শুক্রবার, ২৬শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কাকরোল চাষে ভাগ্যবদলের স্বপ্ন

Dainikanandabazar
কাকরোল চাষে ভাগ্যবদলের স্বপ্ন

কৃষিতে অসচ্ছল অনেক কৃষকের পরিবারে কাকরোল এনে দিয়েছে সচ্ছলতা। আর গ্রীষ্মকালীন সবজি কাকরোল, চিচিঙ্গা, শসা, করলা, চালকুমড়া চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কিশোরগঞ্জ কটিয়াদী উপজেলার কৃষকরা। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এবারও অন্যান্য শাকসবজির আবাদ কম হলেও কাকরোলের ফলন ভালো হয়েছে। গ্রীষ্মকালীন সবজি চিচিঙ্গা বাজারে দামও মিলছে আশানুরূপ। ধানসহ অনান্য ফসলে যখন লাভের পরিবর্তে লোকসানের মুখ দেখছেন তখনই হাইব্রিড জাতের কাকরোল চাষে কৃষিতে বিপ্লব ঘটিয়েছে কিশোরগঞ্জের উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের চরঝাকালিয়া গ্রামের মৃত খুর্শিদ উদ্দিনের ছেলে কৃষক মাসুক মিয়া। উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে ও সহায়তায় উপজেলার কৃষকরা গ্রীষ্মকালীন সবজি চিচিঙ্গা চাষ করে ভালো দাম পাচ্ছেন।

কৃষক মাসুক মিয়া জানান, অন্যান্য ফসল চাষ করে আমি খুব একটা লাভবান হতে পারিনি। ধান চাষ করে লোকসান গুনতে হয়েছে আমার। তাই আমি হাইব্রিড জাতের কাকরোল চাষ করছি। এখন একটু দাম কম হলেও এর আগে আরও ভালো দামে বিক্রি করতে পেরেছি। তাই আমি প্রতিবছরই এখন গ্রীষ্মকালীন সবজি কাকরোল পাশপাশি অল্প পরিমাণে শসা, করলা, চালকুমড়া চাষ করছি। তিনি আরও জানান, চলতি বছর ৪৪ শতাংশ জমি লিজ নিয়ে হাইব্রিড জাতের কাকরোল চাষ করেছি। এতে প্রায় ২৫ হাজারের মতো খরচ হয়েছে। এ পর্যন্ত ৬০ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। বাজারে এখন যে দাম রয়েছে তাতে আমার দেড় লাখ টাকা বিক্রি হবে। বিশেষ করে চিচিঙ্গা চাষে প্রথমদিকে পাতা পঁচা রোগ ও পোকার আক্রমণ দেখা দেয়। তবে, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এবং ফেকামারা ব্লকের উপ-সহকারি কর্মকর্তা সঠিক পরামর্শে ছত্রাকনাশক ও কীটনাশক প্রয়োগ করে সফলতা পেয়েছি। চিচিঙ্গার পাশাপাশি করলা, চালকুমড়াও চাষ করেছি। এতেও যে টাকা বিক্রি হবে লাভবান হব।

আরও পড়ুনঃ  জয়পুরহাটের কালাইয়ে উচ্চফলনশীল চিচিংগা চাষ

আরেক চাষি জসিম উদ্দিন বলেন, আমরাও মাসুকের চাষ দেখে এবং অন্যফসলের তুলনায় গ্রীষ্মকালীন সবজি চাষ অধিক লাভজনক বিধায় ১ বিঘা জমিতে চাষ করেছি। জমি থেকেই পাইকারি ক্রেতারা চিচিঙ্গা কিনে নিয়ে যাচ্ছে ২৮ থেকে ৩০ টাকা ধরে। প্রায় এক বিঘা জমিতে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা লাভ হচ্ছে। আমরা যদি সরকারিভাবে বা কৃষি অফিস থেকে যে কোনো ধরনের সাহায্য সহযোগিতা পেতাম তবে সবজি চাষে আও উদ্বুদ্ধ হতাম।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুকশেদুল হক বলেন, আমরা মাঠ পর্যায়ে সর্বক্ষণ জৈব প্রযুক্তিসহ সার, কীটনাশক প্রয়োগ করে কৃষকরা যাতে উপকৃত হতে পারে সে লক্ষ্যে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। মাঠ পর্যায় ছাড়াও মোবাইল, এ্যাপসের মাধ্যমে চব্বিশ ঘণ্টা সেবা দিচ্ছি। চলতি বছর উপজেলায় গ্রীষ্মকালীন শাক-সবজি চাষ হয়েছে বেশি। কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় এ এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে গ্রীষ্মকালীন সবজি চাষ বাড়ছে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন