শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মালবেরিতে স্বপ্ন রঙিন

মালবেরিতে স্বপ্ন রঙিন

নওগাঁর  সাপাহারে বরেন্দ্র এগ্রো পার্কের উদ্যোক্তা সোহেল রানা। প্রথমবারেই ভালো ফলন পেয়ে ব্যাণিজ্যিকভাবে মালবেরি চাষের পরিকল্পনা করছেন তিনি।

সরেজমিনে দেখা যায়, গাছ ভর্তি থোকায় থোকায় ঝুলছে মালবেরি। পাতার চেয়ে ফল বেশি ধরে আছে। গাছের পাতা ডিম্বাকার, চমৎকার খাঁজযুক্ত এবং অগ্রভাগ সূঁচাল। আকারে আঙুরের চেয়ে কিছুটা বড় মালবেরি ফল। ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে ফুল আসে এবং মার্চ-এপ্রিলেই ফল পাকে। প্রথম অবস্থায় সবুজ পরে লাল এবং সম্পূর্ণ পাকলে কালো রঙ ধারণ করে। দেখতে খুবই সুন্দর, আকর্ষণীয়। পাকা ফল রসালো এবং টক-মিষ্টি। প্রতিটি গাছ থেকে ৮ থেকে ১০ কেজি সংগ্রহ করা যায়। এবং চারাও তৈরি করা যায়। খুব সহজেই ছাদে ও এর চাষ সম্ভব। এ ফল চাষে রোগবালাই খুবই কম। কীটনাশকও তেমন লাগে না। উৎপাদন খরচও কম। শুধু জৈব সার দিলে প্রায় সারা বছরই এই ফল পাওয়া যায়। যেহেতু এ মালবেরি আমদানি নির্ভর ফল। তাই বাজারেও মালবেরি ফলের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। রাজধানী ঢাকার সুপার শপগুলোতে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এ ফলের।

এ বিষয়ে উদ্যোক্তা সোহেল রানা জানান, বিদেশি উচ্চমূল্যের পুষ্টিগুণসম্পন্ন মালবেরি ফল। এ ফলটি বিদেশে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয় এবং বাজারজাত করা হয়। বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। নতুন এ ফলটি আমি পরীক্ষামূলকভাবে থাইল্যান্ড, ভারত, তুরস্ক, অস্ট্রেলিয়া ও ইতালি সহ বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন জাতের ৮টি জাত সংগ্রহ করে চাষ করেছি। পরীক্ষামূলকভারে প্রতিটা গাছে সাফল্য এসেছে। প্রচুর পরিমাণে ফল ধরেছে।

আরও পড়ুনঃ  পেয়ারা চাষে লাখপতি

বাগানে মালবেরি ফল দেখতে আসা আব্দুল আলিম  বলেন,  বরেন্দ্র এগ্রো পার্কে বিদেশি নতুন জাতের মালবেরি ফলের চাষ হচ্ছে তাই দেখার জন্য আসছি। ফলটি খুবই আকর্ষণীয়। খেতেও সুস্বাদু। শুনলাম ছাদে নাকি এ গাছ লাগানো যাবে। তাই আমিও সোহেল রানার কাছ থেকে চারা নিয়ে গিয়ে আমার বাসায় টপে  লাগাবো।

চুয়াডাঙ্গায় সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তালহা জুবাইর মাসরুর জানান, আমাদের দেশে মালবেরি এখনো বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ শুরু হয়নি। তাই এখনও এ ফল সব এলাকায় সেইভাবে পাওয়া যায় না। তবে রাজধানীর সুপার শপগুলোতে ১৫শ’ থেকে ২ হাজার টাকায় এ ফল বিক্রি হয়। চাষিরা বাণিজ্যিকভাবে এটি চাষাবাদ করে লাভবান হতে পারবেন।

চুয়াডাঙ্গায় জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পরিচালক কৃষিবিদ শামছুল ওয়াদুদ  জানান, সোহেল রানা একজন সফল বাগানি। দীর্ঘদিন থেকেই বিভিন্ন ফল, ফুল, আম সহ নানা ধরনের বাগান আছে তার। সম্প্রতি তিনি ৮ জাতের মালবেরি গাছ পরীক্ষামূলকভাবে লাগিয়েছেন। বর্তমানে গাছ থেকে ফল তোলার উপযোগী হয়েছে। প্রতিটি গাছে থেকে প্রায় ৮ থেকে ১০ কেজির মত ফল পাওয়া যাবে। এখানকার মাটিও মালবেরি চাষের উপযোগী। এছাড়া বাড়ির ছাদে টবেও এর চাষ করা যাবে। সাপাহারে  মালবেরি চাষ যেন আগামী বৃদ্ধি পায় সে জন্য চাষিদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন