শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমনের ফলন নিয়ে শঙ্কা

আমনের ফলন নিয়ে শঙ্কা

পোকার আক্রমণে দিশেহারা চাষি

নীলফামারীর ডিমলায় এক সপ্তাহের মধ্যেই পুরো দমে শুরু হবে আমন ধান কাটার ধুম। কৃষকের গলায় উঠবে নতুন ধান। কিন্তু মৌসুমের শেষ সময়ে এসে কৃষকদের দিশেহারা করে দিয়েছে ধানখেতে পোকার আক্রমণ।

মাঝরা, কারেন্ট পোকাসহ বেশ কয়েকটি রোগ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন আমন চাষিরা। উপজেলার অধিকাংশ ধানখেতে পোকার আক্রমণ বেড়েছে।

ফলে মৌসুমের শেষ সময়ে এসে ব্যাপক হারে পোকার আক্রমণে কৃষকের কপালে চিন্তার ভাজ পড়েছে। বিভিন্ন বালাইনাশক ব্যবহার করেও এর প্রতিকার মিলছে না। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ক্ষতির মুখে পড়েছেন অনেকে। কেউ কেউ আবার আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে খেতে আগাম বালাইনাশক ছিটাচ্ছেন।

কৃষকেরা বলছেন, ধানের শিষ সম্পূর্ণ বেরিয়ে প্রায় পেকে গেছে।এক সপ্তাহের মধ্যে কাটা যাবে ধান। এ সময়ে কৃষক ধান কাটার প্রস্তুতি নেওয়ার কথা।কিন্তু উল্টো জমিতে এখন বালাইনাশক ছিটানোর কাজে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। কৃষি অফিসের পরামর্শে জমিতে বিভিন্নরকম বালাইনাশক ছিটানো হলেও পোকার হাত থাকে মুক্তি মিলছে না। চাষিরা জানান, কারেন্ট পোকার আক্রমণে মাত্র দুই রাতেই ধানখেত পুরোপুরি নষ্ট হয়। এর মধ্যে ব্যবস্থা নিতে না পারলে ধান বাঁচানো সম্ভব হয় না।

ফলে এবার ঘরে কাঙ্ক্ষিত ফসল ঘরে তোলা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

উপজেলার সর্দার হাট গ্রামের কৃষক রাসেল ইসলাম জানান, ৬ একর জমিতে আমন আবাদ করেছি। অধিকাংশ জমিতে পাতামোড়া ও কারেন্ট পোকা ধানের নিচের অংশে কেটে দিচ্ছে। ফলে এক দিনের মধ্যেই মরে যাচ্ছে ধানের শিষ। পরিপক্ব হওয়ার আগেই পাতানে পরিণত হচ্ছে জমির অধিকাংশ ধান। আবার কিছু কিছু ধানের গোড়া পচে গিয়ে নষ্ট হচ্ছে গাছ। এমন অবস্থায় চরম হতাশায় আমাদের দিন যাচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ  কাকরোল চাষে ভাগ্যবদলের স্বপ্ন

শুকানদিঘী গ্রামের কৃষক চিত্তরঞ্জন বলেন,তিন বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছি। ইতিমধ্যে এক বিঘা জমির খেত কারেন্ট পোকার আক্রমণে নষ্ট হয়ে গেছে। অবশিষ্ট দুই বিঘার খেত রক্ষায় আগাম স্প্রে করার জন্য দোকানির পরামর্শে ৯০০ টাকার কীটনাশক কিনেছি।

কৃষক নজরুল হোসেন বলেন, এবারের মতো এত কীটনাশক কোনোবার ছিটাইনি। একটার পর একটা রোগ দেখা দিচ্ছে।এ পর্যন্ত এক জমিতে ছয়বার বিষ ছিটিয়েছি।

কৃষিবিদ আবু নোমান সায়েম বলেন, দিনে গরম, রাতে ঠান্ডা, সকালে কুয়াশা ও মেঘাচ্ছন্ন আকাশ এ রকম আবহাওয়া কারেন্ট পোকার আক্রমণের অনুকূল পরিবেশ।

কৃষি কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে  উপজেলায় এবার ২০ হাজার ৪৩৮ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে।

তবে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সেকেন্দার আলী দাবি করেন, কারেন্ট পোকার আক্রমণ প্রকটভাবে দেখা দিলেও তা এখনো ক্ষতির পর্যায়ে পৌঁছায়নি।

সেটা যেন ক্ষতির পর্যায়ে না যায় সে ব্যাপারে আমরা কাজ করছি। তিনি জানান, ইতিমধ্যে ৩০ শতাংশ ধানকাটা হয়ে গেছে। আগামী চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে ৭০ শতাংশ ধান কাটা হয়ে যাবে।

কৃষকদের যেকোনো প্রয়োজনে মাঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন