শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পোনার হাট-

ঘণ্টায় বিক্রি ৮ লাখ

মাছের পোনার বাজার

কটিয়াদী উপজেলার বীরনোয়াকান্দি এলাকার মাছের পোনার বাজার এখন জমজমাট। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর, জলাশয় পানিতে ভরে গেছে। ফলে মাছের পোনার বাজারে বেচাবিক্রির ধুম পড়েছে। এতে খুশি এই অঞ্চলের পোনা উৎপাদনকারী, ক্রেতা-বিক্রেতা সংশ্লিষ্ট সবাই। সারাবছর এই বাজারে পোনা বিক্রি হলেও মে থেকে অক্টোবর পর্যন্ত জমজমাট থাকে মাছের বাজার। প্রতিদিন ভোর ৬টায় শুরু হয়ে বাজার চলে সকাল ৮টা পর্যন্ত। দুই ঘণ্টার বাজারে গড়ে ১৪ থেকে ১৫ লাখ টাকার পোনা বিক্রি হয়। কিশোরগঞ্জ জেলা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলায় এখান থেকে পোনা যাচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভোরের আলো ফোটার কিছুক্ষণের মধ্যেই ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে সরগরম হয়ে উঠেছে বীরনোয়াকান্দি চৌরাস্তার মোড় থেকে বিশাল এলাকা। বিক্রেতারা ট্রাক,পিকআপ, ইঞ্জিনচালিত নছিমন প্রভৃতি গাড়িতে অ্যালুমিনিয়ামের বড় বড় ডেক্সিতে পানি দিয়ে মাছের পোনা নিয়ে জড়ো হচ্ছে এ বাজারে। এসব গাড়িতে করেই নিজ গন্তব্যে পোনা নিয়ে যাচ্ছেন দূরদূরান্ত থেকে আসা ক্রেতারা।

গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার ক্রেতা মো. মাসুম জানান, আগাম বর্ষায় পুকুর পানিতে ভরে গেছে। এখন পোনা ছাড়ার উপযুক্ত সময়। এ বাজারে ভালো জাতের মাছের পোনা পাওয়া যায়। তাই প্রতিবছর এখান থেকে পছন্দের পোনা সংগ্রহ করি।

উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের জামষাইট গ্রামের ইমাম হোসেন বলেন, আমি আগে সৌদি আরবে ছিলাম। দুবছর আগে দেশে ফিরে ৫টি পুকুরে পোনা চাষ শুরু করি। সব মিলিয়ে চাষে খরচ হয়েছে ১ লাখ টাকা। বর্তমান বাজার দরে এসব পুকুরের উৎপাদিত পোনা ১ লাখ টাকা বিক্রি হবে বলে আশা করছি। লাভজনক এ খাতের সম্প্রসারণে সরকারিভাবে ঋণদানের আহ্বান জানান তিনি।

আরও পড়ুনঃ  সপ্তাহের ব্যবধানে ফের কমেছে সোনার দাম

বাজারের আড়তদার আব্দুর রহমান বলেন, প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানা জাতের মিঠা পানির মাছের পোনা এ বাজারে আসে। ২০ বছর ধরে চলে আসা এ বাজারে নিলাম ডাকের মাধ্যমে কেজি দরে পোনা বিক্রি করা হয়। পোনা যে দরে বিক্রি হচ্ছে, তা হলো রুই,কাতলা ও ক্রশ বাউশ ১৮০ থেকে ২২০ টাকা, সরপুঁটি ও ঘাসকার্প ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা, মৃগেল ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, পাঙাশ ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, বিগহেড, সিলভার কার্প ও অন্যান্য কার্প জাতীয় মাছ আকারভেদে ১২০ টাকা থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন বলেন,মাছের পোনা উৎপাদন,পরিবহন ও বিপণনে এ অঞ্চলের মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা মৎস্য চাষিদের মাছের পোনা উৎপাদন,সংগ্রহ ও চাষ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি সম্পর্কে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, পরামর্শসহ সার্বিক সহযোগিতা করে আসছি।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন