নাটোরের বড়াইগ্রামে সেচকাজে পাতকুয়ার ব্যবহার শুরু হয়েছে। রবি মৌসুমে উপজেলার ছয়টি এলাকায় পাতকুয়া বসানো হয়েছে। ভূ-গর্ভস্থ পানি ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের জন্য পাতকুয়ার ব্যবহার যথোপযুক্ত মনে করেন এলাকার কৃষকরা। কৃষিনির্ভর এলাকা হওয়ায় রবিশস্য চাষ করতে গিয়ে প্রায় সময় কৃষকরা কৃষিকাজে পানি সংকটে পড়েন। পানির সে সংকট কাটিয়ে উঠতে প্রযুক্তির উন্নয়ন এ পাতকুয়া যথেষ্ট অবদান রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষসহ এলাকার কৃষকরা।
বড়াইগ্রাম বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) অফিস সূত্রে জানা যায়, পাতকুয়ার মাধ্যমে ভূ-গর্ভস্থ সম্পৃক্ত পানির স্তর নিম্ন পর্যন্ত গোলাকার আকৃতিতে মাটি খনন করে চারপাশ থেকে চুয়ানো পানি ধরে রাখা হয়। পাতকুয়ায় জমানো পানি সোলার প্যানেল স্থাপন করে সৌরশক্তি দ্বারা চালিত মোটরদ্বারা হেডার ট্যাংকে উঠানো হয়। হেডার টাংকে উঠানো পানি ভূ-গর্ভস্থে স্থাপনকৃত সরবরাহ পাইপের আউটলেট এর মাধ্যমে ফসলের জমিতে সেচ দেওয়া হয়। ১১৫ ফুট গভীরতার পাতকুয়ার ব্যাস ধরা হয় ৪০ ইঞ্চি। এতে ১৬ সোলার প্যানেল স্থাপন করা হয়।
পাতকুয়ার মাধ্যমে প্রতিদিন ৭৫ থেকে ৯০ হাজার লিটার পানি সরবরাহ করা যেতে পারে। যেখানে প্রায় ৩০ বিঘা পর্যন্ত জমিতে ফসল চাষ করা সম্ভব।
ভবানীপুর গ্রামের মনসুর আলী ও নটাবাড়িয়া গ্রামের শ্রী বসন্ত কুমার জানান, আমরা পাতকুয়ার ব্যবহার শুরু করেছি। এক্ষেত্রে চাষাবাদে আপাতত পানির কোনো কমতি দেখছি না। তবে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা শতভাগ উপকার পাবো বলে মনে করছি।
বড়াইগ্রাম বরেন্দ্র উন্নয়ন প্রকল্পের সহকারি প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, পাতকুয়া তুলনামূলক উঁচু জমিতে স্থাপন করা হয়। যেখানে পানি জমার কোনো সন্দেহ থাকেনা। পাতকুয়ার সুবিধা হল এখানে কোনো কৃষকের কাছ থেকে পানি খরচ নেওয়া হয় না। শুষ্ক মৌসুমে এটা খুবই কার্যকর। কৃষকবান্ধব সরকার কৃষকের জন্য নিত্যনতুন সেচের ব্যবস্থা করে যাচ্ছেন। পাতকুয়ার জন্য উপজেলার মাটিগুলো আংশিক উপযোগি। এটা নিয়ে বর্তমানে এলাকার কৃষকদের মাঝে উৎফুল্ল বিরাজ করছে। এলাকায় এগুলোর যথোপযুক্ত ব্যবহার হবে বলে আমরা যথেষ্ট আশাবাদি।