বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিক্রির চাপে পতন

বিক্রির চাপে পতন
  • বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে
    লেনদেন
  • সেরা জেএমআই হসপিটাল
  • ক্রেতার চেয়ে বেশি বিক্রেতা

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল সোমবার সব ধরনের সূচকের পতন হয়েছে। কমেছে উভয় স্টকের বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। এদিন ক্রেতার কয়েকগুন বেশি বিক্রেতা ছিলো। ফলে বিক্রয়ের চাপে ছিল হিড়িক।

সরকারের নতুন সময় সূচির প্রথম কার্যদিবস গত ২৪ আগস্ট (বুধবার) পতন হয়েছিল। যা আগের টানা ছয় কার্যদিবস উত্থানের পর এই মন্দা। পতন পরের গত দুই কার্যদিবস (বৃহস্পতিবার ও রবিবার) ধরে উত্থানে রয়েছিল পুঁজিবাজার। এসময় লেনদেন দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছিলো। পরেরদিন সোমবার লেনদেনে কিছুটা ভাটা পড়ে। সেই অবস্থান থেকে পরের দুই কার্যদিবস লেনদেন বাড়ে। এর মধ্যে গত বুধবার লেনদেন দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়ায়। সেখান থেকে কমে গত বৃহস্পতিবার লেনদেন ১৯শ কোটি টাকায় অবস্থান করে।

গত রবিবার লেনদেন ২৩শ কোটিতে ওঠেছিল। ঠিক পরেরদিন গতকাল সোমবার লেনদেন ১৪শ কোটি টাকায় চলে এসেছে। এদিন শেয়ারে ক্রেতার চাপ ছিলই না। অপরদিকে বিক্রয়ের চাপে ছিল হিড়িক। বিক্রয়ের চাপে কমেছে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর। টানা ছয় কর্মদিবস উত্থানের পর গত দুই কার্যদিবস পুঁজিবাজারে পতন হয়েছে। এ ধরনের পতন মূল্য সংশোধন বলে মনে করছেন পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা।

তারা বলছেন, উত্থানের পর শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা তুলে নিয়েছে আনেক বিনিয়োগকারী। এক সাথে অনেকে শেয়ার বিক্রি করায় মন্দা রুপে ফিরেছে পুঁজিবাজার। এদিন সূচক সহ অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর পতন হয়। এ ধরনের পতন হওয়াটা স্বাভাবিক। এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।

আরও পড়ুনঃ  বৈদেশিক ঋণ ছাড়ে গতি

এদিকে, গত ৩১ জুলাই পুঁজিবাজারে বড় উত্থান হয়েছিল। ওইদিন রবিবারের মতো পরেরদিন পুঁজিবাজার উত্থান ছিল। এরপরের তিন কার্যদিবস (মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার) উত্থান ধারা অব্যাহত ছিল। উত্থান কারণে স্বস্তিতে ছিলো বিনিয়োগকারীরা। সেই স্বস্তি পরের চার কার্যদিবসের মন্দায় পুঁজিবাজারের কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। টানা পতনে ক্রেতার সংখ্যা বহুগুণে হারায়। এরপর গত ছয় কার্যদিবস উত্থানে ফিরে আসলো। উত্থানের পর গত বুধবার পতনে ফিরেছিল পুঁজিবাজার। ওই পতন পরের ছয় কার্যদিবস উত্থানে ফিরেছিল পুঁজিবাজার। সেখান থেকে গত দুইদিন ফের ভাটায় চলে আসলো পুঁজিবাজার। এই ভাটা স্বাভাবিক বলে মনে করছেন বিজ্ঞ বিনিয়োগকারীরা।

গতকাল সোমবার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪০০ কোটি ৬৬ লাখ টাকার শেয়ার। আগের কার্যদিবস গত রবিবার লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ২ হাজার ২৯৬ কোটি ৩৯ লাখ টাকার শেয়ার। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫৫ দশমিক ৫৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৪৩১ দশমিক ৩৪ পয়েন্টে। এদিন ডিএসই-৩০ সূচক ১৭ দশমিক ৭৮ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস সূচক ৫ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২ হাজার ২৮৫ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট এবং ১ হাজার ৪০৪ দশমিক ৫৭ পয়েন্টে।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৬৯টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৩৮টি এবং কমেছে ২৬৩টির। শেয়ার পরিবর্তন হয়নি ৬৮টির। এদিন ডিএসইতে জেএমআই হসপিটালের শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। এদিন জেএমআই হসপিটাল ৯৩ কোটি ১ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা এদিন অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে নাহি এ্যালুমিনিয়াম ৫৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, ইস্টার্ন হাউজিং ৫৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা, বেক্সিমকো ৫৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, ওরিয়ন ফার্মা ৩৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকা, জেনেক্স ইনফোসিস ৩৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা, ন্যাশনাল পলিমার ৩২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন ২৯ কোটি ৯২ লাখ টাকা, লার্ফাজ-হোল্ডসিম ২৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকা এবং মালেক স্পিনিং ২৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।

আরও পড়ুনঃ  করযোগ্য নাগরিকের তথ্যে বিভ্রান্তি

অপরদিকে সিএসইতে গতকাল সোমবার লেনদেন হয়েছে ২২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা শেয়ার। আগের কার্যদিবস রবিবার ৩৫ কোটি ৯১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৭৪টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৪৯টি, কমেছে ১৮৪টি এবং পরিবর্তন হয়নি ৪১টির। এদিন সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১৭৭ দশমিক ৪৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৯০৪ দশমিক ২০ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসই-৫০ সূচক ১১ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ৮০ দশমিক ৭৬ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স সূচক ১০৬ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট এবং সিএসআই সূচক ১২ দশমিক ৮০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৩৬৭ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট, ১৩ হাজার ৭২৭ দশমিক ২১ পয়েন্টে, ১১ হাজার ৩৩০ দশমিক ৩৩ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ২০৬ দশমিক ৮২ পয়েন্টে।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন