বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাতীয় সঞ্চয়পত্রের সুদ হার কত

বাংলাদেশ জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের অধীনে জনগণকে সঞ্চয়ী হতে উদ্বুদ্ধ করা ও বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে থাকা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয় জাতীয় সঞ্চয় স্কীমের মাধ্যমে আহরণ করার উদ্দেশ্যে এবং সাধারনের নির্ঝঞ্ঝাট অর্থ বিনিয়োগের পথ প্রশস্থ করার অন্য নাম সঞ্চয়পত্র।

বৃহত্তর দৃষ্টিকোনে, সাধারন মানুষের হাতে জমানো টাকা লম্বা সময়ের জন্যে ফেলে না রেখে ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগে মুনাফা লাভ, দেশের বিশেষ বিশেষ জনগোষ্ঠী যেমন- মহিলা, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিক, প্রবাসী বাংলাদেশী এবং শারীরিক প্রতিবন্ধীদের আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় আসার সুযোগ এবং সরকারের সঞ্চয় স্কীমের মাধ্যমে আহরিত অর্থ দ্বারা জাতীয় বাজেট ঘাটতি পূরণ করার সুযোগ। বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরো, বাণিজ্যিক ব্যাংক ও ডাকঘর থেকে সব সঞ্চয়পত্র কেনা ও নগদায়ন করা যায় আপনাদের জন্য দেওয়া হল সঞ্চয়পত্র সংক্রান্ত কিছু তথ্য:

সঞ্চয়পত্রের প্রকার:

বর্তমানে দেশে চার ধরনের সঞ্চয়পত্র আছে। এগুলো পাঁচ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র; তিন মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র,পরিবার সঞ্চয়পত্র ও পেনশনার সঞ্চয়পত্র।স্কিমভেদে বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্রের সুদের হারও ভিন্ন হয়ে থাকে। নিচে সংক্ষেপে সুদহারগুলো তুলে ধরা হল-

০১. পাঁচ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রঃ এই সঞ্চপত্রে মেয়াদান্তে সুদের হার ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ। কিন্তু মেয়াদপূর্তির পূর্বে নগদায়ন করলে ১ম বছরান্তে ৯.৩৫%, ২য় বছরান্তে ৯.৮০%, ৩য় বছরান্তে ১০.২৫% এবং ৪র্থ বছরান্তে ১০.৭৫% হারে মুনাফা প্রাপ্য হবে।

০২. তিন মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্রঃ তিন বছর মেয়াদী সঞ্চয়পত্রে মেয়াদান্তে সুদের হার ১১ দশমিক ০৪ শতাংশ।কিন্তু মেয়াদের পূর্বে এই সঞ্চয়পত্র নগদায়ন করলে সুদের হার হয় কম। আর এক বছরের আগে নগদায়ন করলে কোনো সুদ পাওয়া যাবেনা।

আরও পড়ুনঃ  রেমিট্যান্সের পালে হাওয়া

তিন মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র প্রথম বছর শেষে নগদায়ন করলে ১০ শতাংশ এবং দ্বিতীয় বছর শেষে নগদায়ন করলে সাড়ে ১০ শতাংশ হারে সুদ পাওয়া যায়।

০৩. পরিবার সঞ্চয়পত্রঃ পাঁচ বছর মেয়াদী এই সঞ্চয়পত্রে মেয়াদ শেষে সুদ পাওয়া যায় ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ হারে। আর মেয়াদ পূর্তির আগে নগদায়ন করলে প্রথম বছর শেষে সাড়ে ৯ শতাংশ, দ্বিতীয় বছর শেষে ১০ শতাংশ, তৃতীয় বছর শেষে সাড়ে ১০ শতাংশ ও চতুর্থ বছর শেষে ১১ শতাংশ হারে মুনাফা পাওয়া যায়।

০৪. পেনশনার সঞ্চয়পত্রঃ পাঁচ বছর মেয়াদী এই সঞ্চয়পত্রে মেয়াদ শেষে সুদ পাওয়া যায় ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ হারে। আর মেয়াদ পূর্তির আগে নগদায়ন করলে প্রথম বছর শেষে ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ, দ্বিতীয় বছর শেষে ১০ দশমিক ১৫ শতাংশ, তৃতীয় বছর শেষে ১০ দশমিক ৬৫ শতাংশ ও চতুর্থ বছর শেষে ১১ দশমিক শতাংশ হারে সুদ বা মুনাফা পাওয়া যায়।

যারা কিনতে পারেন :

প্রকল্পগুলোর মাঝে শুধু পাঁচ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র ও তিন মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র সবাই কিনতে পারেন। অন্য সঞ্চয়পত্রগুলো বিশেষ টার্গেট গ্রুপের জন্য নির্ধারিত।

এর মধ্যে পরিবার সঞ্চয়পত্র ১৮ বা তারচেয়ে বেশি বয়সী যে কোনো বাংলাদেশী মহিলা,যে কোনো বাংলাদেশী শারীরিক প্রতিবন্ধী (পুরুষ ও মহিলা) এবং ৬৫ ও তার বেশি বয়সের যে কোনো বাংলাদেশী নাগরিক (পুরুষ/মহিলা) শুধু একক নামে কিনতে পারবেন।

পেনশনার সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারী,আধা-সরকারী,স্বায়ত্তশাসিত,আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা/কর্মচারী,সুপ্রীম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি,সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য এবং উল্লিখিত ক্যাটাগরিতে মৃত চাকুরীজীবীর পারিবারিক পেনশন সুবিধাভোগী স্বামী/স্ত্রী/সন্তান।

আরও পড়ুনঃ  করোনার মাঝেও রাজস্ব আয় বেড়েছে ২৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ

সঞ্চয়পত্র কেনার গ্রহণযোগ্য সর্বোচ্চ পরিমাণ:

চাইলেই যে কোনো পরিমাণ টাকার সঞ্চয়পত্র কেনা সম্ভব নয়। বিভিন্ন প্রকার সঞ্চয়পত্রের সীমা বেঁধে দেওয়া আছে। এর মধ্য তিন মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও পাঁচ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে একক নামে ৩০ লাখ টাকা এবং যৌথ নামে ৬০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করা যায়। পরিবার সঞ্চয়পত্র ও পেনশনার সঞ্চয়পত্র কেবল একক নামে কেনা যায়। এই দুটি সঞ্চয়পত্রের অনুমোদিত সর্বোচ্চ সীমা যথাক্রমে ৪৫ ও ৫০ লাখ টাকা।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন