শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তারুণের স্বপ্ন মাশরুমে

তারুণের স্বপ্ন মাশরুমে

বর্তমানে জনপ্রিয় খাদ্য তালিকায় অন্যতম মাসরুম। খাবার হিসেবে সুস্বাদু মাসরুম। এর রয়েছে বিশেষ পুষ্টিগুণ। রয়েছে বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। কাঁচা অবস্থায় মাশরুমে প্রচুর পরিমানে ‘ভিটামিন বি’ পাওয়া যায়। মাশরুম দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের মুখরোচক খাবার। এ কারণে মাশরুম দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। শহরের ছোট বড় সুপারশপ গুলোতে বিক্রয় হচ্ছে গুড়া মাশরুম। এতে তরুণদের মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে মাশরুম চাষে আগ্রহ বাড়ছে। 

২০১৮ সালে সদর উপজেলায় ন্যাশনাল সার্ভিসে চাকরির সুবাদে সদরের কাঁঠালতলা গ্রামের হতদরিদ্র কৃষক  আব্দুল হাকিম সানার ছেলে সাদ্দাম হোসেনের পরিচয় হয় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমজাদ হোসেনের সঙ্গে। তার পরার্মশ ও সহযোগিতায় মাশরুম চাষের উপরে প্রশিক্ষণ নিয়ে ছোট পরিসরে শুরু করেন মাশরুম চাষ। সাদ্দামের খামারে মাশরুম উৎপাদন শুরু হলে অনলাইনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে বিক্রয়ের জন্য প্রচার করেন। সেখানে ভালো সাড়া পেয়ে আর পিছনে ফিরতে হয়নি উদ্যোক্তা সাদ্দামকে। 

সাতক্ষীরায় মাশরুম উদ্যোক্তা হিসাবে মানুষের কাছে পরিচিত লাভ করেন তিনি। সাতক্ষীরা শহরে কসমিক মাশরুম ক্যাফেটেরিয়া নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে সেখানে বিক্রয় করছেন মাশরুমের চপ, সিংড়া, খিচুড়ি, চাওমিন, নুডলস, কফিসহ নানা রকমের মুখরোচক খাবার। সাদ্দামের দেখে অনেক শিক্ষার্থী এ চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। তারা ইতিমধ্যে মাসরুম চাষ কার্যক্রমও শুরু করে দিয়েছে।

মাশরুম চাষি সাদ্দাম হোসেন জানান, সাতক্ষীরা মানুষের কাছে পরিচিত করতে অনেক কষ্ট হয়ছে। অল্পখরচে মাশরুম চাষ করা যায় ৪ হাজার টাকা দিয়ে প্রথমে চাষ শুরু করেছিলাম। এখন বর্তমানে আমার প্রজেক্টটি ১ বিঘা জমির উপরে। এখন প্রতিমাসে ১ থেকে দেড় লাখ টাকার বেশি উপার্জন করি। আমার এখানে ৫ জন শ্রমিকের কাজের সুযোগ হয়েছে। আমার থেকে অনেক বেকার যুবক প্রশিক্ষণ নিয়ে মাশরুম চাষ শুরু করেছে। আমি কিছুদিন আগে একটা কাসমিক মাশরুম ক্যাফটেরিয়া তৈরি করেছি। 

আরও পড়ুনঃ  পিঁপড়ার ডিমে জীবিকা

নগরঘাটা গ্রামের আঞ্জানা সরকার বলেন, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে মাস্টার্সে লেখাপড়া চলাকালীন সময়ে অনলাইনের মাধ্যমে মাশরুম চাষ সম্পর্কে জেনে ৪ হাজার টাকায় ১০০ প্যাকেট মাশরুম দিয়ে চাষ শুরু করি। একমাস পরিচর্যা শেষে মাশরুম বিক্রয় উপযোগি হয়ে ওঠে। সেখান থেকে মাসরুম বিক্রয় করে সর্বপ্রথম ১৫ হাজার টাকা আয় করি। 

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নুরুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশের দক্ষিণের সীমান্তবর্তী সাতক্ষীরা জেলায় প্রায় ৫০ থেকে ৬০ জন লোক পারিবারিকভাবে মাশরুম উৎপাদন করছে। এদের মধ্যে আবার ২ থেকে ৫ জন লোক বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছে। এটি একটি পুষ্টিকর সবজি। আমাদের পবিত্র গ্রন্থ আল কুরআন এ  মহাঔষধ নামে উল্লেখ করা আছে। মাশরুম সেবনে ডায়াবেটিস, হার্ট অ্যাটাক, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগসহ প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ ধরনের রোগ থেকে আরোগ্য লাভ করে। রেস্তোরা গুলোতে মাশরুম ব্যবহার করে বিভিন্ন মুখরোচক ও সুস্বাদু খাবার তৈরি করা হচ্ছে। 

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন