শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কৃষিতে সফল ইঞ্জিনিয়ার তৌহিদ

কৃষিতে সফল ইঞ্জিনিয়ার তৌহিদ

মা-বাবার অতি আদরের একমাত্র সন্তান মো. তৌহিদ হাসান। বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়ালেখার পাঠ চুকিয়ে অবশেষে কি-না পূর্বের বংশধরে আদি পেশা কৃষিকাজকেই বেছে নিয়েছেন তৌহিদ। ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে প্রমে কিছুদিন রাজধানী ঢাকায় ভালো বেতনের চাকরিও করেন তিনি। কিন্ত ইট-পারে ঘেরা যানজটযুক্ত শহরে তার কিছুতেই মন বসে না। চাকরি ছেড়ে অবশেষে বাবা আর শ্রমিকের সঙ্গে গায়ে কাদা-মাটি লাগিয়ে নিজেদের জমিতে ফসল উৎপাদন ও পুকুরে মাছ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

এমন উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত তরুণ কৃষি ও মৎস্য দপ্তরে দক্ষ এবং সফল উদ্যোক্তা তৌহিদ হাসানের বাড়ি জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার আওলাই গ্রামে। হারুন-উর-রশিদ ও আমেনা বিবি দম্পতির একমাত্র সন্তান তৌহিদ হাসান। বাবার সঙ্গে মাঠে যোগ দেওয়ার আগে সে ২০১৪ সালে জয়পুরহাট যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে আধুনিক পদ্ধতি বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ নিয়ে তাদের জমিতে প্রায় সকল প্রকারের শাক-সবজি, ধান ও আলু চাষ এবং পুকুরে মাছ চাষ শুরু করেন। যুব উন্নয়নের প্রশিক্ষণ কাজে লাগিয়ে প্রমেই সফল হন তিনি। এরপর থেকে তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। লেখাপড়া শেষে চাকুরির পিছনে না দৌড়ে কৃষি ও মৎস্য চাষে সফল তিনি। এসব থেকে প্রতিবছর তার আয় হয় ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা। তার এমন সফলতার পে এলাকার অনেক শিক্ষিত বেকার যুবকেরাও পথচলা শুরু করছেন। তিনি এখন যুব উন্নয়ন কেন্দ্র ও এলাকার মডেল।

তৌহিদ হাসানের জমিতে দেশি-বিদেশি বেগুন, মরিচ, বাঁধা ও ফুলকপি, টমেটো, করলা, শিম ও লাউসহ শীতকালীন বিভিন্ন রকমের সবজিতে ভরপুর। সরেজমিনে দেখা যায়, কয়েকজন শ্রমিকসহ আলু ক্ষেত পরিচর্চা করছেন তিনি। দেখা গেছে শ্রমিকের কাজ করে অনেকেই সংসার চালাচ্ছেন। পরবর্তীতে গরু ও মুরগির ফার্ম করে এলাকার শতাধিক লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারবেন বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুনঃ  মেয়াদোত্তীর্ণ কৃমিনাশকে প্রতিবন্ধীর স্বপ্নের মৃত্যু

তৌহিদের বাবা আক্ষেপ করে বলেন, ছেলেকে অনেক টাকা খরচ করে লেখাপড়া করালাম ভালো চাকুরির আশায়। ছেলে কিছুদিন ঢাকায় চাকুরিও করল। এখন কি-না চাকুরি ছেড়ে বাড়ি এসে আমার সঙ্গে জমিতে কৃষিকাজ ও মাছচাষ করছে। চাকুরি ছেড়ে এসব করায় প্রথমে মনখারাপ হলেও এখন ভালো লাগে ছেলের এসব কাজ দেখে। শুধু চাকুরি করেই যে টাকা উপার্জন করা যায়, আমার এমন ভুল ধারণা ভেঙেছে আমার ছেলেই। আমরা পূর্ব পুরুষরা যা করতে পারিনি ছেলে তা করে দেখালো। আমার ছেলে এখন সব ক্ষেত্রে সফল হয়েছে।

আনন্দবাজার/এম.আর

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন