শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাড়ছে দাম কমেছে ক্রেতা

বাড়ছে দাম কমেছে ক্রেতা
  • গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা
  • খাসি ১১৫০ থেকে ১২০০ টাকা
  • সাদা ব্রয়লার ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা
  • সাদা লেয়ার ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা
  • লাল লেয়ার ২৯০ থেকে ৩০০ টাকা
  • পাকিস্তানি কক ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকা

বাজারে আরেক ধাপ বেড়েছে মাছ-মাংসের দাম। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারি পর্যায়ে দাম বাড়ায় তারাও দাম বাড়িয়েছেন। ক্রেতারা বলছেন, কোনো উপলক্ষে দাম বাড়ানোটা দেশে একটি রীতি হয়ে উঠেছে!

গতকাল শনিবার সকালে রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে মাছ ও মাংসের দাম কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে। এছাড়া কাঁচাবাজারে গরমে চাহিদা রয়েছে এমন সব সবজির দামও বেড়েছে। অন্যদিকে সব কিছুর দাম বাড়ায় ছুটির দিনে ক্রেতার সংখ্যা ছিল তুলনামূলক কম।

বাজারে বর্তমানে গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৭০০ থেকে ৭১০ টাকা। এছাড়া খাসির দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১১৫০ থেকে ১২০০ টাকায়, গত সপ্তাহে যা ১১০০ টাকায় বিক্রি হতো।

মুরগির দাম গত এক মাস ধরে ঊর্ধ্বমুখী, এখন তা সর্বোচ্চ দামে পৌঁছেছে। সাদা ব্রয়লার এখন ২৫০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৭০ টাকা, লাল লেয়ার ২৯০ টাকা, পাকিস্তানি কক ৩৫০ টাকা। গত সপ্তাহের তুলনায় যা ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে।

দাম বাড়ায় নি¤œআয়ের মানুষ আলাদা করে বিক্রির জন্য রাখা মুরগির ডানা ও পা কেনার দিকে ঝুঁকছে। সেগুলোও কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা করে।

উত্তর বাড্ডায় বাঁজার করতে আসা সোহাগ নামের এক গণমাধ্যম কর্মী বলেন, এক মুরগির বাজার ঘুরে মাছের বাজার এসেছি, প্রায় আধাঘন্টা যাবত ঘুরছি কিন্তু কোন মাছ কেনার সাহস পাচ্ছিনা। আগে সবকিছুর দাম বেশি থাকলে বয়লার মুরগী কিনে বাসায় চলে যেতাম, কিন্তু এখন সেটাও ধরাছোঁয়ার বাহিরে।

মাছের বাজারে মাছের সংখ্যা কমেছে। অধিকাংশ দোকানিকে পাঙাশ, তেলাপিয়া ও রুই মাছ বিক্রি করতে দেখা যায়। এ বিষয়ে দোকানিরা জানান, ক্রেতার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে পড়ে না এমন মাছ উঠালে অবিক্রীত রয়ে যায়। তবে সেই মাছেরও দাম বেড়েছে।

আরও পড়ুনঃ  ঈদে মিলাদুন্নবীকে দেওয়া হলো রাষ্ট্রীয় মর্যাদা

বাজারে পাঙাশ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৬০ থেকে বেড়ে ১৭০ টাকা হয়েছে, রুই (নলা) ২০০ টাকা থেকে বেড়ে ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি আকারের রুই ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ২৮০ টাকা। এছাড়া পুঁটি ২৪০ টাকা ও সিলভার কার্প ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

ফারুক নামের আরে ক্রেতা বলেন, গত এক বছর যাবত অফিসে কারো বেতন বৃদ্ধি হয়নি অথচ সবকিছু দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ডবল এরও বেশি। বাড়িওলা এ মাস থেকে বাসা ভাড়া বাড়ানোর নোটিশ দিয়েছে। এখন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সন্তান নিয়ে রাস্তায় বসার অবস্থা।

এদিকে সবজির বাজার কিছুটা স্থির থাকলেও লেবুসহ সালাদ উপাদানের দাম চড়া। লেবু হালি (৪ পিস) বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা। এছাড়া কেজিপ্রতি টমেটো ৩০, শসা ৪০ টাকা। অন্যান্য সবজি গড়ে ৩০ থেকে ৪০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

মুরগির মাংসের দাম বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে রোকসানা বানু বলেন, ‘আগে ১৪০ টাকা কেজিতে মুরগি পাওয়া যাইতো, সেই দামে এখন মুরগির হাবিজাবি কিনতে হচ্ছে। বাসায় বাচ্চাদের পুষ্টির চাহিদা মেটাতে নিরুপায় হয়ে এসব কিনতে হচ্ছে। আমাদের দুঃখ দেখার কেউ নেই!’

এছাড়া মুদির দোকানে পণ্যের দাম আগের মতো ঊর্ধ্বমুখী। এই সপ্তাহে কোনো পরিবর্তন নেই। গরুর মাংসের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ হিসেবে মিরপুরের ১১ নং বাজারের মহিউদ্দিন মাংস বিতানের মালিক মহিউদ্দিন বলেন, ‘এক সময় গরুর ভুসির দাম ছিল ১৫ টাকা, সেটা এখন ৮০ টাকা। একটা গরু পালতে এখন অনেক খরচ। আর আমরা তো নিজের থেকে দাম বাড়াই না। বেশি দামে আনতে হয় বলে বেশি দামে বিক্রি করি।’

আরও পড়ুনঃ  তিস্তা ফুঁসলেই বেড়িবাঁধে আতঙ্ক

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন