শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশে ইউক্রেনের গম

দেশে ইউক্রেনের গম

ইউক্রেন ছেড়ে আসা গমবাহী জাহাজ ম্যাগনাম ফরচুন চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছেছে। জাহাজটিতে সাড়ে ৫২ হাজার টন গম আছে। ল্যাব টেস্ট বা নমুনা সংগ্রহের পরই গমগুলো খালাস করা হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বন্দরের খাদ্য নিয়ন্ত্রক (স্টোরেজ অ্যান্ড মুভমেন্ট) আবদুল কাদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে মঙ্গলবার বিকালে সাড়ে ৫২ হাজার টন গম নিয়ে ইউক্রেন থেকে আসা জাহাজ ম্যাগনাম ফরচুন চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে এসে পৌঁছায়। গতকাল বৃহস্পতিবার জাহাজ থেকে গমের নমুনা সংগ্রহ করে কয়েক স্তরে পরীক্ষা করার কথা রয়েছে। সম্প্রতি ভারত থেকে গম আমদানির চেষ্টা করে সরকার। ভারত রাজি না হওয়ায় রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে জিটুজি ভিত্তিতে গম আনার চুক্তি হয়। সে ধারায় গমগুলো আসে বন্দরে।

গম প্রসঙ্গে আবদুল কাদের বলেন, আমরা বৃহস্পতিবার জাহাজ থেকে গমের নমুনা সংগ্রহ করব। পরে ল্যাব টেস্ট করব। চুক্তি অনুযায়ী ধরন ও মান ঠিক থাকলে আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে খালাস প্রক্রিয়া শুরু হবে। আরও বলেন, যুদ্ধ শুরুর পর ইউক্রেন থেকে আসা এটি প্রথম খাদ্যবাহী জাহাজ। সরকারি উদ্যোগেই এই গম জিটুজি ভিত্তিতে কেনা হয়েছে গত সেপ্টেম্বরে। এর আগে গত ১৩ অক্টোবর রাশিয়া থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায় ৫২ হাজার টন গমবাহী জাহাজ ‘সিলাক-২’।

ইউক্রেন অ্যাগ্রো কনসাল্ট ডটকমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২৮ সেপ্টেম্বর আফ্রিকা, এশিয়া এবং ইউরোপের দেশগুলোর জন্য ১ লাখ ১৫ হাজার টন কৃষিপণ্য নিয়ে চারটি জাহাজ ইউক্রেনের চারনোমরোস্ক ও ইউঝনি বন্দর ছেড়ে আসে। এর মধ্যে চারনোমরোস্ক বন্দর থেকে ম্যাগনাম জাহাজটি ৫২ হাজার ৫০০ টন গম নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।

আরও পড়ুনঃ  ঘণ্টায় বিক্রি ৮ লাখ

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, সরকারি খাদ্য গুদামে গত বুধবার পর্যন্ত দেশে গমের মজুত আছে ২ লাখ ১৩ হাজার ১৬ টন। এটা স্বাভাবিকের চাইতে কম। গম বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রধান খাদ্যশস্য। দেশে বছরে প্রায় ৭৫ লাখ টন গমের চাহিদা রয়েছে। ১০ লাখ টন গম দেশেই উৎপাদিত হয়। অবশিষ্ট চাহিদা ভারত, রাশিয়া, ইউক্রেন, কানাডা, আর্জেন্টিনা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করে মেটানো হয়। যার সিংহভাগই বেসরকারি খাতে আমদানি করা হয়। খাদ্য অধিদপ্তরের হিসাবে সরকার মাত্র পাঁচ লাখ টন গম আমদানি করেই চাহিদা মেটায়। বাকি ৬০ লাখ টন গম বেসরকারি উদ্যোগে আমদানি হয়।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ মোট গম আমদানির ৬৩ শতাংশ রাশিয়া ও ইউক্রেন, ১৮ শতাংশ কানাডা এবং বাকিটা যুক্তরাষ্ট্র, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়াসহ আটটি দেশ থেকে আমদানি করে। ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশে আমদানি হওয়া মোট গমের ৪৫ শতাংশ রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে, ২৩ শতাংশ কানাডা থেকে, ১৭ শতাংশ ভারত থেকে এবং বাকিটা অন্য কয়েকটি দেশ থেকে এসেছে।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন