শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনার কবলে আবারও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ

করোনার কবলে আবারও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ

করোনাভাইরাস সংক্রমণ ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ায় ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এতে শামিল হয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ও। তারা সব পরীক্ষা স্থগিত করেছে। এমনকি ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ও সশরীরে ক্লাস বন্ধ করে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ঘোষণা করেছে।

গতকাল শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবালয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দেয়। নির্দেশনাটি ২১ জানুয়ারি থেকেই কার্যকর হবে। এ ছাড়া আরো চারটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

এতে আরো বলা হয়েছে, স্কুল কলেজের মতো এই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও নিজ নিজ ক্ষেত্রে অনুরূপ ব্যবস্থাগ্রহণ করবে। পাশাপাশি রাষ্ট্রীয়, সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় সমাবেশ বা অনুষ্ঠানসমূহে এক শ জনের বেশি জনসমাগম করা যাবে না।

এসব ক্ষেত্রে যারা যোগদান করবেন তাদের অবশ্যই করোনা প্রতিরোধী টিকা সার্টিফিকেট বা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আরটি পিসিআর টেস্টের ফল সাথে আনতে হবে। সরকারি-বেসরকারি অফিস, শিল্প কলকারখানাগুলোতে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আবশ্যিকভাবে করোনা টিকার সার্টিফিকেট গ্রহণ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে দায়িত্ববহন করতে বলা হয়েছে।

বাজার, মসজিদ, বাসস্ট্যান্ড, লঞ্চঘাট, রেলস্টেশনসহ সবধরণের জনসমাবেশে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে বিষয়টি মনিটর করতে বলা হয়েছে।

আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও বন্ধ থাকবে। তবে সেশনজট নিরসনে অনলাইন ক্লাস চলমান থাকবে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

তিনি বলেন, আমরা তো জাতীয় সিদ্ধান্তের বাইরে না। সরকারের সিদ্ধান্তকে আমাদের অনুসরণ করতে হবে। করোনা সংক্রমণ রোধকল্পে জাতীয় সিদ্ধান্তের সাথে মিল রেখে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও বন্ধ থাকবে। সশরীরে সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকবে তবে আমাদের শিক্ষার্থীদের যাতে ক্ষতি না হয় সেজন্য অনলাইন ক্লাস চলবে।

আরও পড়ুনঃ  যমুনার চরে অর্থনীতির সুবাতাস

বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের বিষয়ে ঢাবি উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল বলেন, এই মুহূর্তে আমরা আবাসিক হল বন্ধ করব না। শিক্ষার্থীরা যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি হলে অবস্থান করবেন। প্রশাসনিক ভবনের কার্যক্রমও আমরা সীমিত করব।

করোনা ভাইরাস সংক্রমণ শুরু হলে ২০২০ সালের মার্চের মাঝামাঝিতে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করা হয়। দফায় দফায় সেই ছুটি বাড়ানো হয়। ফলে প্রায় দেড় বছর বন্ধ ছিল স্কুল-কলেজগুলো। করোনা সংক্রমণ কমতে শুরু করলে ২০২১ সালের সেপ্টম্বরে খুলে দেওয়া হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। 

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জাতীয় বিশ্ববিদ্যায়ের সব ধরনের পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় এসব পরীক্ষার সময়সূচি পরে জানানো হবে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনার ব্যাখ্যা হলো, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করতে হবে। যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের আইনে চলে, তাই এ বিষয়ে তাদেরই সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যে সশরীর ক্লাস বন্ধ রেখে অনলাইন ক্লাসে ফিরেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও শুক্রবার সশরীর ক্লাস বন্ধ রেখে অনলাইন ক্লাসের ঘোষণা দিয়েছে।

করোনা সংক্রমণের কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। করোনা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলে দীর্ঘ ১৮ মাস পর গত ১২ সেপ্টেম্বর আবারও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়। তবে তখন থেকেই সীমিত পরিসরে ক্লাস চলে আসছিল। কিন্তু করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আবারও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হলো।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন