাধান হবে।’

আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার বলেন, ‘ওয়াইফাইয়ের যে ব্যান্ডউইথ আছে সেটা দ্বিগুণ করার জন্য ইউজিসির কাছে প্রপোজাল পাঠিয়েছিলাম। ইতোমধ্যে ইউজিসি রাজি হয়েছে। এখন এ‘টু’ প্যাকেজের যেটা আছে সেটা এ‘ওয়ান’ প্যাকেজে যাওয়ার জন্য ইউজিসিকে অনুরোধ করেছিলাম। তারা সেটাকে এগ্রি করেছে। এগ্রিমেন্ট করার জন্য সেই কাগজপত্রসহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি। এগ্রিমেন্ট করলে এখনকার যে ব্যান্ডউইথ সেটা দ্বিগুণ হয়ে যাবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাজারার অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘ইন্টারনেটের বিষয়টি দেখছে আইসিটি সেল। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোসহ পুরো ক্যাম্পাসকে ইন্টারনেটের আওয়াত আনার কাজ চলছে। আশাকরি দ্রুত সময়ের মধ্যেই এ সমস্যার সমাধান হবে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন